বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 বললাম—আচ্ছা, গিরিবালা, আর একদিন শুনবো এখন—একটু ব্যস্ত আছি আজ।

 কিন্তু গিরিবালাকে অত সহজে ফাঁকি দেওয়া চলে না। সে হাতজোড় করে বললে—আমার কথাটা?

 —কি?

 —ব্রহ্ম কি?

 —ওসব কথার আমি জবাব দিতে পারবো না। তুমি ও পাড়ার গোঁসাই ঠাকুরের কাছে যাও বরং—

 —না বাবাঠাকুর, আপনি বলুন।

 —তুমি ভুল করেচ গিরিবালা, আমি বইয়ের ব্যবসা করে খাই। ব্রহ্ম-ট্রহ্মের খবর রাখিনে—

 —আচ্ছা বাবাঠাকুর, আর একদিন আমি আসবো। আজ ফাঁকি দিলেন, কিন্তু সেদিন ফাঁকি দেবেন না যেন।

 আমাকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে গিরিবালা বিদায় নিল।

 আমার স্ত্রী জিগ্যেস করলেন—ও কে গো?

 —ওর নাম গিরিবালা এইটুকু জানি। আর জানি যে ওকে তিনি নাকি কৃপা করেচেন।

 —তিনি কে?

 —তিনি আর চিনলে না? তিনি মানে তিনি। ভগবান, গড্, শ্রীকৃষ্ণ, ব্রহ্ম।

 —আহা হা, ঢং!

 বলে স্ত্রী বাড়ির মধ্যে চলে গেলেন। আমি সন্ধ্যাবেলায় গ্রামের ফটিক চক্কত্তির কাছে গেলাম। ফটিক চক্কত্তির এখন বয়েস হয়েছে, এক সময় যথেষ্ট আমোদ-প্রমোদ এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদির অনুষ্ঠান করার ফলে এখন ভগ্নস্বাস্থ্য, হাঁপানি রোগগ্রস্ত।

 বললাম—ফটিক কাকা, গিরিবালাকে চেন?