বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ফন্দি সর্বদাই বিরাজ করছে, নদীর জলে তেচোকো মাছের ঝাঁকের মতো। বাবা হেসে বললেন—তা হয় না বদ্যিনাথ, এ কোর্টে নাহয় ও গরীব বেচারা হারলো, কিন্তু উচুঁ কোর্টে যে আমি হেরে যাব।

 —উচুঁ কোর্ট করচে কে?

 —সে কোর্ট নয়—

 বাবা আকাশের দিকে আঙ্গুল তুলে দেখালেন।

 বদ্যিনাথ কাকা আর কোনো কথা বললে না।


 মাস দুই পরে বলাই এসে হাজির হোল একদিন। বাবা বললেন, ভাল আছিস বলাই?

 —আপনার ছিচরণ আশীর্বাদে—

 —তোর টাকার সন্ধান পেয়েছি।

 —পেয়েছেন?

 —পেয়েছি। একটা কাজ করতে হবে তোকে। তোদের সেখানে তোদের স্বজাতির মধ্যে কোন মাতব্বর কেউ আছে?

 —আছে। তেনার নাম সতীশ ঘোষ।

 —আচ্ছা, সেই সতীশ ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে আমার এখানে তুই সামনের বুধবারে আসবি। টাকার সম্বন্ধে তার সঙ্গে পরামর্শ করবো।

 সেই বুধবারে বলাই আবার এল, সঙ্গে একজন আধবুড়ো লোক। গলায় ময়লা চাদর, পায়ে চটি জুতো, হাঁটু পর্যন্ত ধুলো পায়ে। সামনের দাঁত দুটো একটু উঁচু ওর। বাবা তখন পাড়ায় কোথায় বেরিয়েচেন। আমি আর আমার মাসতুতো ভাই বিধু গাছের কচি ডাব পাড়াচ্চি।

 বলাই বললে—এই সতীশ ঘোষকে এনেচি। তোমার বাবা কনে?

 সতীশ ঘোষ বললে, প্রাতঃপেনাম। আমাকে আপনার বাবা

৮২