ডেকেচেন কেন জানেন কিছু? আমি তো তাঁকে চিনিনে। কখনো দেখিনি। ব্রাহ্মণ দেবতা, ডেকেচেন তাই এলাম।
—আমি তো কিছু জানিনে। বাবা আসুন। আপনি তামাক খাবেন?
—হাঁ বাবা, খাই। তামাক টিকে কোথায়, আমি সেজে নিচ্ছি।
আমি ঠাকুরমাকে গিয়ে বলতেই তিনি বললেন—তোমার বাবা বাড়ি নেই। ভিন্ গাঁ থেকে লোক এলে যত্ন করতে হয়। তাকে গিয়ে জিগ্যেস কর এখন কি তাকে জলপান পাঠিয়ে দেওয়া হবে?
আমার প্রশ্নের উত্তরে সতীশ ঘোষ বললে জিভ কেটে—সে কি কথা? ব্রাহ্মণ দেবতা, তাঁর বাড়ি এসে আমি আগে তাঁদের পায়ের ধুলো না নিয়ে জল খাবো কেমন কথা? মা ঠাকরোণ কই?
আমি তাকে ঠাকুরমার কাছে নিয়ে গেলাম। সতীশ গড় হয়ে ঠাকুরমাকে প্রণাম করে জোড়হাতে বললে—আমার উপর কি হুকুম হয়েচে আপনার? আমি তো আপনাদের চিনিনে—তবে মনে ভাবলাম, ব্রাহ্মণ দেবতা যখন হুকুম করেচেন—
মিনিট পনেরোর মধ্যে দেখি সতীশ ঘোষ আমাদের ভেতর বাড়ির রোয়াকে বসে কাটাখানেক চিঁড়ে-মুড়কি আর আধখানা ঝুনো নারকেল ধ্বংস করছে।
ঠাকুরমাকে একটু মিষ্টি কথা বললে আর রক্ষে নেই। কত প্রজা যে বিপদে পড়ে এসে ঠাকুরমার মনস্তুষ্টি করে শক্ত শক্ত বিপদ পার হয়ে গিয়েছে তার ঠিক নেই। ঠাকুরমার মন অতি সহজেই মিষ্টি কথায় গলে। এদিকে বাবা অত্যন্ত মাতৃভক্ত। ঠাকুরমা যা বলবেন, তাই বেদবাক্য বাবার কাছে। ঠাকুরমা কেবল ভুলবেন না আমাদের কথায়। হাজার মিষ্টি কথা বলে নিয়ে এসো দিকি একটু তেঁতুলছড়া, কি একটু কাসুন্দি, কি এক থাবা কুলচুর! উঁহু, আসল কাজে ঠিক আছে ঠাকুরমা। তার বেলা—এই নব্নে, তাঁড়ার ঘরের তাকের
৮৩