পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কিন্তু তাঁকে ধরবার জন্যে ১২ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষিত হলেও তিনি গুপ্ত জীবন যাপন করতে থাকেন এবং বিপ্লবীমূলক কার্য চালিয়ে যেতে থাকেন। পরে তিনি বৃটিশকে ফাঁকি দিয়ে ১৯১৫ সালে জাপানে গিয়ে হাজির হন। জাপানে গিয়ে চীন থেকে অস্ত্রশস্ত্রাদি ভারতে পাঠাবার ব্যবস্থা করেন কিন্তু তাঁর এই গোপন অভিসন্ধি বৃটিশ কর্তৃপক্ষ জানতে পারে এবং বৃটিশের অনুরোধে জাপান কর্তৃপক্ষ তাঁকে পাঁচদিনের মধ্যে সাংহাই ত্যাগ করতে আদেশ দেন। পুনর্বার আট বৎসর কাল তিনি গুপ্ত জীবন যাপন করেন। তারপর স্থানীয় ভারতীয়দের নিয়ে তিনি ভারতীয় স্বাধীনতা সঙ্ঘ গঠন করেন এবং শেষে এই সঙ্ঘ নেতাজীর হস্তে সমর্পণ করেন। তিনি শেষ পর্যন্ত আজাদ-হিন্দ-সরকারের পরামর্শদাতারূপে যুক্ত ছিলেন। তিনি জাপানী ভাষায় ভারতবর্ষ সম্বন্ধে বই লেখেন এবং ডাঃ স্যাণ্ডারল্যাণ্ডের India in Bondage বইখানির জাপানী তর্জমা করেন। তাছাড়া তিনি একখানি জাপানী পত্রিকার সম্পাদনা করতেন এবং জাপানের বহু সংবাদপত্রে লিখতেন।

 সুভাষবাবুর মিথ্যা বিমান দুর্ঘটনা রটনার সঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছিল যে ঐ দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সে কথা পরে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয় এবং প্রকৃতপক্ষে ১৯৪৪ সালে যুদ্ধের মধ্যেই এই বীর পৃথিবী থেকে বিদায় গ্রহণ করেন।

 জগন্নাথ রাও ভোঁসলে—৩৯ বৎসর আগে শিবাজী স্মৃতি ধন্য মহারাষ্ট্রে তিরোদ গ্রামে এঁর জন্ম। ইনি দেরাদুনের প্রিন্স অব ওয়েলস সামরিক বিদ্যালয়ে সম্মানের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে কোয়েটায় ল্যাঙ্কাশায়ার রেজিমেণ্টে যোগদান করেন। পরে তিনি রাজকীয় মারাঠা পদাতিক বাহিনীতে যোগ দেন। কুনুরে কয়েকজন বৃটিশ কর্মচারীকে সমুদ্র গর্ভ থেকে রক্ষা করে তিনি বিশেষ পদকলাভ করেন এবং তাঁকে ক্যাপ্টেন উপাধি দান করা হয়। তাঁর পূর্বপুরুষদের মত তিনি লণ্ডনে সম্রাটের অভিষেক উৎসবে যোগদান করেন। ভারতে ফিরে তিনি সাধারণ সামরিক শিক্ষক

১৪৫