পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 কংগ্রেস এর প্রত্যুত্তর দিয়েছিল। বাক্যে নয় কার্যে। পণ্ডিত জওহরলালের নেতৃত্বে কংগ্রেস সুভাষচন্দ্র ও নিবাস আয়েঙ্গারকে কংগ্রেস ওয়াকিং কমিটি থেকে বহিষ্কৃত করে দিলে।

 অবিশ্বাস্য হলেও একথা সত্য। একথা সত্য যে কংগ্রেস নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুকে বিতাড়িত করে দিয়েছিল তাদের কর্ম পরিষদ থেকে।

 কিন্তু ভারতের যুব সম্প্রদায় তাকে মাথা নত করে গ্রহণ করেছিল সেই তরুণ সম্প্রদায় তাকে নেতার আসনে বসিয়ে যে সম্মান দেখিয়েছিল তার কাছে অন্যান্য সমস্ত কংগ্রেসী নেতার জনপ্রিয়তা ম্লান হয়ে গিয়েছিল, ইতিহাস তার সাক্ষ্য দেবে। নওজোয়ান ভারত সভার যুব সম্মিলনের সামনে দাড়িয়ে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, যে ভারতের যুব সম্প্রদায় দিয়েই ভারতের স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হবে। তিনি বরাবরই তরুণের পূজারী। তাই তিনি বলেছিলেন, তরুণের মধ্যে যে শক্তি আছে যে প্রাণ আছে তার উচিৎ মর্যাদা দিতে হবে। প্রবীন রাজনৈতিকদের পদতলে আমাদের নবীন প্রাণের বুদ্ধি বিবেচনাকে সমর্পণ করা আমি কোন দিন সহ্য কববো না।

 এই ডাকে সাড়া দিয়েছিল সারা ভারত ব্যাপী তরুণের দল।

 শুধু ভারতে নয়, বাঙ্গলা দেশেও ভীষণ দলাদলি সুরু হয়ে গিয়েছিল। যদিও দেশবন্ধুর অবর্তমানে সুভাষবাবুই ছিলেন বাঙ্গলার অবিসংবাদী নেত তবু, তিনি যখন ভারতের বাইরে নির্বাসিত ছিলেন সেই অবসরে যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের দল বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। যতীন্দ্রমোহন একাধারে স্বরাজ পার্টির নেতা ও কর্পোরেশনের মেয়র নিবাচিত হয়ে ছিলেন। যতীন্দ্রমোহন দেশবন্ধুর অনুগামী হলেও তিনি দেশবন্ধুর মতবাদের সঙ্গে গান্ধীবাদের একটা অসম্ভব রকমের মিশ্রণ করতে চেয়েছিলেন। সে ভাবধারা একমাত্র সুভাষবাবুব অবর্তমানেই কিছুটা চল হয়েছিল কিন্তু সুভাষবাবুর মুক্তির পর তার বিরাট ব্যক্তিত্ব ও আত্মত্যাগের পাশে দাড়াতে পারে নি। তবে কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থী-

২৯