পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
১৫

তেজস্বী ধীমান্ কর্ম্মীটিকে পাইয়া দেশবন্ধুর আনন্দের অবধি ছিল না। **** স্বরাজ-সাধনার সুভাষচন্দ্রের সহযোগিতা জাতীয় ইতিহাসে এক নব অধ্যায়ের সূচনা করিল।”  —দেশবন্ধু-স্মৃতি, পৃঃ ২৮২

 সুভাষচন্দ্র প্রথমে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ বা গৌড়ীয় সর্ব্ব-বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ-পদে কার্য্য করিতে লাগিলেন এবং বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস-কমিটির পাবলিসিটি অফিসার বা প্রচারাধ্যক্ষের কার্য্যভারও তাঁহার উপর অর্পিত হইল। অতঃপর তিনি জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর ক্যাপ্টেন বা অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। সম্ভবতঃ সামরিক জীবনের উন্মাদনা ও মর্য্যাদা জীবনে এই সর্ব্বপ্রথম তিনি উপলব্ধি করেন।

 ১৯২১ খৃষ্টাব্দে ১৭ই নভেম্বর মহামান্য প্রিন্স অব্ ওয়েল্‌স্ মহোদয় ভারত-পরিদর্শনার্থ বোম্বাই বন্দরে পদার্পণ করেন। গভর্ণমেণ্টের সহিত সর্ব্বপ্রকার সহযোগিতা বর্জ্জনের নিদর্শনসরূপ কংগ্রেসের পূর্ব্ব-নির্দ্দেশানুসারে ঐ দিন ভারতের সর্ব্বত্র হরতাল অনুষ্ঠিত হইয়াছিল। কলিকাতায়ও এই হরতাল পূর্ণভাবে প্রতিপালিত হয়। সুভাষচন্দ্র এই হরতালকে সাফল্যমণ্ডিত করিতে প্রাণপণ পরিশ্রম করেন।

 এই প্রসঙ্গে শ্রীযুক্ত হেমেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত লিখিয়াছেন—

 “ষ্টেশন হইতে সুভাষচন্দ্র গাড়ীর উপরে বসিয়া স্ত্রীলোকদিগকে গন্তব্য স্থানে পৌঁছাইয়া দিতেছিলেন এবং বাহিরে লেখা ছিল ‘On National Service’—অর্থাৎ ‘জাতীয় সেবাব্রতে’। কোনও যান চলে নাই; বাইসিকেল পর্য্যন্ত বন্ধ ছিল।”  —দেশবন্ধু-স্মৃতি, পৃঃ ২৭।