পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ও দ্বিতীয় বলি

 -“দক্ষিণ দিকে? তার মানে ভারতবর্ষের দিকে!” আলেকজাণ্ডার হঠাৎ এক লাফে উঠে দাঁড়ালেন। তারপর চীৎকার ক’রে বললেন, “তেজী ঘোড়ায় চ’ড়ে আমার সৈনিকেরা এখনি ওদের পিছনে ছুটে যাক! ওদের বন্দী করো! ওদের বধ করো! নইলে আমরা মহাবিপদে পড়বো!”

 হুকুম প্রচার করবার জন্যে দোভাষী তাড়াতাড়ি বাইরে বেরিয়ে গেল। আলেকজাণ্ডার অস্থির চরণে শিবিরের মধ্যে পায়চারি করতে করতে বললেন, “আমার সৈন্যরা মূর্খ! কেন তারা ওদের ছেড়ে দিলে?”

 কয়েকজন গ্রীক সেনানী সেইখানে উপস্থিত ছিলেন। একজন এগিয়ে এসে বললেন, “সম্রাট, তুচ্ছ কারণে আপনি এতটা উত্তেজিত হচ্ছেন কেন? ঐ তিনজন মাত্র পলাতক সৈনিক আমাদের কী অপকার করতে পারে?”

 আলেকজাণ্ডার বললেন, “তোমরাও কম মূর্খ নও! এই কি তুচ্ছ কারণ হ’ল? বুঝতে পারছ না, আমাদের এই অভিযানের কথা ভারত যত দেরিতে টের পায়, ততই ভালো! শত্রুদের প্রস্তুত হ’তে অবসর দেওয়া যে আত্মহত্যার চেষ্টার মতো! সারা ভারত যদি অস্ত্রধারণ করবার সময় পায়, তা’হলে আমাদের অবস্থা কী হবে? ঐ তিনজন সৈনিক ভারতে ছুটে চলেছে তাদের স্বদেশকে সাবধান করবার জন্যে! বন্দী করো, তাদের বধ করো, তাদের কণ্ঠরোধ করো!”

 —সম্রাট, এখান থেকে ভারত শত-শত ক্রোশ দূরে! যাবার আগেই পলাতকরা নিশ্চয়ই ধরা পড়বে!”

* * *

 “সত্যই তাই! সমরখন্দ এবং ভারতবর্ষ! তাদের মাঝখানে বিরাজ করছে শত-শত ক্রোশ ব্যাপী পথ ও বিপথের মধ্যে আমু-

৩১