পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ও দ্বিতীয় বলি

 তার দৃষ্টি অনুসরণ ক’রে চিত্ররথ ও পুরঞ্জনও দেখলে, একখানা ধূলোর মেঘ নদীর ওপারে এসে থেমে পড়ল।

 ধীরে ধীরে ধূলোর মেঘ উড়ে গেল এবং সেই সঙ্গেই দেখা গেল, একদল অশ্বারোহী সৈনিকের উজ্জ্বল শিরস্ত্রাণ ও বর্মের উপরে প’ড়ে ঝক্‌মক্‌ ক'রে উঠছে প্রভাতের সূর্যকিরণ!

 সুবন্ধু সচকিত কণ্ঠে বললে, “গ্রীক সৈন্য!”

 চিত্ররথ বললে, “ওরা পার-ঘাটে গিয়ে ঘোড়া থেকে তাড়াতাড়ি নেমে পড়ল! ওরা নদী পার হ’তে চায়!”

 পুরঞ্জন বললে, “এত শীঘ্র অত-বড় শিবির তুলে ওরা কি অভিযান আরম্ভ ক’রে দিয়েছে?”

 সুবন্ধু ঘাড় নেড়ে বললে, “আসল বাহিনী হয়তো শিবির তোলবার চেষ্টাতে এখনো ব্যস্ত হয়ে আছে।”

 —“তবে কি ওরা অগ্রবর্তী রক্ষীর দল?”

 —“হতে পারে। কিন্তু আমার বিশ্বাস, ওরা আমাদেরই খুঁজছে। নইলে ওরা প্রায় আমাদের সঙ্গে সঙ্গেই এখানে এসেছে কেন? পথ তো ভারতে যাবার পথ নয়—এ পথ তো কেবল আমাদের মতো সন্ধানী লোকেরাই জানে! ওরা নিশ্চয় আমাদের উদ্দেশ্য ধ’রে ফেলেছে—ওরা নিশ্চয় আমাদের বন্দী করতে এসেছে!”

 —“কিন্তু আমরা বন্দী হবো না। নদীপার হ’তে ওদের সময় লাগবে। ততক্ষণে আমরা অনেক দূরে এগিয়ে যেতে পারবো। ভারতে যাবার কত পথ আছে, সব পথ ওরা জানবে কি ক’রে?

 —“ঘোড়ায় চড়ো, ঘোড়ায় চড়ো! ভারত এখনো বহু দূর—

 তিন বীরকে পিঠে নিয়ে তিন ঘোড়া ছুটল আবার ভারতের দিকে।

 ওপারে গ্রীকদের ব্যস্ততা আরো বেড়ে উঠল, মুখের শিকার আবার হাতছাড়া হ’ল দেখে।

৩৩