পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

হ’ত। পাটনা বা পাটলিপুত্রের রাজা বিম্বিসারের সভা-চিকিৎসক জীবককে শিক্ষালাভের জন্যে তক্ষশীলায় সাত বৎসর বাস করতে হয়েছিল। পরে সম্রাট কণিষ্কের যুগে তক্ষশীলার আরো উন্নতি হয়, কারণ পুরুষপুরেই ছিল কণিষ্কের রাজধানী। প্রসঙ্গক্রমে ব’লে রাখি, শক-বংশীয় বৌদ্ধ ভারত-সম্রাট কণিষ্ক পুরুষপুরে একটি অপূর্ব মন্দির প্রতিষ্ঠিত করেন, প্রাচীন জগতে যা পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্য ব’লে গণ্য হ’ত। মন্দিরটি কাঠের। তেরো তালা। এবং উচ্চতায় চারিশত ফুট—অর্থাৎ কলকাতার মনুমেণ্টের চেয়ে কিছু-কম তিনগুণ বেশী লম্বা। দ্বিতীয় শতাব্দীতে নির্মিত সে মন্দির এখন আর নেই, গজনীর মুসলমান দিগ্বিজয়ী মামুদ তাকে ধ্বংস করেছিলেন।

 তক্ষশীলার কাছেই ছিল রাজা হস্তীর রাজ্য। পরের পরিচ্ছেদে গল্প শুরু হ’লেই তোমরা এঁর কথা শুনবে!

 আলেকজাণ্ডার যখন ভারতে পদার্পণ করেন, প্রতিবেশী রাজ্যের সঙ্গে তক্ষশীলার যুদ্ধ চলছিল। ক্ষুদ্র পার্বত্য রাজ্য, নাম “অভিসার” (আজও এর সঠিক অবস্থানের কথা আবিষ্কৃত হয় নি)। আর একটি হচ্ছে অপেক্ষাকৃত বৃহৎ রাজ্য, ইতিহাস-বিখ্যাত পুরু ছিলেন তার রাজা। ঝিলাম ও চিনাব নদের মধ্যবর্তী স্থলে ছিল পুরুর রাজ্য বিস্তৃত এবং তার নগরের সংখ্যা ছিল তিন শত। সুতরাং বোঝা যায় পুরু বড় তুচ্ছ রাজা ছিলেন না। তাঁর সৈন্যসংখ্যাও ছিল পঞ্চাশ হাজার।

 কিন্তু সীমান্তে এখনকার মতন তখনও পার্বত্য খণ্ডরাজ্য ছিল অনেক। গ্রীকদের বিবরণীতে বহু দেশের নাম পাওয়া যায়, কিন্তু তাঁরা ভারতীয় নাম আয়ত্তে আনতে পারতেন না ব’লে বিকৃত ক’রে লিখতেন। এই দেখোনা, চন্দ্রগুপ্তকে তাঁরা বলতেন,স্যাণ্ডাকোটস্! কাজেই গ্রীকদের পুঁথিপত্রে সীমান্তের অধিকাংশ দেশের নাম প’ড়ে আজ আর কিছু ধরবার উপায় নেই, বিশেষ একে-তো সেই-সব খণ্ড-

৪৮