পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

রাজার ঘোড়া

 তক্ষশীলার অদূরে মহারাজা হস্তীর রাজ্য। মহারাজা হস্তীর নাম গ্রীকদের ইতিহাসে সসম্মানে স্থান পেয়েছে, কিন্তু তাঁর রাজধানীর নাম অতীতের গর্ভে হয়েছে বিলুপ্ত।

 তবু তাঁর রাজধানীকে আমার চোখের সামনে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। কাছে, দূরে পাহাড়ের পর পাহাড় এবং গিরিনদীদের বুকে বুকে নাচছে গাছের শ্যামল ছায়া, আকাশের প্রগাঢ় নীলিমা। এক-একটি পাহাড়ের শিখরের উপরেও আকাশ-ছোঁয়া মাথা তুলে আছে সুরক্ষিত গিরিদুর্গ—তাদের চক্ষুহীন নির্বাক পাথরে পাথরে জাগছে যেন ভয়ানকের ভ্রূভঙ্গ!

 রাজধানীর বাড়ী-ঘর কাঠের। সেকালে ভারতবাসীরা পাথর বা ইট ব্যবহার করত বড়-জোর বনিয়াদ গড়বার জন্যে। অনেক কাঠের বাড়ী তিন-চার-পাঁচ তালা কি আরো বেশী উঁচু হত। কাঠের দেওয়ালে দরজায় থাকত চোখ জুড়ানো কারুকার্য। কিন্তু সে-সব কারুকার্য বর্তমানের বা ভবিষ্যতের চোখ আর দেখবে না, কারণ কাঠের পরমায়ু বেশী নয়। তবে পরে ভারত যখন পাথরের ঘর-বাড়ী তৈরি করতে লাগল, তখনকার শিল্পীরা আগেকার কাঠে-খোদাই কারুকার্যকেই সামনে রাখলে আদর্শের মতো ঐ-সব পুরাণো মন্দিরের কতকগুলি আজও বর্তমান আছে। তাদের দেখে তোমরা খৃষ্ট-পূর্ব যুগের ভারতীয় কাঠের বাড়ীর সৌন্দর্য কতকটা অনুমান করতে পারবে। ভারতের প্রতিবেশী ব্রহ্ম ও চীন

৫১