অশ্বারোহীর দলও পান্থনিবাসের সামনে এসে থামল। দলের পুরোভাগে ছিল যে অশ্বারোহী, ঘোড়া থেকে নেমে সে গম্ভীর স্বরে বললে, “কে এই পান্থশালার অধিকারী?” তার কণ্ঠস্বর শুনলেই বোঝা যায়, এ ব্যক্তি আজন্ম আদেশ দিতে অভ্যস্ত।
অধিকারী সসম্ভ্রমে কাছে ছুটে গিয়ে নত হয়ে অভিবাদন করলে।
অশ্বারোহী তার দিকে তাকিয়েও দেখলে না। তেমনি হুকুমের স্বরে বললে, “আজ রাত্রে আমি এখানে থাকবো। আমার আর আমার লোকজনের থাকবার ব্যবস্থা করো।”
অধিকারী মৃদু স্বরে বললে, “আজ্ঞে, হঠাৎ এত লোকের ব্যবস্থা করি কি ক’রে?”
অশ্বারোহী মুহূর্তের জন্যে অধিকারীর মুখের দিকে তাকালে, অত্যন্ত অবহেলা-ভরে। সেই দুই চক্ষের দীপ্তি দেখেই অধিকারীর দেহ ভয়ে সঙ্কুচিত হয়ে পড়ল।
পাঁচটি স্বর্ণমুদ্রা বার ক’রে অধিকারীর দিকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে অশ্বারোহী অধীর স্বরে বললে, “যাও! নিজের মঙ্গল চাও তো প্রতিবাদ কোরো না।”
স্বর্ণমুদ্রাগুলি তাড়াতাড়ি কুড়িয়ে নিয়ে অধিকারী সেখান থেকে দ্রুতপদে স’রে পড়ল।
সুবন্ধু সবিস্ময়ে অশ্বারোহীকে লক্ষ্য করতে লাগল। বয়স বোধহয় বিশ-বাইশের বেশী হবে না, কিন্তু তার দেহ এমন দীর্ঘ, বলিষ্ঠ ও পরিপুষ্ট যে, সহজে ধরা যায় না। উজ্জ্বলশ্যাম বর্ণ। ভাব-ভঙ্গি অসাধারণ সম্ভ্রান্তজনের মতো এবং মুখেচোখে অতুলনীয় প্রতিভা, বীরত্ব ও ব্যক্তিত্বের আভাস।
অশ্বারোহীর দৃষ্টি এতক্ষণ পরে লুবন্ধুর দিকে আকৃষ্ট হ’ল। কয়েক মুহূর্ত´ তীক্ষ্ণনেত্রে তার আপাদমস্তক দেখে নিয়ে তিনি