পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

একে একে লড়তে লড়তে প্রাণ দিয়েছিল—গ্রীক রক্তে ভারতের মাটি রাঙা ক’রে! বলতে আজও আমার বুক ফুলে উঠছে যে, অতীতের সেই গৌরবময় দিনে হিন্দু বীরবালারাও গ্রীক সৈন্যদের বিরুদ্ধে অস্ত্রচালনা করেছিলেন! এ উপন্যাসের কথা নয়, গ্রীক ঐতিহাসিকের কথা!

 ········সীমান্তের পথ হ’ল নিষ্কণ্টক!

 আলেকজাণ্ডার বললেন, “চলো এইবার পঞ্চনদের দেশে। রাজা পুরু সেখানে প্রস্তুত হচ্ছে, তার অধীনে আছে মাত্র পঞ্চাশ হাজার সৈন্য। তাকে মারতে পারলেই সমস্ত ভারত লুটিয়ে পড়বে আমাদের পায়ের তলায়।”

 পুরুর সৈন্যসংখ্যা যে পঞ্চাশ হাজারের বেশী ছিল না, এ-বিষয়ে মতান্তর নেই। কিন্তু ভারতের গৌরব খর্ব করবার জন্যে কিনা জানি না, আধুনিক য়ুরোপীয় ঐতিহাসিকরা আলেকজাণ্ডারের সৈন্যসংখ্যা অনেক কম ছিল ব’লে জানাবার চেষ্টা করেন। ভারতের নিজের ইতিহাস—অন্তত আসল ইতিহাস বলতে যা বোঝায় তা নেই, তাই আমরা আধুনিক য়ুরোপের কথা অমূলক বলে প্রতিবাদ করতে পারি না।

 কিন্তু আধুনিক য়ুরোপের এই চেষ্টাকে ব্যর্থ ক’রে দিয়েছেন দিগ্বিজয়ী গ্রীকদেরই প্রাচীন লেখক। প্লুটার্কের লেখা আলেকজাণ্ডারের জীবনীতে আমরা অন্য কথা পাই। কারণ তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, একলক্ষ বিশ হাজার পদাতিক ও পনেরো হাজার অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে আলেকজাণ্ডার ভারতবর্ষে প্রবেশ করেন।

 তারপর অন্যান্য গ্রীক ঐতিহাসিকরাও স্বীকার করেছেন যে, তক্ষশীলার রাজা অস্তি, অভিসারের রাজা ও অন্যান্য বশীভূত রাজারাও আলেকজাণ্ডারকে সৈন্য, হস্তী ও অশ্ব দিয়ে সাহায্য করেছিলেন; এবং আলেকজাণ্ডার নিজেও যে-পথে আসতে আসতে পেশাদার

৭৬