পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এখানে, একমাসের ছােটর দরখাস্ত করেছি।--কাল পরশ মজার হয়ে যাবে। দ’জনে একসাথে যাব-আমিও অনেকদিন বাড়ি থেকে বেরোই নি । সাগবে মাথা তলে মাকুল বলে, একমাস আমরা দ’জনে ঘরেছি - আজ এখানে কাল ওখানে। পরীতে টানা আটদিন ছিলাম-সমন্দ্ৰি নাকি ওনার খব ভাল লাগে। আমায় নিয়ে আর একবার দ’একমাসের জন্য পরীতে যাবেন বলেছেন। বকুল বোকার মত সরলভাবে জিজ্ঞাসা করে, তোকে তবে রাখল। না কেন দিদি ? মাকুল বিচলিত না হয়েই জবাব দেয়, কি করে রাখবে ? আর এক জনকে ঘৰে এনে ফেলেছে, উপায় কি ! অনিলের রোগটা বাড়িতে মকুল প্রথম আচে করে । কিন্ত হৈ চৈ করে না । তার তো কিছই করার ক্ষমতা নেই। বিস্ময়কর সংযমের পরিচয় দিয়ে অনিলের কাছেও সে গোপন রাখে। যে তার রোগের ব্যাপারটা সে আন্দাজ করতে পেরেছে। এ সংসারের নিয়ম রীতি মেনে নিয়ে সাধারণ সেবা-যত্ন একটু দরদের সঙ্গে করা ছাড়া তার আর কিছই করার সাধ্য নেই । একটু দধি বেশি দেওয়া সম্ভব হলে কোনদিন আধখানা ডিম বেশি দেওয়া । স্বামী তাকে সঙ্গে নিয়ে একমাস অনেক তীর্থ আর দর্শনীয় স্থান ঘাঁরয়ে এনেছে । কিন্ত স্ত্ৰী হিসাবে, সংসারের কত্রী হিসাবে তাকে গ্রহণ করে নি। এজগতে কারো জন্য কিছ. করার ক্ষমতা বা অধিকার তার নেই । Sifas বিনয়ের রূকম যেন কেমন কেমন । কেমন লাঘ হয়ে গেছে তার মন মেজাজ । কেমন হালকা হয়ে গেছে তার কথাব্যতা, সবচেয়ে হালকা লাগে হাসিটা। একটু হাসতে হবে বলেই অগত্যা সে যেন মখে হাসি ফোটায়। একটু ইয়াকি করার 3V5 হাসিহাসিও যে কত গরতের ব্যাপার জীবনে, কে এতদিন তা খেয়াল করেছিল ? প্রাণ খোলা হাসি, প্রাণে কুতকুত লগা হাসি, ভদ্রতার কাষ্ঠ হাসি আর অমাজিত জীবনের প্রাণান্তকর বীভৎস রসিকতাকে প্রাণের জবালায় অবজ্ঞা করার ব্যঙ্গের হাসিকে জানত এসব হাসির ওজন এত বেশি । তলোর মত ফাঁপা, পাখীর খসা সাদা পালকের মত বিবৰ্ণ প্রাণহীন হালকা হাসির নমনা যদি না দেখা যেত বিনয়ের মাখে । মখে নয়, ঠোঁটে । NOKO