পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাখীর খাঁচা না পাখীর আশ্রম?

 বিধ্বস্ত বেল্‌জিয়মের পুনর্গঠন প্রসঙ্গে যে সকল মানব-সহায় বিহঙ্গের আভাস আমরা পূর্ব্বে দিয়াছি, তাহাদের সহিত বাস্তব জীবনের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ স্থাপন করা যে শুধু বিলাসবিভ্রমের অঙ্গ বলিয়া মনে করা উচিত, তাহা নহে। আমাদের সুখের সময় হয় ’ত তাহারা ভোগের নানা বিচিত্র সামগ্রীর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাত্র একটা উপকরণরূপে পরিগণিত হয়;—মানবাবাসে পিঞ্জরস্থ বিহঙ্গে অভ্যস্ত হইয়া আমাদের চিত্তবৃত্তি হয় ’ত কতকটা বিকৃত হইয়া গিয়াছে, কিন্তু তাহাদিগকে যদি আমরা ভাল করিয়া জানিতে ও চিনিতে চেষ্টা করি, তাহা হইলে অনেক সময়ে আমাদের দেশের ও মানবসভ্যতার ইতিহাসের ধারা বিপথগামী হইতে পারে না। এত বড় কথা যদি কোনও Ornithologist জোর করিয়া বলেন, তাহা হইলে ইতিহাসজ্ঞ পণ্ডিতমণ্ডলী বিদ্রোহী হইয়া মাথা নাড়িতে পারিবেন না। পক্ষী সম্বন্ধে আমি কোনও প্রাচ্য অথবা পাশ্চাত্য পৌরাণিক কাহিনীর উল্লেখ করিতেছি না। সুদূর অতীতে কেমন করিয়া দুটি ভাই দুইটি গিরিশৃঙ্গে উপবেশন করিয়া, উড্ডীয়মান পাখীর গতি দেখিয়া একটা ক্ষুদ্র নদীর তীরে রোম নগরীর প্রতিষ্ঠা করিয়াছিল; কেমন করিয়া পরে রোমের পুরোহিতমণ্ডলী বিহঙ্গদেহের অংশ বিশেষ পরীক্ষা করিয়া স্বদেশের ভাবী শুভাশুভ গণনা করিয়া বলিয়া দিতেন[১];

  1. শ্রীযুক্ত নরেন্দ্র নাথ লাহা, পি, আর, এস, মহাশয়ের The Religious Aspects of Ancient Hindu Polity নামক সুলিখিত প্রবন্ধে ইহা বিশেষরূপে আলোচিত হইয়াছে। (Modern Review, January 1918).