পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
২০১

এই শৈলসুতাচরণ-রাগজাত মণিটিকে তুলিয়া লও। ইহা প্রিয়জনের সহিত আশু সঙ্গম ঘটাইবে।”

 রাজা মণিটিকে লইয়া ইতস্ততঃ পরিভ্রমণ করিতে করিতে, কুসুমরহিতা একটি লতাকে দেখিয়া অধীর ভাবে তাহাকে যেমন আলিঙ্গন করিতে যাইবেন, অমনি উর্ব্বশী তাঁহার বাহুপাশে ধরা দিলেন। রাজা বলিলেন,—“তোমাকে দেখিয়া আমার স-বাহ্যান্তরাত্মা প্রসন্ন হইল। আচ্ছা, বল দেখি, আমার বিরহে তুমি এতকাল কেমন ছিলে? আমি ত’ ময়ূর, পরভৃত, হংস, রথাঙ্গ, অলি, গজ, পর্ব্বত, কুরঙ্গ, সরিৎকে তোমার কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছি।”

 এইরূপে উর্ব্বশীর সহিত মিলিত হইয়া, সহচরী-সঙ্গত হংসযুবার ন্যায় রাজা বিমানবিহারী নবীন মেঘের উপর ভর দিয়া প্রতিষ্ঠানাভিমুখে যাত্রা করিলেন।

 নাটকের পঞ্চম অঙ্কে একটা গৃধ্র আসিয়া গোল বাধাইল। আমিষভ্রমে সেই অশোকস্তবকের মত লাল মণিটিকে চঞ্চুপুটে লইয়া গৃধ্র অদৃশ্য হইল। রাজা অস্থির হইয়া নাগরিকদিগকে আদেশ দিলেন—কোথায় বৃক্ষাগ্রে ইহার বাসা আছে, অনুসন্ধান করা হউক। সহসা শরবিদ্ধ হইয়া বিহগাধম ভূমিতে নিপতিত হইল। শর পরীক্ষা করিয়া দেখা গেল যে, উর্ব্বশী-পুরুরবার পুত্র কর্ত্তৃক ইহা নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল। পুরুরবার বিস্ময়ের সীমা রহিল না। উর্ব্বশী যে জননী হইয়াছেন, ইহা তাঁহার সম্পূর্ণ অবিদিত। এমন সময়ে চ্যবন মুনির আশ্রম হইতে একজন তাপসী, কুমারের হাত ধরিয়া রাজার নিকটে আসিলেন। পরিচয়ান্তে রাজা বুঝিতে পারিলেন যে, এই বালকটি আশ্রমপাদপ-শিখরে নিলীয়মান গৃধ্রকে ভূমিতলে পাতিত করিয়া আশ্রমের পবিত্রতা নষ্ট করিয়াছে বলিয়া তাহাকে রাজসমীপে প্রেরণ করা হইয়াছে। ছেলেটিকে কনকপীঠে উপবেশন করাইয়া উর্ব্বশীকে ডাকান হইল। উর্ব্বশী কুমার আয়ুষকে দেখিয়া