নিকটে আসিতে দেন না। কেবল প্রিয়বয়স মাধব্য সর্বদা সমীপে উপবিষ্ট থাকেন। তিনি সান্ত্বনা বাক্যে প্রবোধ দিতে আরম্ভ করিলে, তাহার শোগর উথলিয়া উঠিল; নয়নযুগল হইতে অনবরত বাষ্পবারি বিগলিত হইতে থাকিত।
এক দিবস, রাজার চিত্তবিনোদনার্থে, মাধব্য তাহাকে প্রমদবনে লইয়া গেলেন। উভয়ে সুশীতলশিলাতলে উপবিষ্ট হইলে, মাধব্য জিজ্ঞাসা করিলেন, ভাল বয়স! যদি তুমি তপোবনে যথার্থই শকুন্তলার পাণিগ্রহণ করিয়াছিলে, তবে তিনি উপস্থিত হইলে প্রত্যাখ্যান করিলে কেন? রাজা শুনিয়া দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া কহিলেন বয়স্য! ও কথা আর কেন জিজ্ঞাসা কর! আমি রাজধানী প্রত্যাগমন করিয়া শকুন্তলাভ্রান্ত একবারে বিস্মৃত হইয়াছিলাম। কেন বিস্মৃত হইলাম কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। সে দিবস প্রিয়া কত প্রকারে বুঝাইবার বেষ্ট। করিলেন; কিন্তু আমার কেমন মতিচ্ছন্ন ঘটিয়াছিল কিছুই স্মরণ হইল না। তাঁহাকে স্বেচ্ছাচারিণী মনে করি, কতই দুৰ্বার কহিয়াছি, কতই অপমান করিয়াছি। এই বলিতে বলিতে নয়নমুগল অশ্রুজলে পরিপূর্ণ হইয়া আসিল; বাক্শক্তিরহিতের ম্যায় হইয়া কিয়ৎগণ শুব্ধ হইয়া রহিলেন। অনন্তর মাধবকে কহিলেন ভাল, আমিই যেন বিস্মৃত হইয়াছিলাম; তোমাকে ত সমুদায় কহিয়াছিলাম, তুমি কেন কথা প্রসঙ্গে কোন দিন শকুন্তলার কথা উত্থাপন কর নাই। তুমিও কি আমার মত বিস্মিত হইয়াছিলে?
তখন মাধব্য কহিলেন বয়স! আমার দোষ নাই। তুমি সমুদয় বলিয়া পরিশেষে কহিয়াছিলে শকুন্তলাসংক্রান্ত যে সকল কথা কহিলাম সমস্তই পরিহাসমাত্র, বাস্তবিক নহে। আমিও নিতান্ত নির্ব্বোধ, তোমার শেষ কথাই সত্য বলিয়া বিশ্বাস