পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুনীল শেখাতে সময় পায়না। কিন্তু মায়ার স্কুলের হিসাব নিকাশ তাকেই দেখে দিতে হয়। মায়া কাগজপত্ৰ এনে সবে তাকে হিসাবটা বুঝিয়ে দিতে আরম্ভ করেছে, অনিল ঘরে এসে বলে, তুমি নাকি আমায় ডেকেছ দাদা ? সুনীল বলে, ডেকেছিলাম। বাবা নালিশ করেছিলেন তোমার নামে। তুমি ঘর থেকে টাকা নিচ্ছ, বাইরে রোজগার করছি।-অথচ তোমার নিজের খরচের দায়িত্বটা তুমি নিতে পারিছ না। অনিল চুপ করে থাকে। সুনীল আবার বলে, আমরা টাকা ঢালব, তুমি পড়বে—তার একটা সার্থকতা আছে। আমরা পড়ার খরচও দেব, তুমি আবার নিজেও ওদিকে রোজগারের জন্য টাইম আর এনজি নষ্ট করবে, আমি এর মানে বুঝি না । অনিল ধীরে ধীরে বলে, মানুষ বিশেষ অবস্থায় পড়লেবিশেষ অবস্থায় পড়বার অধিকার তো তোমার নেই । মায়া অস্বস্থিম্ভ বোধ করে বলে, আমি চলে যাব ? তোমাদের কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে হয় তো । সুনীল বলে, অসুবিধা কেন হবে ? গোপন কথা তো কিছু হচ্ছে না। আমাদের । অবশ্য অনিল যদি কিছু বলতে চায়আমার কিছুই বলার নেই। আমার কথার একটা জবাব তো দেবে ? আমরা পড়ার খরচ দিলে তোমাকে পয়সা রোজগারের চেষ্টা বাদ দিতে হবে । ছাত্রজীবনে যা দরকার সব আমরাই যোগাব ! অনিল গোমড়া মুখে বলে, পয়সা রোজগারের চেষ্টা কি খারাপ ? সুনীল বলে, নিজের কাজ ফাকি দিয়ে করা খারাপ বৈকি। রোজগার ছাড়া তোমার যদি না চলে, পড়া ছেড়ে দিয়ে ভিড়ে পড়। ভুল করে কোন দায়িত্ব যদি নিয়ে ফেলে থাকো, টাকার জরুরী দরকার হয়ে থাকে, আমাকে জানালে SRV)