পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫১৮
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

সীমান্তের স্ত্রীলোকদের অবাধ গতিবিধি এবং স্বাধীনতা নিকটবর্ত্তী বঙ্গের সমতল ভূমির উপর কতকটা প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল।

যদিও পালাগানটিতে নানারূপ কষ্টের ও দুঃখের চিত্র অবতারিত হইয়াছে, তথাপি ইহার পরিণাম শুভ। পল্লীকবিরা সংস্কৃত কাব্যের নিয়মগুলি একেবারেই আমলে আনিতেন না। এইজন্য প্রাচীন পালাগানের অনেকগুলি বিয়োগান্ত। এই গানটি পল্লীনিয়মের ব্যতিক্রম বলিলেও অত্যুক্তি হয় না।

লেখনী ভূপাতিত করিয়া কোন তরুণ বন্ধুকে তাহা তুলিয়া দিবার অনুরোধ এবং সেই উপলক্ষে বিবাহ-প্রস্তাবের অবতারণা শুধু এই পালাটিতে নহে আরও কতকগুলি পালাতে আমরা পাইয়াছি। সম্প্রতি পুরন্দরের পালা নামক যে গানটি আমাদের হস্তগত হইয়াছে তাহারও পুর্ব্বভাগে এইরূপ এক দৃশ্য অবতারিত হইয়াছে। ষোড়শ শতাব্দীতে সুপ্রসিদ্ধ কবি ফকিররাম কবিভূষণ বৰ্দ্ধমান জেলার একটা প্রাচীন পল্লীগাথা ভাঙ্গিয়া যে সুন্দর কাব্য রচনা করেন তাহাতেও এই লেখনী লইয়া প্রেমের কথাবার্ত্তার প্রসঙ্গ আছে। ফকিররামের সেই কাব্যটির নাম ‘সখী সোণা’। আমাদের ‘বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়’ নামক সংগ্রহ-পুস্তকে সখী সোণার অনেক অংশ সঙ্কলিত করা হইয়াছে।

শ্রীদীনেশচন্দ্র সেন।