পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SO প্রয়োজন হয়, তথাপি আরও অনেক জিনিষ আছে। গৃহাঙ্গনে আলিপনা, সি দূরকৌটা-স্থাপন হইতে আরম্ভ করিয়া দাম্পত্য-জীবনের কৰ্ত্তব্য-নিৰ্দেশক কবিতাবলীর আবৃত্তি, সঙ্গীত ও বাদ্যভাণ্ড পৰ্য্যন্ত সমস্ত কাৰ্য্যই ‘পাণখিলে’র অন্তর্গত। অনেক সময় এই করণীয়গুলি শেষ করিতে পূরা পাঁচ ঘণ্টারও অধিক সময় লাগে । মৈমনসিংহের জমিদার ও উকিল শ্ৰীযুক্ত যতীন্দ্ৰনাথ মজুমদার, বি, এল, মহাশয়ের সহিত বংশীদাসের তারিখ সম্বন্ধে আমার অনেক চিঠিপত্র লেখালিখি * হইয়াছে। বংশীদাস ঐ জেলার মনসা-ভক্ত একজন বড় কবি। বংশীদাস, র্তাহার কন্যা চন্দ্রাবতী কর্তৃক রচিত ‘কেনারামের’ গীতিকার একজন প্রধান চরিত্র। চন্দ্রাবতী মলুয়া’ ও ‘কেনারাম’ এই দুইটি পালাগানের রচয়িত্ৰী ; নয়ানচাঁদ রচিত একটি পালাগানে ইহার জীবনকথা করুণভাবে বিবৃত আছে। প্ৰতিভাশালিনী কন্যা চন্দ্রাবতীর সাহায্যে বংশীদাস যে “মনসামঙ্গল” কাব্যখানি রচনা করিয়াছিলেন এবং যাহা ৬/রমানাথ চক্ৰবৰ্ত্তী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্ৰকাশিত হইয়াছে, তাহাতে স্বয়ং কবি-প্রদত্ত রচনার তারিখ, শকাব্দ // ১৪৯৭, ( ১৫৭৫ খৃঃ) বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। মজুমদার মহাশয় বলেন যে কাব্যখনি আরো পরে লেখা । ইহা প্ৰমাণ করিবার জন্য তিনি অনেক প্রমাণ ও যুক্তি দেখাইয়াছেন। আমি তাহার যুক্তিগুলির উল্লেখ করিতেছি। ‘অঙ্কস্য বামা গতি' অনুসারে তিনি বলেন যে তারিখটি বাম দিক হইতে পড়িতে হইবে। কিন্তু এখানে আমরা তদ্বিপরীত দেখিতেছি। বংশীদাসের ন্যায়। একজন বিদ্বান ব্যক্তি যে এক্ষেত্রে প্রচলিত প্রথার বিরুদ্ধাচরণ করিবেন তাহা মনে হয় না। আমার মনে হয় এ যুক্তি ঠিক নহে। সংস্কৃতজ্ঞ কবি-রচিত বাঙ্গাল কাব্যেও অনেক সময় এ নিয়ম অনুসৃত হইতে দেখা যায় না । মহাকবি ভারতচন্দ্ৰ ও তদ্রচিত একটি কাব্যের শেষে লিখিয়াছেন “সনে রুদ্রচৌগুণা-ইহা ডান দিক হইতে পড়িতে হইবে, বাম দিক হইতে নয়। খেলারাম ১৫২৭ খৃষ্টাব্দে রচিত একটি ধৰ্ম্মমঙ্গল কাব্যের শেষে লিখিয়াছেন ঃ ভুবন শাকে বায়ু মাসে শরের বাহন। খেলারাম করিলেন গ্ৰন্থ আরম্ভণ ।