পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 পূর্ববঙ্গ গীতিকা নামক পুস্তকে সঙ্কলিত হইয়াছে। হিন্দু-মুসলমানের উৎসবে এই পরস্পরের যোগদানের ব্যাপার, প্ৰতিবেশীদের মধ্যে যে সৌহার্দ্য বিদ্যমান থাকা স্বাভাবিক, তাহারই অস্তিত্ব প্ৰতিপন্ন করিতেছে । বৰ্ত্তমান কালের বিদ্বেষ অর্থে আমরা এই বুঝি যে একজন তাহার প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগাইতে চেষ্টা করিতেছে। এই কাৰ্য্যে অন্যায়কারী নিজেও যে নিরাপদ নয়, তাহা কাহায়ও বুঝিতে বিলম্ব হইবে মা। মাথুর মা’র পালা-রচক তুলসী-মাহাত্ম্য ঘোষণা করিয়াছেন এবং ‘দুর্গা দশভুজা’র সশ্রদ্ধ উল্লেখ করিয়াছেন। আমরা কয়েকখানি প্ৰাচীন মনসাদেবীর ভাসানে মুসলমান লেখকের নাম পাইয়াছি এবং মৈমনসিংহ প্ৰভৃতি অঞ্চলে এখনও মুসলমানের দল বঁধিয়া মনসাদেবীয় পালা গান করিয়া থাকেন । এই গীতিকার অনেক শব্দ এবং পদ চণ্ডীদাসকে স্মরণ করাইয়া দিবে। আমরা এই খণ্ডের প্রথমে যে বিস্তৃত সাধারণ ভূমিকা প্ৰদান করিব, তাহাতে BBS BDDBD BBS DBDDLB EEKSTBDBD DB DD L D হইতে আলোচনা করিলে ‘মাণ্ডুর মা’ পালাটি চণ্ডীদাসের সমসাময়িক বলিয়া মনে হইবে। ‘মহুয়া', 'ধোপার পাট’, ‘মৈশাল বন্ধু প্ৰভৃতি কয়েকটি গীতে প্রেমের যে স্বাধীনতা ও উদামস্ফুক্তি পরিদৃষ্ট হয়-এই পালাটিতে তাহার নিদর্শন বিদ্যমান। এই পালাগানগুলি এক যুগের লক্ষণাক্রোন্ত এবং ইহারা সম্ভবতঃ চণ্ডীদাসের সময় অথবা তাহার অব্যবহিত পরে রচিত হইয়াছে। এখন আর এই সকল পালার বহুল প্রচার নাই। এক সময়ে মৈমনসিংহ জেলার সর্বত্র ইহারা গীত হইত। কিন্তু যে কায়ণে এগুলি সামাজিক কৰ্ত্তাদের নিকট নিন্দিত হইয়া ক্ৰমশঃ লুপ্ত হইবার পথে দাঁড়াইয়াছে, তাহা পাঠকের বুঝিতে বিশেষ কষ্ট হইবে না। গ্রেমের আভিশষ্য কুধিত্বের সৃষ্টি করিতে পারে, কিন্তু সমাজের হাতে কবির অব্যাহতি নাই। লর্ড বাইরণ প্রভৃতি বহু কবিকে এই ভাবে স্বীয় সমাজের কাছে তাড়া খাইতে হইয়াছে। পাঠক ইহা মনে করিবেন না যে, “মাধুর মা'র পালা অশ্লীলতা-দোষদুষ্ট। এই কৃষক-কবিদের মধ্যে রুচির এরূপ সরসতা রহিয়াছে যে ইহাদের রচনায় কোথাও শ্লীলতা লঙ্ঘিত হইতে দেখা যায় মা । v> তবে সামাজিক রীতির প্রতি ইহায়া বিশেষ মৰ্যাদা প্ৰদৰ্শন করেন নাই।