পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

针 छूमिका 8ՏԳ রূপে বিমোহিত হইয়া আরাকানরাজ যখন তাহার পাণিগ্রহণের প্রস্তাব করিয়া পাঠাইলেন তখন বন্ধুত্বের ভিতর মতলবের চালবাজি চলিতে লাগিল। এইখানে একটা খণ্ডযুদ্ধের উল্লেখ আছে। বাৰ্ণিয়ার বলেন—সুজা একজন খোজা, একজন স্ত্রীলোক ও দুইজন শরীর-রক্ষীর সমভিব্যাহারে আন্দাকানের পাৰ্বত্য প্রদেশে পলায়ন করেন । এমন কি আগ্ৰায় পৰ্য্যন্ত এই জনশ্রুতি পৌঁছিয়াছিল। আরঙ্গ জীব একদিন পরিহাসচছলে বনিয়াছিলেন, ‘সুজা মক্কায় গমন করিয়া হাজি হইয়াছেন।” তখনও আগ্রার লোকের বিশ্বাস ছিল যে সুজা কনষ্টাণ্টিনোপলে প্রচুর অর্থ সংগ্ৰহ করিয়া পারস্যে প্ৰত্যাবৰ্ত্তন করিয়াছেন এবং বিপুল বাহিনী সহ ভারত: ক্রমণে উদ্যোগী হইয়াছেন । এই সময় এইরূপ আর একটি জনশ্রুতি অতিশয় দৃঢ়তার সহিত প্রচারিত হইয়াছিল যে, পেগু ও শ্যামের রাজা কর্তৃক উপহৃত রক্তবর্ণের পতাকা-সুশোভিত দুইখানি জাহাজ সহ সুজা সুরাট বন্দরের নিকট দিয়া গমন করিয়াছেন । এই সমস্ত আখ্যানের কোন ভিত্তি না থাকিলেও সতত সশঙ্ক আরঙ্গ জীবের অন্তঃকরণে তখন ভীতির সঞ্চার হইতেছিল । ষ্টুয়ার্টের মতে খণ্ডযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর সুজাকে বন্দী করা হয় এবং বঙ্গোপসাগরের তরঙ্গ-বিক্ষোভিত সুনীল জলধি-গর্ভে র্তাহার সমাধি রচিত হইয়াছিল । “আরাকানের প্রাচীন ইতিবৃত্ত অনুসন্ধান করিলে এ সম্বন্ধে আরও কিছু তথ্য আবিষ্কৃত হওয়ার আশা করা যায়। আশ্রয়দাতুস্বরূপ আপন কৰ্ত্তব্য বিস্মৃত হইয়া যে আরাকানরাজ হতভাগ্য সুজাকে বঙ্গোপসাগরের লবণ-সলিলে ডুবাইয়া মারিয়াছিলেন, তাহার নাম ‘সন্দ-সু-ধম্ম’ বলিয়া রাজমালায় উল্লেখ আছে। আরাকানের এই সুধৰ্ম্ম নরপতির কথা সমসমায়িক মুসুলমান কবি আলওয়াল ও দৌলত কাজির বর্ণনায় মাঝে মাঝে দৃষ্টিগোচর হয়। “ছয় ফলমুল্লুক” নামক অতিশয় প্রাচীন এক কাব্যগ্রন্থে সুধৰ্ম্ম নরপতির প্রশংসার বাণী আছে। যথা “ক্ষিতিতলে অনুপাম রোসাং সাহর নাম শ্ৰীমন্ত সুধৰ্ম্ম নরপতি।” VNS)