8sty পুর্ববঙ্গ গীতিকা এই গ্রন্থে সুজার আরাকান-বাসের ইঙ্গিত পাওয়া যায় “পরদেশী আইসে শুনি হরষিত নৃপমণি স্নেহ করি সাদরে আনন্ত ।” পরদেশীর পরিচয়-প্রসঙ্গে বৰ্ণনা আছে “পশ্চিমে মুল্লুকাভার চিন না পায় তার ভুবনে নাইক সম বীর । দক্ষিণে সাগর-সীমা উত্তরে পর্বত হিমা মধ্যে যত পর্বত কানন । 举 米 、将 নৃপতি মহত্ত্ব শুনি ভক্তি ভাবে মনে গণি সুখে থাকে দিয়া রাজকর।” “রাজমালার গ্রন্থকার কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ লিখিয়াছেন, ‘সুজার পত্নী পরিভানুর রূপ ও গুণগাথা এক সময় বঙ্গের পল্লীতে পল্লীতে গীত হইত । সেই সকল গ্ৰাম্যগীতি এখন বিস্মৃতি-সাগরে বিলীন হইয়াছে।” সুজা-পুত্রার এই বিলাপোক্তির ক্ষুদ্র গীতিকাটীও এই জাতীয় । ইহা একটি বৃহৎ পালাগানের ভগ্নাংশ বলিয়া আমার মনে হয় । রচনাভঙ্গী ও গ্ৰাম্য শব্দের বহুলতা দেখিলে বুঝা যায় যে সমসাময়িক কোন অজ্ঞাতনামা চাষা-কবির দ্বারা এই গীতিকাটি বিরচিত হইয়াছিল। সুজার পরিবারবর্গের শোচনীয় পরিণাম এবং বঙ্গোপসাগরে সেই বিয়োগান্ত নাটকের শেষ দৃশ্যপট। এই অঞ্চলের অধিবাসিৰ্বন্দের হৃদয়ে দারুণ আঘাত প্ৰদান করিয়াছিল। তখন চট্টগ্রামে দলে দলে মুসুলমানগণ উপনিবিষ্ট হইতেছিল। ইতিহাসের দিক হইতে অনুসন্ধান করিলে দেখা যায় তখন এই অঞ্চলের মুসুলমানগণ আরাকানের মগের উপর অতিশয় ঈর্ষার ভাব পোষণ করিত। হয় ত আরাকানের সভাসদ মুসুলমান কবি রাখিয়া-ঢাকিয়া সসঙ্কোচে যে বর্ণনাটুকু করিয়াছেন সেইদিকে ভ্ৰক্ষেপ না করিয়া মিরক্ষর নির্ভীক চাষা-কবি সতেজ ভাষায় সহজ সুরে গান গাহিয়া মনের আগুন নির্বাপিত করিয়াছিলেন।