পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌরাণিকী স্বীয় সস্তানদিগকে শাস্ত্ৰশিক্ষা দিয়াছিলেন। জ্যেষ্ঠ আটটি পুত্ৰই শাস্ত্রানুশীলনে রত এবং পণ্ডিত হইয়াছিলেন । ভরত সৰ্বকনিষ্ঠ পুত্র। শিশুকালে তঁাহার মূৰ্ত্তি সকলের আনন্দদায়ক ছিল। যাহার হৃদয়ে সর্বদা ভগবৎজ্ঞান বিরাজমান, তঁাহাকে দেখিয়া যে সকল লোক মুগ্ধ হইবেন, তাহাতে আর আশ্চৰ্য্য কি ? বস্তুতঃ তাহার রূপের স্নিগ্ধ আকর্ষণ দর্শকমাত্রই হৃদয়ে অনুভব করিতেন । আত্মীয়গণ সর্বদা বলিতেন, ব্ৰাহ্মণ, তোমার এই ক্ষুদ্র শিশুটি পরম ভাগবত হইবে । কিন্তু শিশুর বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে ইন্দ্রচূড়ের সমস্ত আশা তিরোহিত হইল। সপ্তম-বর্ষ-বয়স্ক পুত্ৰ কথা বলিতে পারে না, ডাকিলে স্নিগ্ধ চক্ষুদ্বয় প্রসারিত করিয়া উদাসীনের ন্যায় চাহিয়া থাকে। সঙ্গীদের সঙ্গেও খেলা করে না, কোন বিষয়ে আমোদ বা উৎসাহ নাই । যেখানে যে লইয়া যায়, স্বাণুর ন্যায়। সেই খানেই বসিয়া থাকে। ইন্দ্রচূড় তাহার এই প্ৰাণপ্ৰতিম পুত্রটির শিক্ষার জন্য কত প্রকার চেষ্টা করিলেন, কিছুতেই কিছু হইল না। এমন সুন্দর, উজ্জ্বল ললাট, দীপ্ত নেত্র-বিশিষ্ট সুগঠিত দেহ বালকটি হাব হইল, এই কষ্ট পিতামাতার অসহনীয় হইয়া উঠিল। চন্দ্রচূড় তাহাকে উপনয়ন প্ৰদান করিয়া সাবিত্রী মস্ত্রে দীক্ষিত করিতে বহু চেষ্টা পাইলেন, বালক কিছুতেই কোন মন্ত্র উচ্চারণ করিতে পারিল না । স্নিগ্ধ কণ্ঠে কত আদরে তিনি তাহাকে মন্ত্র উচ্চারণের জন্য চেষ্টা করাইলেন, সে আব্দর ব্যর্থ হইল। তখন ক্রুদ্ধ হইয়া একদা তাহাকে প্রহার করিলেন, বালক শুধু ফ্যাল ফ্যাল চক্ষে চাহিয়া রছিল। তাহার মুখে কখনও কেহ হাসি দেখে নাই, চক্ষে কেহ কখনও অশ্রু দেখে নাই। নিব্বিকার জড়বৎ সমস্ত স্নেহবন্ধনের ܕ%