পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌরাণিকী দেশে তাহার অনুকরণ হইত না ; এমন সূক্ষ্ম সুন্দর কার্য, এমন মাজ্জিত শিল্প জগতের অন্যত্র দুর্লভ ছিল। কালকেতুর উপর প্রজাগণের অপাের ভক্তি ছিল। কালকেতু পূর্বের অভ্যাস ঠিক রাখিয়া তৃতীয় প্রহরে আহার করিত, আহারের পূর্বে কিঙ্করকে জিজ্ঞাসা করিত, “আমার রাজ্যে অদ্ভুক্ত কেহ আছে কি না ?” ইহা নির্ণয় করিবার জন্য পূৰ্ব্ব হইতেই শত শত দৌবারিক রাজ্যের সৰ্ব্বত্র সন্ধান করিয়া সংবাদ আনয়ন করিত, একটি প্ৰজা অভুক্ত থাকিলেও কালকেতু অন্ন গ্ৰহণ করিত না, আর কালকেতুর প্রসাদ ভিন্ন ফুল্লারার কোন প্রকার খাদ্যে রুচি ছিল না । Nè কিন্তু বিশালপুরীর এই ঐশ্বৰ্য, এই আশ্চৰ্য্য অবস্থার পরিবর্তনে কালকেতুর কি কোন স্বভাব-বিপৰ্য্যয় ঘটিয়াছে ? যতই ঐশ্বৰ্য্য বাড়িতেছে, কালকেতুর ততই পৃথিবীর প্রতি উপেক্ষার ভাব আসিতেছে ; সে সম্পূর্ণ উদাসীন ভাবে পুরীর প্রতি লক্ষ্য করিয়া মাঝে মাঝে চিন্তান্বিত হয় । ফুল্লারার রূপেও ত ভাটা পড়িয়াছে। বসনে, ভূষণে, ও পরিচ্ছদের প্রাচুর্য্যে সে ভাটার মুখ বন্ধ হয় না। এই কি আমার সেই ফুল্লরা, কুঁড়ে ঘরে মলিন বস্ত্র পরিয়া যে রূপের ডালির ন্যায় ছিল, এই কি সেই ফুল্লারা ? এ দেশে সূর্য, উঠিয়া অস্ত যায়, চন্দ্ৰকে রাহুতে গ্ৰাস করে, যে ফুলটি যত রূপের ও সুরভির ঘটা করিয়া ফোটে, তাহা তত শীঘ্ৰ শুকাইয়া যায় { R8r