পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেহুলা এই কথার পর চারিদিক হইতে একটা বিকট অট্টহাস্য হইল ; বেহুলা নিৰ্ভীকভাবে স্বামীর কঙ্কালকে দৃঢ়তর আলিঙ্গনে বক্ষে ধারণ করিলেনসেই বিকট ধ্বনি থামিয়া গেল। সহসা মেঘমুক্ত পূৰ্ণচন্দ্রের জ্যোতিতে এক নাট্যশালার দৃশ্য বেহুলার চক্ষের সম্মুখে উদ্ভাসিত হইল-অসংখ্য নরনারী একত্র হইয়া আনন্দোৎসব করিতেছে। তাহাদের মধ্যে গন্ধৰ্বের মত সুপুরুষগণ বেহুলাকে ডাকিয়া বলিতেছে, “বেহুলা, ছিঃ ! মৃতের কঙ্কালটা ফেলিয়া এস, সুবাসিত জলে স্নান করিয়া, অঙ্গ-মার্জনা-পূর্বক দিব্য পুষ্পমাল্য, নানা পরিচ্ছদ ও আভরণ পরিয়া এখানে এস ; রমণীর যৌবন অস্থায়ী, তাহা একবার গেলে, নদীর স্রোতের ন্যায় আর ফিরিয়া আসিবে না । এস আমরা রসালাপে ও বিচিত্ৰ সুখভোগে জীবন যাপন করি।” বেহুলা দেখিলেন-তাহারা প্ৰত্যক্ষ, ইহা স্বপ্ন নহে, গন্ধৰ্ব্বযুবকগণের স্বর সুস্পষ্টভাবে কৰ্ণে আসিতেছে, তাহদের রূপ তঁহার চক্ষের সম্মুখে সুস্পষ্ট-বেহুলা ঘূণায় চক্ষু মুদিত করিয়া কৰ্ণকুহর বদ্ধ করিলেন, এবং লখাইয়ের কঙ্কালকে দৃঢ়তর আলিঙ্গনে বদ্ধ করিয়া, উহাই একমাত্র আশ্রয়ের ন্যায় বক্ষে গ্ৰহণ করিলেন। গন্ধৰ্বপুৰী দেখিতে দেখিতে অদৃশ্য হইল। তখন ভয়ানক শীত তাহাকে গ্ৰাস করিয়া ফেলিল। শীতে সমস্ত শরীর কঁাপিতেছে, এবং রোমাঞ্চিত ও জর্জরিত হইতেছে ; পঞ্চপ্ৰাণ শীতাধিক্যে শিহরিয়া উঠিতেছে ; বাতাস শাণিত ছুরির ন্যায়। গাত্র বিদ্ধ করিতেছে। বেহুলা দেখিলেন, অতি সুকোমল উষ্ণ শয্যায় বসিয়া এক পরম রূপবান যুবক তঁাহাকে আহ্বান করিতেছে। বেহুলা ঘূণায় চক্ষু মুদ্রিত করিলেন এবং শীতনিবারণার্থ শীতল লখাই-এর কঙ্কাল আলিঙ্গন করিয়া রহিলেন-শীতের সঙ্গে সেই দৃশ্যতিরোহিত হইল। সহসা বেহুলা শুনিলেন, ফেব্রু ও ব্যাস্ত্ৰদল চীৎকার কাৱিয় তাহাকে ES