পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌরাণিকী বলিতেছে, “ঐ হাড় কয়খানি দাও, আমরা চিবাইয়া ক্ষুধানিবৃত্তি করি, উহা দ্বারা তোমার কোন কাজই হইবে না, তোমার দয়ার শরীরআমাদিগকে বঞ্চিত করিও না ।” বেহুলা সািভয়ে কঙ্কালগুলি বক্ষে রাখিয়া, স্বীয় জীৰ্ণ শরীর দিয়া আচ্ছাদিত করিয়া, ভেলায় উপুড় হইয়া পড়িয়া রহিলেন। ব্যাস্ত্র ও ফেব্রুপাল চলিয়া গেল । তৃতীয় প্রহর রাত্রে বেহুলা তাহার মাতা আমলাকে দেখিতে পাইলেন। শরীর ক্ষীণ, ধুলিলুষ্ঠিত, চক্ষে দীর দর বারিধারা, “আমার নয়ন-মণি বেহুলা, আয়-নিছনি গ্রামে তোর পিতা সায়-সদাগরের দশা দেখিয়া যা৷”-বলিয়া হতভাগিনী চীৎকার করিতেছে ; গাঙ্গুড়ের জলে কোন ভেলা দেখিলে, পাগলিনীর ন্যায় অমলা তাহ ধরিতে যায়, চম্পকনগরের কোন লোক আসিলে, তাহার পদতলে পড়িয়া মাথা কুটিতে থাকে। কদলীবৃক্ষ দেখিলে শিহরিত হইয়া মূৰ্ছিত হয় ; কেবল বলে, “আমার বেহুল, বক্ষে। আয় ।” অনশনে ও হা-হুতাশ করিয়া, তাহার সোনার অঙ্গ স্নান হইয়া গিয়াছে, যাহার জন্য বিশ্বের লোক ঝুরিয়া মরিতেছে-ৰ্তাহার হতভাগিনী মাতা কি করিয়া প্ৰাণধারণ করিবে ?-- “একবার আমার গৃহের রাণী গৃহে আয়” বলিয়া চক্ষের জলে বক্ষ ভাসাইয়া, আমলা আসিয়া বেহুলার হস্ত ধারণ করিতে উদ্যত। “মৃতদেহে কে কবে জীবন দিয়াছে ? আমার দেহে জীবন থাকে না-একবার জীবন দিয়া যাও,” বলিয়া অমলা তাহাকে ধরিতে আসিলেন। মাতাকে দেখিয়া বেহুলার চক্ষে জল পড়িতে লাগিল, “মা ! আমি যাব না, আমি যেতে পারিব না,”বলিয়া বেহুলা সেই কঙ্কালগুলি বক্ষে ধারণা করিয়া ফোপাইয়া ফোপাইয়া কঁাদিতে লাগিলেন। আমলা অন্তহিত হইয়া গেলেন । তখন বেহুলা “মা” “মা” বলিয়া কঁাদিতেছেন- "কৈ মা কোথায় আছ, &总