পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেহুলা হইলেন। বেহুলা যে কষ্টে ভেলায় ভাসিয়া সেই সকল স্থান অতিক্রম করিয়াছিলেন-অশ্ৰুসিক্তচক্ষে তাহা লক্ষ্মীন্দরকে জানাইলেন, লক্ষ্মীন্দরের বুক ফাটিয়া যাইতে লাগিল। মহেশ্বর-ঘাটায় লখাই-এর শবে প্ৰথম মাছিতা পড়ে, তখন বেহুলার যে শোক হয়, তাহা শুনিয়া পাষাণ বিগলিত হয় । গোদা-ঘাটে গোদা, ভাসিয়া গিয়াছিল, বেহুল মনসা-দেবীকে স্মরণ করিয়া, গোদাকে উদ্ধার করিতে প্রার্থনা করিলেন, গোদা বেহুলার প্ৰতি অবমাননা প্রদর্শন করাতে ছয় মাস কাল জলে ভাসিতেছিল, মনসা দেবী তাহার"জীবন মাত্র রক্ষা করিয়াছিলেন । দেখিতে দেখিতে রামকড়ি কর্ণে ও শঙ্খের মালা গলদেশে পরিয়া মৃতপ্ৰায় গোদা ভাসিতে ভাসিতে ঘাটে উঠিল ; প্ৰাণ পাইয়া গোদা বেহুলাকে বলিল,-“মা, আমি তোমায় না চিনিয়া বড় কষ্ট পাইয়াছি, পাপিষ্ঠ সন্তানের দোষ লাইবেন না ।” বেহুলার বরে গোদ ভাল হইয়া গেল। শৃগালাঘাট ছাড়িয়া নৌকা গঙ্গাপুরে পৌছিল। তথা হইতে বৰ্দ্ধমান, গোবিন্দপুর ও দুবরাজপুর পার হইয়া, বেলা দ্বিতীয় প্রহরের সময় সকলে চাপাতলার ঘাটে উপস্থিত হইলেন ! বেহুল চাপাতলার ঘাট দেখিয়া কঁাদিতে কাদিতে বলিলেন, “প্ৰভু, এই ঘাটে আমার ভ্রাতারা আমাকে ফিরাইয়া নিতে আসিয়াছিল, তঁহাদের আনীত নানা খাদ্যদ্রব্য চাপাগাছের তলায় পোতা আছে, বিষহরি দেবীর বরে তাহ! নষ্ট হয় নাই, মাটি খুড়িলে তাহা পাওয়া যাইবে । আমার পিতৃগৃহের খাদ্যাদি খাইতে বড় সাধ হইতেছে।” মৃত্তিক খুড়িয়া নানাবিধ উৎকৃষ্ট সন্দেশ চাপাকলা, ক্ষীরাখণ্ড প্রভৃতি দ্রব্য পাওয়া গেল ; সেগুলি যেমন তেমনই রহিয়াছে । বেহুলা সাশ্রুনেত্ৰে ভাসুৱদিগকে ও স্বামীকে তাহা পরিবেশন করিয়া নিজে প্ৰসাদ খাইলেন । তঁহাৱা চাপাতলা পার হইয়া নিছনি \