>Wり ভালবাসার অত্যাচার। সনে, এবং অন্যান্য শত শত স্থানে কবিগণ এই মহতী নীতি প্রতিপাদিতা করিয়াছেন । কিন্তু কবিগণ নীতিবেত্ত নহেন ; নীতিবেত্তারা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করেন নাই । যিনিই লৌকিক ব্যাপার সকল মনোভিনিবেশ পূৰ্ব্বক পর্যবেক্ষণ করিবেন, তিনিই এ তত্ত্বের সমালোচনা যে বিশেষ প্রয়োজনীয়, তদ্বিষয়ে নিঃসংশয় হইবেন। কেন না এ অত্যাচারে প্রবৃত্ত অত্যাচার অনেক । পিতা, মাতা, ভ্রাতা, তগিনী, পুত্র, কন্য, ভাৰ্য্যা, স্বামী আত্মীয়, কুটুম্ব, স্বহৃৎ, ভৃত্য, যেই ভালবাসে, সেই একটু অত্যাচার কয়ে, এবং অনিষ্ট করে। তুমি সুলক্ষণাস্বিত, সদ্বংশজা, সচ্চরিত্র কন্যা দেখিয়া, তাহার পাণিগ্রহণ করিবে বাসনা করিরাছ, এমন সময়ে, তোমার পিতা আসিয়। বলিলেন, অমুক বিষয়াপন্ন লোক, তাহার কন্যার সঙ্গেই তোমার বিবাহ দিব। তুমি যদি বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া থাক, তবে তুমি এবিষয়ে পিতার আজ্ঞাপালনে বাধ্য নহ, কিন্তু পিতৃগ্রেমে বশীভূত হইয়া, সেই কালকূটরূপিণী ধনিকন্যা বিৰাহ করিতে হইল । মনে কর, কেহ দারিদ্র্যপীড়িত, দৈবামুকম্পায় উত্তম পদস্থ হইয়া দূরদেশে যাইয়া, দারিদ্র্য মোচনের উদ্যোগ করিতেছে, এমন সময়ে মাতা, তাহাকে দূরদেশে রাখিতে পারবেন ন। বলিয়৷ কঁাদিয়া পড়িলেন, তাহাকে যাইতে দিলেন না, সে মাতৃ৫োমে বদ্ধ হইয়া নিরস্ত হইল,মাতার ভালবাসার অত্যাচারে সে আপনাকে চিরদারিদ্র্যে সমর্পণ করিল। কৃতী সহোদরের উপgর্জত অর্থ, অকৰ্ম্ম অপদার্থ সহোদর নষ্ট করে, এটা নিতাস্তুই ভালবাসার অত্যাচার, এবং হিন্দুসমাজে সৰ্ব্বদাই প্রত্যক্ষগোচর হইন্ধ থাকে। ভাৰ্য্যার ভালবাসার অভ্যাচারের কোন উদাহরণ, নববঙ্গবাসিদিগের কাছে প্রযুক্ত করা আবশ্যক কি ? আর স্বামীর অত্যাচার সম্বন্ধে, ধৰ্ম্মতঃ এটুকু বগা কৰ্ত্তব্য, যে
পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৫
অবয়ব