পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

OSR8 প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ সতরাং ভারতবর্ষের কোন প্রদেশের লোক যবক্ষবীপে গিয়ে বসতি করে, এ প্রশন তোমাদের মনে উদয় হওয়া নিতান্ত স্বাভাবিক। এ প্রশেনর উত্তর দিতে হলে প্রমাণের চেয়ে অনামানের উপর বেশি নিভাির করতে হয়; অর্থাৎ অন্ধকারে ঢিল মারতে হয়। ঐতিহাসিকরা সে ঢিলা দেদার মেরেছেন, কিন্তু তার একটাও যে ঠিক লোকের গায়ে গিয়ে পড়েছে, এমন কথা জোর করে বলা যায় না। তবে এটাকু ভরসা করে বলা যায় যে, তারা আর যে জােতই হোক, মাদ্রাজি নয়। যে উত্তরাপথের লোক দক্ষিণাপথকে সভ্য করেছে, খাব সম্পভবত তারাই ঐ দাবীপ - বাসীদেরও সভ্য করেছে। যবিদ্বীপে যে মহাভারতের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়, তা উত্তরাপথে যে মহাভারত প্রচলিত ছিল, তারই অন্যবাদ। কোথায় ভারতবর্ষের উত্তরাপথ। আর কোথায় মহাসাগর, সতরাং তাঁরা কোন বন্দর থেকে মহাসমাদ্রে অবতরণ করলেন ? খাব সম্পভবত তাঁরা মসলিপত্তনে গিয়ে জাহাজে চড়েছিলেন। আর গাজরাটের Broach নগর থেকে মসলিপত্তন পর্যন্ত ষে একটি স্থলপথ ছিল, তারও প্রমাণ আছে। সতরাং এরপ অনমান করা অসংগত নয় যে, আযাবতের আযরাই এই সভ্যতা-প্রচারকাযে ব্ৰতী হয়েছিলেন। মন বলেছেন যে, আযাদের আচারই একমাত্র সাধ আচার, অতএব তা শিক্ষেরন পথিব্যাং সবমানবাঃ' । এ কথার ভিতর মস্ত একটা গর্ব আছে, কিন্তু তার চেয়েও বেশি আছে উদারতা আর মহত্ত্ব। দক্ষিণাপথের তামিলরাও সমাত্রা জয় করতে গিয়েছিল, কিন্তু সে বহনকাল পরে- খসেন্টীয় দশম ও একাদশ শতাব্দীতে। তাদের উদ্দেশ্য কিন্তু ছিল শ্ৰীবিজয়রাজ্য বিজয় করে তাকে শ্ৰীভ্রন্ট করা। বলিদ্বীপের কথা বলতে গিয়ে যবন্দ্বীপের বিষয় দি কথা বললাম। এইজন্য যে, সেকালের যবন্ধিবীপের হিন্দধম একালে বলিদ্বীপে মাজত রয়েছে। রামায়ণের যাগে যবন্দ্বীপ। সপতরাজ্যে উপশোভিত ছিল; কিন্তু খসেন্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে সে দেশে তিনটি মাত্র রাজ্য ছিল। খসেন্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে যবদ্ধবীপের হিন্দরাজ্যের যখন ধবংস হয় ও সে দেশের লোকে মসলমানধম। অবলম্বন করে, তখন এক দল লোক সাবধম রক্ষা করবার জন্য ব্যবদ্বীপ থেকে পালিয়ে বলিদ্বীপে গিয়ে আশ্রয় গ্ৰহণ করে। এদেরই বংশধরেরা এখন বলির অধিবাসী। আর এই ক্ষদ্র দ্বীপবাসীরাই আজ পর্যন্ত তাদের স্বধম ও স্বরাজ্য দই রক্ষা করে আসছে। হিন্দ হলেই পরাধীন হতে হবে, বিধির যে এমন-কোনো নিয়ম নেই, তার তিলমাত্র প্রমাণ ঐ দেশেই আছে। বলিদ্বীপ সত্বাধীন, কিন্তু যে হিসাবে জাপান স্বাধীন সে হিসাবে নয়; যে হিসাবে নেপাল স্বাধীন সেই হিসাবে, এবং একই কারণে। হিন্দ স্থানের ইতিহাসের ধারা এই যে, সে দেশ প্রথমে মসলমানের অধীন হয়, ও পরে খাস্টানের। নেপাল ও বলি আগে মসলমানের অধীন হয় নি, কাজেই তা আজ খািসন্টানের অধীন হয় নি। বলিদাবীপ একরাত্তি দেশ হলেও কোনো একটি রাজার রাজ্য নয়, এই একশো মাইল লম্বা ও পঞ্চাশ মাইল চওড়া দেশ অশট রাজ্যে উপশোভিত। আর এই আটটি ভাগের আটটি পথক রাজা আছে। এর থেকেই বৰ্ব্বতে পারছি, এ দেশে যা আছে তা পরোমাত্রায় হিন্দ,রাজ্য। ভারতবর্ষ ও হিন্দযোগে হাজার পথক রাজ্যে বিভক্ত