পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ہ سSb পারিলাম না। সন্ন্যাসী ঠাকুর সেই মাটর ঘটট গঙ্গাজলে পূর্ণ করিয়া মন্ত্ৰোচ্চারণ পূর্বক পূজা করিতে লাগিলেন। যথাসময়ে পূজা শেষ হইয়া গেলে, সন্ন্যাসী ঠাকুর বলিলেন, “বাবাজি, মা'র পূজা শেষ হইল। এক্ষণে, কিঞ্চিৎ দক্ষিণ দিলেই তাহা সাঙ্গ হয়।” আমি দক্ষিণ আনয়নের জন্য উঠবার উদ্যোগ করিতেছিলাম ; কিন্তু তিনি বাধা দিয়া বলিলেন, “উঠিবার প্রয়োজন নাই ; তোমার সঙ্গে যাহা আছে, তাহাই দাও।” আমি পকেটে হাত দিয়া দেখিলাম, তন্মধ্যে একটা আধুলি রহিয়াছে। এই আধুলিটি পূৰ্ব্ব হইতেই পকেটে ছিল। সুতরাং তাহাই দক্ষিণাস্বরূপ দিয়া প্রণাম করিলাম । পূজার পর বালকবালিকাগণের মধ্যে ফলের প্রসাদ বিতরিত হইল। আমরাও প্রসাদ খাইলাম। বালক বালিকার আস্ত কলার ছড়াটি ও শসাটি লইয়া গেল। সন্ন্যাসী ঠাকুর নৈবেপ্তের চাউলগুলি সযত্নে রক্ষা করিতে উপদেশ দিলেন অথবা গঙ্গাজলে নিক্ষেপ করিতে বলিলেন। আমার সহধৰ্ম্মিণীকে সম্বোধন কমিয়া তিনি বললেন, “তুমি এই বটটি গঙ্গাজলে পূর্ণ করিয়া সৰ্ব্বদা সযত্নে রক্ষা করিবে এবং প্রত্যহ স্নানান্তে ইহাতে সিন্দুর লেপন করিবে।” আমার স্ত্রী তাহাই করিতেন। ঘটট এখনও আমার কাছে আছে। কেহ দেখিতে চাহিলে, আমি তাহা দেখাইতে পারি। যাইবার সময় সন্ন্যাসী ঠাকুর আমাদের রেশমী বস্ত্রখানি পরিত্যাগ করিয়া আপনার চেলী পরিধান করিলেন এবং ত্ৰিশূল ও কমণ্ডলু এবং পূৰ্ব্বোক্ত কোশা, কুশী, শঙ্খ ও ঘণ্টা—এই দ্রব্যগুলি লইয়া প্রস্থান করিলেন । আমি এবং আমার পিতাঠাকুর মহাশয়, ভ্রাতুপুত্রগণ ও পরিবারবর্গ সকলে যাহা প্রত্যক্ষ করিয়াছিলাম, তাহাই এস্থলে লিপিবদ্ধ করিলাম। সন্ন্যাসী ঠাকুর ত্ৰিশূল ও কমণ্ডলু ব্যতীত আর কোনও দ্রব্যই সঙ্গে করিয়া আনেন নাই। তিনি আমাদের সাক্ষাতেই বস্ত্র পরিবর্তন করিয়াছিলেন ; আমি স্বহস্তে তাহাকে আলোয়ানগুলি দিয়াছিলাম ; তাহার গাত্রে উত্তরীয় বা অন্য কোনও বস্ত্র ছিল না। আর এতগুলি দ্রব্য—অর্থাৎ একফুট উচ্চ একটা মৃগয় ঘট, শঙ্খ, ঘণ্টা, কোশ, কুশী, একরাশি পুষ্প ও প্রবাসী।


বিল্বপত্র, প্রায় অৰ্দ্ধসের পরিমিত চাউলের মুসজ্জিত so, -- কর্তিত ফলাদি, আস্ত একছড়া কলা, আস্ত একটা ।

[ ৮ম ভাগ। এবং দুইটা বড় কলাপাতা—নগ্নদেহের মধ্যে কোং লুকাইয়া রাখা একেবারে অসম্ভব বলিয়াই মনে ম৷ তৎপরে, নৈবেদ্যটি সুসজ্জিত হইল কিরূপে ? এবং কলা পাতার মধ্যেও কোথাও মুড়িয়া যাওয়ার চিহ্নমাত্র ছিলন কেন ? বলা বাহুল্য যে, সন্ন্যাসীর পূজা দেখিয়া আমরা সকলে বিস্মিত হইয়াছিলাম। কিন্তু প্রকৃত কথা বলতে গেলে আমি তাদৃশ বিস্মিত হই নাই। এই ঘটনার ইঞ্জি বৎসর পূৰ্ব্বে আমি একট পঞ্জাবী মুসলমানকে এইরূপ একটা অদ্ভূত ব্যাপার সম্পাদন করিতে দেখিয়াছিলাম। সেই মুসলমানটি দিনের বেলায়, দ্বিতলের ছাদে, গ্রা ত্ৰিশ জন মুশিক্ষিত ব্যক্তির সম্মুখে একটা উষ্ঠানের স্বী করিয়াছিলেন। সেই উদ্যানে পেস্তার গাছ, ফল ও ফুল বাদামের গাছ, ফল ও ফুল, আতার গাছ, ফল ও ফুল বাতাপি নেবুর গাছ, ফল ও ফুল, পেয়ারার গাছ, ফল । ফুল, এবং অন্যান্ত ক’একটা ফলের গাছ এবং ফল ও ফুল সমস্তই অৰ্দ্ধ ঘণ্টার মধ্যে সৃষ্টি করিয়াছিলেন। তিনি সেই ফলগুলি তুলিয়া আমাদিগকে খাওয়াইয়াছিলেন । এবং আমি কতিপয় কষ্ঠিত ফল গৃহেও লইয়া আসি৷ আমার টেবিলের উপর রাখিয়াছিলাম। সেগুলি বহুদিন সেখানে ছিল। পরে শুকাইয়া গেলে, ভূত্যেরা তৎসমুদা ফেলিয়া দেয়। এই মুসলমানের কার্য্যের মধ্যে আরও কিছু অদ্ভুত ছিল। তাঁহার স্বল্প বৃক্ষগুলি প্রায় তিন চারি হান্ত উচ্চ হইয়াছিল এবং ফলফুলে সুশোভিত ছিল। কিন্তু বস্ত্রাচ্ছাদনের মধ্যে সহসা সেইগুলি অদৃশু হইয়া যায়। কেবল বৃক্ষ হইতে উত্তোলিত ও কম্ভিত ফলগুলি ও ভগ্ন শাখাগুলিই আমাদের সম্মুখে পড়িয়াছিল। এস্থলে ইহাও বলা আবশ্বক মনে করি, যে পূৰ্ব্বোক্ত মুসলমানটি যেখানে পেস্তার গাছ স্বষ্টি করিয়াছিলেন, সেখান হইতে বোধ হয় চারিশত ক্রোশের মধ্যে কোথাও পেস্তার গাছ ছিল না। পূৰ্ব্বে এইরূপ একটী অস্তুত ব্যাপার দেখিয়াছিলাম । বলিয়া, সন্ন্যাসী ঠাকুরের এই কাৰ্য্যে আমার তাশ বিদ হয় নাই। আমার মনে হইয়াছিল, মানুষের মধ্যে প্রচ্ছন্ন }র্থ সংখ্যা । ] - ੋਂ শক্তি আছে, যাহা বিকশিত হইলে, সে কালেই এইরূপ অদ্ভূত ব্যাপারের স্বষ্টি করিতে পারে। দেশক্তি যে কি, অবশু আমি তাহ জানি না। স্বধীবর্গ ইংগম্বন্ধে কোন রহস্তের বিবৃতি করিলে, আমরা আনন্দিত ऍत। এস্থলে, ইহা বলা আবশ্বক মনে করি যে, সন্ন্যাসী ঠাকুর দেন পূজা করেন, তৎপর দিন, আমি কোনও কাৰ্য্য বশতঃ "ণ্ডিয়ান মিরার”-সম্পাদক শ্রদ্ধাস্পদ ঐযুক্ত নরেন্দ্রনাথ সেন মহাশয়ের সহিত সাক্ষাৎ করিতে যাই এবং কথাপ্রসঙ্গে #াকে পূৰ্ব্বোক্ত পূজার কথা বলি। তিনিও সেই বৃত্তান্ত স্বাগত হইয়া বিস্ময় প্রকাশ করেন। পরে তিনিও একদিন ষ্টে সন্ন্যাসী ঠাকুরের দ্বারা তাহার বাটতে পূজা করাইয়া- , ছিলেন। আমি তাহার মুখে শুনিয়াছি যে, আমার বাসায় পে তাহার বাটতেও তদ্রুপ পূজার সমস্ত দ্রব্যই স্বতঃই আসিয়া উপস্থিত হইয়াছিল। আমার জনৈক বন্ধুও• সন্ন্যাসী fাকুরের দ্বারা তাহার বাড়ীতে আর একদিন পূজা করাইয়াছিলেন। সেখানেও পূজার সমস্ত দ্রব্য স্বতঃই আসিয়াছিল; অধিকন্তু পত্রপল্লবসমন্বিত বিশ্ববৃক্ষের একটী ক্ষুদ্র শাখাও উপস্থিত হইয়াছিল। এই পূজার পর, সন্ন্যাসী ঠাকুরের সহিত আমার ক'একবার সাক্ষাৎ হয়। আমি তাহাকে নানারূপ প্রশ্ন করিয়াও তাহার এই শক্তি সম্বন্ধে কিছুই অবগত হইতে দার্থ হই নাই। তিনি এইমাত্র বলিয়াছিলেন যে, মানুষের শক্তি দ্বারাই সমস্ত ব্যাপার সংঘটিত হয়। সন্ন্যাসীর কথা দি সত্য হয়, তাহা হইলে প্রশ্ন এই যে, মানুষের সেই শক্তিটি কি ? শ্ৰীঅবিনাশচন্দ্র দাস । হাতে হাতে ফল । প্রথম পরিচ্ছেদ । সন্ধ্য হইয়াছে। সিরাজপুর ষ্টেশনের টেলিগ্রাফ আফিসে সিং, ডাক্তার হরগোবিন্দ চট্টোপাধ্যায় মহাশয়, সিগনালার বাবুকে বলিতেছিলেন—“তা, কিছু ভয় নেই। আমার জর্জ আশুতোষ নাগ, ১১নং মীরজাফস লেন, কলিকাতা। হাতে হাতে ফল । >b"> সঙ্গে একজন লোক দিন, একটা পাউডার অার একটা মিক্‌শ্চার এখনি পাঠিয়ে দিচ্ছি, দুঘণ্ট। অন্তর খাওয়ান ।” সিগনালার বাবু বলিতেছিলেন—“আপনার কথা শুনে বড় আশ্বস্ত হ’লাম। ঐ একটি মাত্র ছেলে কিনা, আমার স্ত্রী ত কেঁদে কেটে অস্থির হয়েছিলেন। আমাদের বড়ই ভয় হয়েছিল।” এই বলিয়া সিগনালার বাবু দুইটি টাকা ভিজিট এবং একটি আধুলি গাড়ীভাড়া ডাক্তার বাবুর হাতে দিতে চাহিলেন । ডাক্তার বাবু বলিলেন—“ও কি ও ? না-না-রাখুন, রাখুন।” সিগনালার বাবু বলিলেন—“তা হলে যে বড়ই অন্তায় ब्ट्झ !" “না—না। কিছু অষ্ঠায় হয় না। আপনার ছেলেটিকে ॰३ि अविका करत्र क्ङेि-डाङ्गश्रव न श्व 4कनि-श्मीবতে কি পূর্ণিমে দেখে, আমায় নেমতর করে ব্রাহ্মণভোজন করিয়ে দেবেন,– তার মার কি ?”—বলিয়া ডাক্তার বাবু esহত করিতে লাগিলেন । গরীব লোকের কাছে ইনি কখনও ভিজিট গ্রহণ করেন না । এই সময়, বাহিরে প্লাটফৰ্ম্মে, অনেক লোকের কণ্ঠে বন্দেমাতরম ধ্বনি শুনা গেল। ডাক্তার বাবু বলিলেন— “ও কি ?” --- “কলকাতা থেকে একজন স্বদেশী প্রচারক এসেছিলেন, প্তাকেই বোধ হয় লোকে গাড়ীতে তুলে দিতে এসেছে।” উভয়েই বাহিরে গেলেন। প্রচারক মহাশয় বিখ্যাত “বীরভারত" সংবাদপত্রের সম্পাদক শ্ৰীযুক্ত বিনয়কৃষ্ণ সেন। ডাক্তার বাবু সরকারী চাকর হইলেও অন্তান্ত সরকারী চাকরের ষ্ঠায় মনে মনে পূর্ণমাত্রায় স্বদেশী। রাত্ৰিযোগে দেশী দোকানে গিয়া বস্ত্রাদি খরিদ করিয়া আনেন, লোকে এ প্রকার কাণাঘুষা করিয়া থাকে। বিনয় বাবুর সঙ্গে আলাপ করিবার প্রলোভন তিনি সম্বরণ করিতে পারিলেন না। দুই চারি মিনিট কথাবার্তা কহিতে কহিতে, ভীমরবে টেনও আসিয়া পড়িল । - উকীল, মোক্তার এবং ছাত্রগণ পরিবৃত হইয়া প্রচারক মহাশয় গাড়ীর দিকে অগ্রসর হইলেন। তাহার নিকট