পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক বিবিধ প্রসঙ্গ—হিন্দু নেতৃদ্বয়ের বঙ্গে ভ্রমণ

  • מצ

হিতৈষণার যথেষ্ট বিকাশ হয় নাই। অন্যত্র হিন্দুর সাম্প্রদায়িক প্রভূত্বের কোন কুফল দেথা যায় নাই এই জন্য যে, হিন্দু কংগ্রেস-নেতাদের মধ্যে যথেষ্ট অসাম্প্রদায়িক সাৰ্বজনিক হিতৈষণার বিকাশ হইয়াছে। তাহ না-হইলে কংগ্রেস-শাসিত প্রদেশগুলিরও অনিষ্ট হইতে পারিত। আরও একটি কারণ আছে। তাহ বলিব না। বঙ্গের আইসোলেশ্বনের জুজু এইরূপ একটা মত মধ্যে মধ্যে শুনা যায়—বিশেষ করিয়া অবাঙালী কংগ্রেস-নেতাদের প্রমুখাং, যে, বাংলা দেশ যদি ভারতবর্ষের বাকী অংশের মতে সায় ন-দিয়া নিজের মত অঁাকড়িয়া ধরিয়া থাকে, তাহা হইলে সে আইসোলেটেড় অর্থাৎ ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয় পড়িবে। এই বিচ্ছিন্নতা-জুজুর ভয় আমরা করি না । ব্রিটিশ পালেমেণ্টের মতন কংগ্রেসও ত বাংলা দেশকে বিচ্ছিন্ন করিয়াইছেন । যখন মন্ত্রিত্ব গ্রহণ বা অ-গ্রহণের বিষয় আলোচিত হইতেছিল, তখন আমরা এই মমের কথা বলিয়াছিলাম, “কংগ্রেসের বলা উচিত, সমুদয় প্রদেশে প্রাদেশিক আত্মকর্তৃত্ব বা আংশিক স্বরাজের প্ৰ -ক্তি ও পরিমাণ সমান না-হইলে, সব প্রদেশে ( বঙ্গেও ) ংগ্রেসী মন্ত্রিদল গঠন সমান সম্ভব না হইলে, কংগ্রেস xfo = *facz al ; “Every one for himself and the Devil take the hindmost’, ‘ososo নিজের সুবিধা দেখিবে এবং যে সকলের পিছনে পড়িয়া যাইবে সে শয়তানের দ্বারা কবলিত হউক, কংগ্রেস এই নীতি অনু ,রণ করে না।” এইরূপ কথা বলিলে এবং ত পশুসারে চলিলে এখন কংগ্রেস অধিকতর শক্তিশালী হুইত, সম্ভবতঃ সকল প্রদেশেষ্ট কংগ্রেসী শাসন প্রবর্তিত হঠত, এবং সমগ্র ভারত পূর্ণ স্বরাজের নিকটতর হইত। কিন্তু কংগ্রেস বঙ্গের ( ও পঞ্জাবের ) মুখের দিকে তাকাইলেন না। ব্রিটিশ পালেমেণ্ট বঙ্গের যে শাস্তি মধুর করিয়াছিলেন, কংগ্রেসও তাহাতে সায় দিয়াছেন। সমগ্র-ভারতের কংগ্রেস যদি মনে করেন যে, বাংলা দেশকে র্তাহারা একঘর্যে ও বিচ্ছিন্ন করিয়া দেন নাই এবং বাংলা দেশ এখনও ভারতবর্ষের অবশিষ্ট বৃহত্তর ংশের সহিত এক রাজনৈতিক পরিবারভুক্ত আছে, তাহা হইলে জিজ্ঞাস্য এই, বঙ্গের জন্য কংগ্রেস কি করিয়াছেন, বঙ্গের কোন অভিযোগে তাহারা মন দিয়া তাহা দূর করিয়াছেন বা করিবার আন্তরিক চেষ্ট করিয়াছেন। গান্ধীজী রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির জন্য খুব চেষ্টা করিয়াছেন। কিন্তু, বাস, ঐখানেই শেষ । সুতরাং বাংলা দেশ অবিচ্ছিন্ন থাকিয়া কংগ্রেসের কৃপা যতটুকু পাইয়াছে, বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তাহ হইতে বঞ্চিত হইলে খুব বেশী বঞ্চিত হইবে না। তাই বলিতেছিলাম, বিচ্ছিন্নতা-জুজুর ভয় করি না। অবশ্য বিচ্ছিন্নতা যে প্রার্থনীয় মনে করি, তাহা ও নহে । সমগ্র ভারতের প্রকৃত সংহতি চাই । কেহ বাংলা দেশকে দয়া করিয়া নিজেদের দলে রাখিবেন, ইহাও চাই না। রূপা যে মামুষেরই হউক, রূপা অসহ ও ও অবাঞ্ছনীয়। কেবলমাত্র আস্তরিক ভ্রাতৃত্বই মূল্যবান ও আদরণীয় । আমাদের যেমন বুঝা আবশ্বক যে, আমরা ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশের সাহচর্য্যনিরপেক্ষভাবে স্বাধীন হইতে ও থাকিতে পারি না, সেইরূপ তাহাদেরও বুঝা উচিত যে বাংলাকে বাদ দিয়া তাহারা স্বাধীন হইতে ও থাকিতে পারেন না । হিন্দু নেতৃদ্বয়ের বঙ্গে ভ্রমণ ঐযুক্ত খামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও শ্ৰীযুক্ত নিৰ্ম্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হিন্দু-সংহতি আন্দোলন সম্পর্কে সম্প্রতি যে উত্তর-বঙ্গ ও পূৰ্ব্ব-বঙ্গের নানা স্থান পরিদর্শন করিয়াছেন এবং সৰ্ব্বত্র স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের ও নেতাদের সহিত আলোচনা করিয়া তথাকার মত ও সমস্ত বুঝিতে চেষ্টা করিয়াছেন, তাহা হইতে অনেক স্বফলের আশা করা যায়। র্তাহারা ঐ সকল স্থানে বহু সভায় বক্তৃতা করিয়াছেন এবং এক লক্ষেরও অধিকসংখ্যক লোক ঐ সকল সভায় যোগদান করিয়াছিল। প্রত্যক্ষদশীর মুখে শুনিয়াছি, সৰ্ব্বত্র হিন্দুদের মধ্যে অসাধারণ উৎসাহ ও আগ্রহ তাহারা দেখিয়াছেন। উত্তর ও পূর্ব বঙ্গে ব্যাপক ভ্রমণের