পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨ হইতে নামিতেছে তখন বারান্দার অন্ধকার কোণ হইতে একটি দীর্ঘাকৃতি লোক ধীরে ধীরে আগাইয়া আসিয়া খুব ঝুঁকিয় তাহাকে প্ৰণাম করিল। পরিধানে সামান্য একটি কেীপীন, মাথায় রুক্ষ চুল, লোলচ' মুখে এক মুখ খোচা খোচা দাড়ি। খুব লম্বা ও খুব রোগ। চক্ষু দুইটি কোটরগত। অন্ধকারে হঠাৎ দেখিলে ভয় হয়। —আমার অস্থখ করেছে বাৰু, আমার ভবৃতি ক’রে লেন । অতি কাতর দৃষ্টি মেলিয়া সে বিমলের দিকে চাহিল। —কি হয়েছে তোমার ! —জর হয়, বাবু রোজ । —সকালে আস নি কেন । আচ্ছা এস দেখি । বিমল ভিতরে লইয়া গিয়া পরীক্ষা করিয়া দেখিল । কালরোগে ধরিয়াছে—যক্ষা । ইহাকে হাসপাতালে ভরতি কমিয়া কি হইবে! ভবৃতি করা অহচিতও, অষ্টান্ত রোগীদের অনিষ্ট হইতে পারে । তাহাকে সে কথা বলিতে সে হাউ হাউ করিয়া কাদিয়া উঠিল। বলিল, সে হাসপাতালের বিছানায় শুষ্টতে চায় না, সে ঐ গাছতলাটায় শুইয়া থাকিবে, তাহাকে যেন দুই বেলা ছুটি দুটি খাইতে দেওয়া হয়, আর একটু ওষুধ । —খেতে পাই না বাৰু, খেতে পাই না, খিদের জালায় মরে গেলাম – অভিভূত বিমল কি বলিবে ভাবিয়া পাইল না। লোকটা না ধরিয়া কিছুতে ছাড়ে না। নিরুপায় বিমলবে শেষে ঐ ব্যবস্থাই করিতে হইল। আর কিছু না ঙ্গেক লোকটা দুই বেলা থাইতে পাইবে তো । কিন্তু কত দিন ধরিয়া সে এমন ভাবে তাহাকে রাখিতে পারিবে, তাছাড়া কয় জনকেই বা সে এমন ভাবে আশ্রয় দিতে পারে । দেশমৃদ্ধ সকলেই যে প্রায় ঐ রকম ---রাস্তায় চলিতে চলিতে বিমল ভাবিতে লাগিল যক্ষারোগের শাস্ত্রসঙ্গত যে-সব বিধান আছে স্তানাটোরিয়ম, ভাল খাবার, স্বাস্থ্যকর স্থান—আমাদের দেশের কয়টা যক্ষ্মারোগী তদমুযায়ী চলিতে পারে। যে হতভাগা-দেশের অধিকাংশ লোক ক্ষুধার জালায় ছটফট করিতেছে সেখানে— –বিমল না কি ? টচ প্রদীপ্ত করিয়া পরেশ-দা জাগাইয়া আসিলেন । וכן | ثہ o & —তোমাকেই খুজে বেড়াচ্ছি। —কেন বলুন তো ? —নদী মশাযের ওখানে গেছলাম, তিনি বললেন যে, তোমাকে দিয়ে ইলেকটি সিটির উপকারিতা সম্বন্ধে একটা ছোট প্রবন্ধ লিখিয়ে তাকে দিয়ে আসতে । —ইলেকটি সিটির সম্বন্ধে ছোট প্রবন্ধ! কেন ? —উনি বলছেন মিউনিসিপাল মিটিঙে যদি পাস হয় ওঁর প্রস্তাবটা, তাহলে ওঁরা গবর্ণমেণ্টের কাছ থেকে টাকা ধার চাইবেন। —-কিসের জন্যে ? —যাতে মিউনিসিপালিটিতে ইলেকটি সিটি হয়। গবর্ণমেণ্ট কিছু টাকা যদি দেয় ওঁরাও সকলে কিছু কিছু দেবেন ! —ধে-দেশের লোকে খেতে পাচ্ছে না, হাসপাতালে ওষুধ নেই, সেখানে ইলেকটি সিটি নিয়ে কি হবে ? হাসপাতালের ওযুধের বেলায় টাকা নেই অথচ— —আহা, বড়লোকের খেয়াল তুমি বোঝ না। বিমল কিছু বলিল না, নীরবে পথ চলিতে লাগিল । পরেশ-দাও অকারণে টর্চটা মাঝে মাঝে জালিয়া এদিকেওদিকে আলো ফেলিতে লাগিলেন, তার কিছু বলিলেন না । বিমল বলিল—প্রবন্ধ নিয়ে কি হবে ? —নন্দী মশায় বক্তৃতা করবেন। —কোথায় ? —মিউনিসিপাল মিটিঙে ! বুঝছ না, মিউনিসিপাল বোর্ডে পাস না হলে তো গবর্ণমেণ্টের কাছে দরখাস্ত, করা যাবে না। ননী মশায় তোমার প্রবন্ধটা নিয়ে বোর্ডের মেম্বারদের ইলেকটি সিটির উপকারিতাটা বোঝাতে চান। একটু থামিয়া পরেশ-দা হাসিয়া বলিলেন—ভব কিন্তু ভোলবার নয়। মথুরবাবুর দলকে কায়দা করা শক্ত। —মথুরবাবু কি ইলেকটি সিটির বিরোধী ? —ইলেকটি সিটির বিরোধী ঠিক নন, নন্দী মশায়ের বিরোধী। নন্দী মশায় ষা করবেন মথুরবাবু এবং তার দল ঠিক তার উন্টোটি করবেন। —মথুরবাবু মানে অমরের বাবা তো ?