পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- షీ$త o ভদ্রলোক ঐ গাড়ীতেই পাটনায় নামিয়াছিলেন। কিছু কৌতুহলাক্রান্ত হইয়া এবং কিছু বা আমার প্রতি আকৃষ্ট হইয়া তিনি আমাদের সঙ্গে সঙ্গে আসিয়াছিলেন টি. টি. আই. এ-র ঘরে । তাহারই সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধে বোধ হয় উহারা আমাকে রেহাই দিল। ভদ্রলোক তখন বাড়ী চলিলেন আমাকে সঙ্গে লইয়া। বিদেশে একটি ৰাঙালীর ছেলে, যে কারণেই হউক, বিপদে পড়িয়াছে ইহা বোধ হয় তাহার মনে লাগিয়াছিল। ভদ্রলোক আগ্রহের সহিত আমার পরিচয় লইতে লাগিলেন। নিজের নাম বলিলাম, কিন্তু পিতার নাম বা ञांद्र কিছু বলিলাম না । এই বোধ করি জীবনে প্রথম— আমার পৈত্রিক বংশমর্য্যাদাবোধে বাধিল । যাহা হউক, গন্তব্য স্থানের অভাবে কিংবা হাতে একটি কানাকড়িও ছিল না বলিয়া বিনা বাক্যব্যয়ে তাহার বাড়ী গিয়া অতিথি হইলাম । ভদ্রলোক অবস্থাপন্ন । বাড়ীটি তাহার স্বোপার্জিত এবং নিতান্ত ছোটও নয় । রহিয়া গেলাম-কিন্তু কেমন করিয়া তাহাই বলি। দু-এক দিন থাকিবার পর পরের ঘাড়ে অকারণে বসিয়া বসিয়া খাইতে আমার কেমন যেন অস্বস্তি বোধ হইতে লাগিল । গিয়া বিদায় চাহিলাম । অতুকুলবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন—কোথায় যাবে ? না ভাবিয়াই বলিলাম—কাশী । —বাড়ী যাবে না ? —না । অহুকুলবাবু খানিকক্ষণ আমার মুখের দিকে চুপ করিয়া চাহিয়া রহিলেন । কি বুঝিলেন জানি না। তার পর হঠাৎ বলিলেন–পড়বে ? প্রশ্নটা আমার মাথায় ঠিক প্রবেশ করে নাই। আমি জিজ্ঞাস্ব দৃষ্টিতে তাহার মুখের দিকে চাহিলাম। তিনি শাস্তস্বরে বলিলেন—ষদি পড়াশুনা কর তবে তার বন্দোবস্ত করে দিতে পারি। আমার এখানে থেকেই পড়তে পার ; কোন অস্ববিধা হবে না। আবার আমার মর্য্যাদায় বাধিল । বয়সোচিত নিৰ্ব্বোধের মতই বলিলাম—আপনার গলগ্রহ হয়ে থাকব স্না। আমার ত টাকা নেই। প্রবাসী ' . See సీ ভদ্রলোক এবার হাসিয়া ফেলিলেন। তারপর গম্ভীর হইয়া প্রসন্ন কণ্ঠে বলিলেন—না, গলগ্রহ নয়। তুমি খোকাকে পড়াবে আর আমি তোমাকে পড়াব। কোন ক্লাসে পড় ? আমি একটু গৰ্ব্বপূর্ণ বিনয়ের স্বরেই বলিলাম— এণ্টাস। —বটে ! বেশ। কাল থেকেই লেগে যাও। খাওয়া-দাওয়ার পর আজই আমার সঙ্গে এস-বইটই সব ঠিক ক’রে কিনে দেব। ওয়ার্ড-মেকিং খেলতে জান ? —জানি । —কাল দু-বাকস নতুন কিনে দিয়েছি ; যাও খোকাকে নিয়ে একটু খেলা কর গিয়ে। ব্যস, রহিয়া গেলাম। কাৰ্য্যবিনিময়ের নিঃসঙ্কোচ ব্যবহারেই কখন এক সময় নিঃসংশয় হৃদয়ের সম্পর্ক গড়িয়া উঠিল । তার পর চার বৎসর তাহার বাড়ীতে রহিয়াছি। নিজের সন্তানকে যেমন করিয়া মাহুষ করে অমুকুলবাবু ও তাহার পত্নীর নিকট সেই অপত্যস্নেহ লাভ করিয়া ধন্য হইয়াছি । অনাবিল বাহুল্যবর্জিত স্নেহস্পর্শে মানুষের জীবনকে কেমন করিয়া পরিবর্তিত করিয়া দেয় তাহা আমি যেমন করিয়া জানিয়াছি তেমন করিয়া জানিবার সৌভাগ্য কয় জনের হইয়াছে জানি না । মন দিয়াই পড়াশুনা করিতেছিলাম। এমন সময় ঘাড়ে ভূত চাপিল। এফ. এ. পাস করিয়া বি. এ. ক্লাসে পড়িতেছিলাম । এমন সময় একটি ছেলে আমাদের কলেজে আসিয়া ভৰ্ত্তি হইল। ছেলেটি বয়সে আমার অপেক্ষ ছয়-সাত বৎসরের বড় এবং চালচলনে বয়সের অপেক্ষাও মুরুব্বি ধরণের। পড়ায় ও খেলায় দুইটাতেই ভাল ছিলাম বলিয়া প্রফেসর ও ছাত্র দুই দলই আমাকে একটু বিশেষ খাতির করিতেন। দীনেশের সঙ্গে ভাব হইল কিন্তু অন্য ব্যাপারে। কলেজে প্রতি বৎসর পূজার ছুটির পূৰ্ব্বে ছাত্রেরা অভিনয় করিত। দীনেশ এই সব ব্যাপারে আশ্চর্ষ্য রকমের ওয়াকিফ-হাল ছিল। দানীবাবু হইতে স্বরু করিয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পর্য্যস্ত সকলেরই অভিনয়ের বিশেষত্ব তাহার নধাগ্রে ছিল। স্বধু তাহাই নহে। ষ্টার, মিনার্তা,