পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩০ প্রবাসী ェ >N38や কানা গোরুর, তখন প্রাক্লতের মধ্যে বহু আরবী ও পারসী િ 秀 হানা বেশী । দিতে পা ংমিশ্রণ ঘটিয়াছে এবং বাংলা সাহিত্যের পরিপাকঅথ-কানা গোরুই খুব জোরে আঘাত দিতে পারে । é y ੇ ১ মাঝে যন্ত্রে ঐগুলি ক্রমে ক্রমে হজম হইয়া গিয়াছে। ‘জায়গা', চিলর ২ বাস । ‘জমি’, ‘হিসাব, তহবীল, এবং দাবী’ ‘দাওয়া, প্রভৃতি অর্থ–ধুধু মাঠের গাছে চিলগুলি বাসা নিৰ্ম্মাণ করে। শব্দ ভাষান্তরিত হইলে আমাদের মুখে কোনদিনই রুচিকর ফেরৎ ১ পড়ে— হইবে না। থেরৎ ২ বাজি ৩ - - অর্থ-সামান্য তৃণে বদ্ধ হইয়া ও মানুষ ফেরে পতিত হয় । দলিল-দস্তাবেজের ভাষায় বহু আরবী এবং পারসী মরমে ১ পতির ২ শব্দের অধিকার একেবারে কায়েম হইয়া গিয়াছে। বাঙালী ভরমে ৩ বাষ্ট্ৰী । আর ইহাদিগকে উচ্ছেদ করিবার নজির তৈয়ার করিতে অর্থ-জলাংশে পুকুরের পরিচয় এবং ইজ্জতেই বাড়ীর পরিচয় পাওয়া যায় | এ-সব প্রবাদ-প্রবচনের মধ্যেই পল্লীসাহিত্যের প্রাণের পরিচয় আছে। আমাদের গৃহিণীর এক সময় এগুলির নজির তুলিয়া গৃহকোণের বধুকে উপদেশ দিতেন এবং শাসন করিতেন । কারণ তখন দেশে অন্য কোনরূপ স্ত্রীশিক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। এখনও হাটে, মাঠে এবং ঘাটে কথায় কথায় এ-সকল প্রবচনের উল্লেখ দেখা যায় । অল্পস্বারএবং বিসর্গ-বিহীন সংস্কৃত প্রবচনগুলি বর্তমান বাংলা অভিধানে স্থান লাভ করিয়াছেমাত্র। এ-দেশের খাটি প্রবাদ-প্রবচনগুলি সম্পূর্ণ রকমে এ যাবৎ সংগৃহীত হয় नांठे । চাষীর গান ছাড়া এদেশের অভ্যন্তরে আরও অনেক রকমের পল্লীগাথা আছে। অনেকে ‘গম্ভীরা’র গান ‘ঘাট’ গানের কথা শুনিয়াছেন। ‘গাজি’ ‘জারি’, হকিয়উী’ ‘মারফতী’, ‘মাইজভাণ্ডারী’ ‘বৈঠথারী, "ওলা', 'ফুলপাঠ’, ‘বারমাসী এবং ডেব প্রভৃতি বহুজাতীয় গান এখনও বাংলার পল্লী-অঞ্চল মুখরিত করিয়া রাখিয়াছে। এ-সব পল্লীগীতিকার স্বলভ সংস্করণ প্রকাশিত হওয়া আবশুক । প্রাচীন মুসলমানী পুথি এবং কেচ্ছা-সাহিত্য আমাদের ভাষার বিরূপ ছিল না বরং বাংলা সাহিত্যের স্বভাবধৰ্ম্মের সহিত এগুলির তখন ঐক্য ছিল। আলাওল এবং দৌলতকাজির রচনায় তাহার যথেষ্ট আভাস পাওয়া যায়। পণ্ডিতী বাংলা এবং মুসলমানী বাংলা উভয়েই প্রাকৃতের দরবারে আগম্বুক । বহুকাল মুসলমানেরা এদেশে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন । বিলর = সুবিস্তৃত মাঠের । ২ fচলর = চিলের । S ১ ফেরৎ = ফেরে । ২ থেরং - গুণে ৩ বাজি r বাজিয়! ১ মরমে - পুকুরের জলাংশে । ১ পঙ্গির - পুষ্করিণী 'ు ভরমে = ইজ্জতে । পারিবে না। বাংলার ভূমিতে দৃঢ়ভাবে ঐগুলির শিকড় প্রবেশ করিয়াছে । দেশে ঘোরতর সাম্প্রদায়িক ঝড় উত্থিত হইলেও ঐগুলি উৎপাটিত হইয়ু পড়িবে না। অনেকেই বলিতে চাহেন যে ঈস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর আমলেই বাংলায় গদ্যসাহিত্যের গোড়াপত্তন হইয়াছিল ; কিন্তু দলিল-দস্তাবেজের ভাষা ইহারও পূৰ্ব্ব-অধ্যায়ের সূচনা করে । ঈস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী এ-দেশে আসিবার পূৰ্ব্বে আমরা যে কেবল গান গাহিয়া মনের ভাব প্রকাশ করিতাম এমন নহে ; তখনও আমাদিগকে কাজের কথা বলিতে হইত এবং চিঠিপত্র ও দলিল-দস্তাবেজ গদ্যে লিখিতে হইত। তখনও আমাদের পূর্বপুরুষের জায়গাজমি ছিল এবং সেগুলিতে তাতাদের স্বত্ব-স্বামিত্ব ছিল । জমিদার প্রজার মধ্যে তখনও বাংলা ভাষায় লিখিত চুক্তিপত্রাদি সম্পাদিত হইত। মোগল আমলের ভূইয়া উপাধিধারী শাসকবর্গের দপ্তরখানায় বাংলা ভাষায় লিখিত দলিল-দস্তাবেজ ছিল । আমরা ইশা খা দেওয়ানের নামাঙ্কিত কামানেও বঙ্গভাষার ছাপ পাইতেছি । গদ্য সাহিত্য স্বষ্টির ঐতিহাসিক দিকে গবেষণা করিতে হক্টলে দলিল-দস্তাবেজের ভাষার উপর নজর দিতে হইবে । বাংলার অধিকাংশ ভূস্বামীর ঘরে এ-জাতীয় দলিলপত্র সংরক্ষিত হইয়াছে। আমাদের আধুনিক সাহিত্যের শিরা-উপশিরা বঙ্গভূমির সর্বাঙ্গে সঞ্চারিত হইতে পারে নাই । শিল্পী ও কৃষকেরাই দেশের প্রকৃত অধিবাসী এবং ইহারাষ্ট গণসমাজের যথার্থ হস্তপদস্বরূপ। বাংলা সাহিত্যের হৃৎপিণ্ডের সহিত এই হস্তপদের যোগস্থত্র কোথায় ? দেশের এ প্রাস্তের সহিত ঐ প্রাস্তের, হিন্দু সম্প্রদায়ের সহিত মুসলমান সম্প্রদায়ের, শহরবাসীর সহিত গ্রামবাসীর ভাববিচ্ছেদ উপস্থিত হইয়াছে, ঠকাঠ বাংলা সাহিত্যের একটি প্রধান সমস্যা ।