পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\e 88 তাহারা নিজেদের জীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষা স্পষ্টভাবে বুঝিতে পারে এবং পরম্পরকে সখারূপে গ্রহণ করিতে পারে। অল্প বয়সে বিবাহ হইলে এইরূপ মন্ত্র কিছুতেই উচ্চারিত হইত না। পরের ছত্রে ইহা অারও স্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে তাৰেহি সংভবাব সহরেতো দধাবহৈ পুংসে পুত্রায় বৈত্তবৈ ৷ “এল আমরা এখন জন্ম দিই ; ছুই জনার বীজ মিলিত করি, যেন আমরা পুত্রসস্তান লাভ করিতে পারি।” অতএব, সপ্ত পদ গমন করিয়া যখন বিবাহ সম্পূর্ণ করা হইত তখন তাহারা সস্তানের পিতামাত হইবার উপযুক্ত। বিবাহ সম্পন্ন হইলে বধু যখন স্বামিপৃহে যাইতেছে, তখন তাঙ্গাকে সম্বোধন করিয়া বলা হইতেছে— গৃহান গচ্ছ গৃহপত্নী যথাহসৌ বশিনী ত্বং বিদথমাবদালি । ঋগ্বেদ ১০।৮৫২৬ “গৃহে যাও, সেখানে গিয়া গৃহপত্নী হও । গৃহপত্নীরূপে তুমি সেখানে যজ্ঞামুষ্ঠান পরিচালিত করিবে ।” ৰিবাহের পরেই স্বামিপৃহে গিয়া বধূকে সংসারের কত্রী হইতে হইবে, যজ্ঞকাৰ্য্য পরিচালনা করিতে হইবে, অতএব বিবাহের পূৰ্ব্বেই তাহাকে পূর্ণভাবে শিক্ষিত হইতে হইত। বিবাহের পূৰ্ব্বে যে স্ত্রীলোকেরা যজ্ঞহোম করিত, লাজ-হোমের নিম্নলিখিত মন্ত্রটি হইতেই তাহা বুঝা যায়— আচমনং স্কুদেবং কস্ত৷ অক্সিমরক্ষত। তৈঃ এঃ ১।৫।৭ স্বামিগুহে গিয়া বধু যখন সংসারের ভার গ্রহণ করিতেছে তখন তাহাকে সম্বোধন করিয়া বলা হইতেছে, সম্রাঞ্জা শ্বশুরে ভব সম্রাজ্ঞী শ্বঙ্কবাং ভব । ননান্দরি সম্রাজ্ঞী ভব সম্রাঞ্জী অধিদেযেযু । ঋগ্বেদ ১-৮৫৪৬ “শ্বশুর শাশুড়ী ননদ দেবর সকলের উপরে তুমি স্নেহশীল৷ সম্রাজ্ঞী হও ।” বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রী দাম্পত্য জীবন আরম্ভ করিবে এক দিন বা তিন দিন ব্রহ্মচৰ্য্য পালন করিয়া । সাধারণ ভাষায় ইহাকে কালরাত্রি বলা হয় । এই সময় স্বামী ও স্ত্রীর পরস্পরের মুখ দেথাও নিষিদ্ধ। ইউরোপে বিবাহের পর সঙ্গে সঙ্গেই “হনিমুন” কিন্তু ভারতে স্বামী-স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি, এত প্রলোভনের মধ্যে এই নিবৃত্তি ভবিষ্যৎ জীবনে সংযমের স্বচনা করে । বিবাহ যে শুধু ইন্দ্রিয় t,’ woబా:వtttáTబిr*uదaఒ":" *" প্রবাঙ্গী ১৩৪৬ ভোগের জন্য নহে, ইন্দ্রিয়সংযমের ভিতর দিয়াই গার্হস্থ্যধৰ্ম্ম পালন করিয়া ক্রমশ: উচ্চ অধ্যাত্মজীবনের দিকে অগ্রসর হইতে হইবে, এই কালরাত্রি পালনের দ্বারাই বরকন্য উভয়েই তাহা উপলব্ধি করে। এই সময়টি গত হইলে যৌন মিলনের সময় বধূ স্বামীকে সম্বোধন করিয়া বলে, অপশুং ত্বা মনসা চেকিতানং তপসে জাতং তপসে বিভূতম্। ইহ প্রজামিহ রয়িং রবাণ: প্রজায়শ্ব প্রজয়া পুত্রকাম । “তুমি জ্ঞানী, তপস্যায় তোমার জন্ম, তপ:শক্তিতে তুমি পূর্ণ, তোমাকে অস্তরের মধ্যে চিনিয়াছি । তুমি আমার সস্তান ও ঐশ্বর্ষ্যে পূর্ণ কর, পুত্রকাম তুমি, আমাদের সস্তানের ভিতর দিয়া তুমি পুনর্জন্ম গ্রহণ কর ।” স্বামীর উত্তর, অপশুং ত্বা মনসা দীধ্যানাং স্বায়াং তনুং ঋত্বিরে নাথমানাম উপমামুচ্চ যুবতির্বভূয়া: প্রজাসুস্ব প্রজয়ী পুত্রকামে ৷ “গভীর বুদ্ধিমতী তুমি, তোমাকে আমি অস্তরের মধ্যে চিনিয়াছি । তুমি তোমার শরীরে সস্তানের জন্ম কামনা করিতেছ। যুবতী তুমি, পুত্রকামী তুমি, এস আমার আলিঙ্গন গ্রহণ করআমাদের সস্তানের ভিতর দিয়া তুমি পুনর্জন্ম লাভ কর।” এই দুইটি সম্বোধন গভীর অর্থপূর্ণ। বর বধূকে এখানে “যুবতী” বলিয়াই সম্বোধন করিতেছে । পুত্রার্থে সঙ্গমের জন্য আহবান করিতেছে। স্বামীর গুণ ও শক্তি বিচার করিবার শক্তি স্বামীর ঔরসে গর্ভধারণ করিবার কামনা বধূতে রহিয়াছে। অতএব বৈদিক যুগে বিবাহ যে পরিণতবয়স্ক যুবকযুবতীর মধ্যেই হইত এবং পরস্পর পরস্পরকে জানিয়া বুঝিয়াই নির্বাচন করিয়া লইত, সেবিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহের স্থান নাই। তবে সে বিবাহ পাশ্চাত্য দেশের যুবক-যুবতীর বিবাহের স্থায় কেবল ইন্দ্রিয়ভোগ এবং সাধারণ সংসারযাত্রা পালনের জন্যই হইত না । ংযম ও তপস্যা ছিল তাহার গোড়ার কথা এবং অত্যুচ্চ অধ্যাত্মজীবন লাভ ছিল তাহার চরম লক্ষ্য । বিবাহিত জীবনে ধৰ্ম্মাচরণ করিয়া দম্পতি যাহাতে