পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ • বিবিধ প্রসঙ্গ—বিদ্যাসাগর স্মৃত্তিসংরক্ষণ সমিতির কার্য 8օծ তাহাকে নির্বোধ বলিতে চাও বল, কিন্তু তাহার কাছে মাথাটা নত-অন্তত: মনে মনে, করিতেই হইবে। ফিনরা জিতিবেই না, এমন বলা যায় না ; আপাতত: ত কয়েকটা সংঘর্ষে জিতিয়াছে। আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র তাহাদের এই সাহায্য করিয়াছে বলিয়৷ তারের খবর আসিয়াছে যে, ফিনদের সাবেক যুদ্ধঋণের সদ্য সদ্য প্রাপ্য কিস্তিটার আদায় আমেরিকা স্থগিত রাখিয়াছে। জামেনীর ও ইটালীর সাহায্যদানের সংবাদের উল্লেখ আগে করিয়াছি। এইরূপ সংবাদ আসিয়াছে যে, স্বইডরা ফিনদের পক্ষে যুদ্ধে নামিয়াছে। আর এক সহায় প্রকৃতিদেবী। শীতের আতিশয্যে জলপথসমুদয় বরফে আচ্ছন্ন হওয়ায় শত্রুসৈন্যের দুরধিগম্য হইতেছে । রাশিয়ানরাও শীতপ্রধান দেশের লোক বটে, কিন্তু ফিনল্যাণ্ডের শীত তাহারাও বরদাস্ত করিতে পারিতেছে না। প্রকৃতিদেবীর এই সাহায্য কিন্তু সাময়িক, গ্রীষ্মাগমে ফিনর। ইহা হইতে বঞ্চিত হইবে । যদি তাহার পূর্বেই তাহার কাজ হাসিল করিয়া লইতে পারে, তাহা স্বতন্ত্র কথা । রুশিয়ার ভারত-আক্রমণ উদ্দেশ্যের গুজব প্রচার জামেনী এই গুজব রটাইতেছে যে, রুশিয়া আফগানিস্থানের ভিতর দিয়া ভারত-আক্রমণের বন্দোবস্ত করিতেছে । ইহা একটা ‘বনিয়াদী’ গুজব—অ-বিশ্বাস্ত নহে । কিন্তু ইহা জাম্যান “বড়র পরিতি”র অন্যতম দৃষ্টাস্ত হইলেও, বর্তমান সময়ে এই গুজব রটাইবার একটা উদ্দেশ্য অনুমিত হইয়াছে । তাহা এই যে, ব্রিটেন এই গুজবে বিশ্বাস করিলে তাহার সামরিক শক্তি ও যুদ্ধসজ্জা একমাত্র জামেনীর বিরুদ্ধে প্রযুক্ত না হইয়া কতকটা রুশিয়ার বিরুদ্ধেও চালিত হইতে পারে । তাহাতে জামে নীর কিঞ্চিৎ আসানির সম্ভাবনা । রুশিয়া ভারতবর্ষ আক্রমণ করিলে ব্রিটেন কি করিতে পারে ও করিবে জানি না ; কিন্তু রুশিয়ার মত প্রবল আততায়ীকে ঠেকাইবার মত অন্তনিরপেক্ষ সামরিক শক্তি ও সজ্জ। আপাতত ভারতবর্ষের “মাই । তখন, মহাত্মা গান্ধী না-পারুন, পেয়াদায় ভারতবর্ধকে চূড়ান্ত অহিংসাবাদী বানাইতে পারে। আমাদের অসহায় অবস্থা ভাবিলে লজ্জিত ও ম্রিয়মান ट्झेtऊ श्ध । বিদ্যাসাগর স্মৃতিসংরক্ষণ সমিতির কার্য “ভারতের গৌরব পুণ্যশ্লোক পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের স্মৃতি রক্ষার্থ তাহার জন্মভূমি মেদিনীপুর জেলার বিদ্যাসাগর স্মৃতি সংরক্ষণ সমিতি গঠিত হইয়াছে । ঐ সমিতি স্মৃতিরক্ষাকল্পে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের গ্রন্থাবলীর প্রামাণিক সংস্করণ প্রকাশ করিতেছেন, এবং তাহার জন্মস্থান বীরসিংহ গ্রামে একটি স্মৃতি-মন্দির ও হিন্দু বিধবাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করিয়৷ এই জেলার ঝাড়গ্রামে একটি বিদ্যাসাগর বাণী-ভবন নিৰ্ম্মাণ করিতেছেন । “মেদিনীপুর শহরে ও একটি বিদ্যাসাগর স্মৃতি-মন্দির নিৰ্ম্মিত ঐ মন্দিরের একাংশে পাঠাগার ও গ্রন্থাগার স্থাপিত ঐ মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করিয়াছিলেন বিশ্ববিশ্রুত হইয়াছে । হইতেছে । পণ্ডিত সৰ্ব সৰ্ব্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন । ডিসেম্বর তারিখে শুভ মন্দির প্রবেশ উৎসব অমুষ্ঠিত হইবে । বিশ্ববরেণ্য কবিগুরু পূজনীয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহোদয় অনুগ্রহপূৰ্ব্বক উৎসবের পৌরোহিত্য করিতে সম্মত হইয়াছেন।" মেদিনীপুর জেলার লোকেরা বাঙালীর মুখ রক্ষা করিয়াছেন । বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনের নিমিত্ত কেহ কিছু না করিলেও র্তাহার স্মৃতি র্তাহার মনুষ্যত্ব, র্তাহার প্রতিভা এবং তাহার ক্লত বহুবিধ কার্য দ্বারা সংরক্ষিত হইয়া আছে এবং ভবিষ্যতেও হইবে । বাঙালীরা যদি তাহার স্মৃতি সংরক্ষণার্থ কিছু করে, তাহার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, যে-জাতির জন্য তিনি মৃত্যুকাল পয্যন্ত পরিশ্রম করিয়াছিলেন, তাহারা নিতান্ত অমানুষ নহে । মেদিনীপুরবাসীরা এই প্রমাণ দিয়া সমগ্র বাঙালী সমাজের ধন্যবাদ ভাজন হইয়াছেন । তাহারা যে অনুষ্ঠানটির জন্য কবিসার্বভৌম রবীন্দ্রনাথকে আহবান করিয়াছেন, তাহার নিমিত্ত র্তাহ অপেক্ষা যোগ্যতর ব্যক্তি কেহ নাই—তিনিই সর্বাংশে যোগ্য । আগামী ১৬ই ও ১৭ষ্ট