পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

82:रे কিন্তু পালে মেণ্টে বলা হুইয়াও আছে যে, পালে মেণ্টারী আইন ছাড়া পালেমেণ্ট আর কিছু মানিতে বাধ্য নহে । অতএব আমাদের আন্দোলন খুব জোরে চালাইতে হইবে। নিখিল ভারত কংগ্রেস কমৗটিতে বঙ্গের বিহারপ্রদেশভুক্ত অংশগুলি বাংলাকে ফিরাইয়া দিবার পক্ষে প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছিল। কিন্তু কংগ্রেস ঐ প্রস্তাব অহসারে কাজ করাই বার কোন চেষ্টা করেন নাই । স্বতরাং প্রস্তাবট মূল্যহীন হইয়া আছে। আমাদের আন্দোলন প্রবলতর করিবার আবশ্যকতার ইহাও একটি কারণ। শ্রীযুক্ত কামিনীকুমার দত্ত বঙ্গের আইনসভায় এ-বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করিয়া প্রশংসনীয় ও উচিত কাজ করিয়াছেন । ভাষা অহসারে নূতন করিয়া সিন্ধু প্রদেশ গঠিত হইয়াছে, উড়িষ্যা প্রদেশ গঠিত হইয়াছে, অথচ একভাষাভাষী বাঙালীদের দেশটিকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হইয়াছে । কুটরাজনীতির অসঙ্গতির ইহা চমৎকার দৃষ্টান্ত । বাঙালী কি চায়, তাহা একাধিক বিশেষজ্ঞ বাঙালী প্রবাসীতে ও মডার্ণ রিভিয়ুতে প্রবন্ধের আকারে লিখিয়াছেন, আমরাও লিখিয়াছি। অন্যান্য সংবাদপত্রেও এ বিষয়ে অনেক লেথা বাহির হইয়াছে । কিন্তু তাহাতে নিশ্চিন্ত হইয় থাকিলে চলিবে না । একই কথা বার-বার বলিতে হইবে । বাঙালীর রাষ্ট্রীয় ও সাংস্কৃতিক সংহতি বঙ্গভূমিকে রাষ্ট্রীয় হিসাবে তিন টুকরা করা হইয়া থাকিলেও সমগ্রভারতে যেখানে যত বাঙালী আছেন, তাহাদিগকে বাঙালীর রাষ্ট্ৰীয় স্বার্থের প্রতি দৃষ্টি রাখিতে হুইবে । আমরা অ-বাঙালী কাহার ও ক্ষতি বা অনিষ্ট করিতে চাই না, কিন্তু সর্বত্র ভারতীয় নাগরিকের সমানঅধিকার চাই । সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সংগতি পুনঃস্থাপন এখন আমাদের সাধ্যাতীত হইতে পারে, কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রীয় ংহতি এই প্রকারে যত টুকু রক্ষিত হইতে পারে, তাহা রক্ষা করা চাই । সাংস্কৃতিক সংহতি পূর্ণমাত্রায় রক্ষা করিতেই হইবে। বাঙালী মহিলা ও পুরুষ যিনি যেখানে আছেন, তাহাকে বাংলা বলিতে হইবে, বাংলায় চিঠি লিখিতে হইবে, সাহিত্যিক শক্তি থাকিলে বাংলা গদ্য বা পদ্য বা উভয়ই রচনা করিতে হইবে, বাংলা সাহিত্য অধ্যয়ন করিতে হইবে, বঙ্গের সংগীত ও ললিতকলার অতুরাগী হইতে হুইবে, এবং শক্তি থাকিলে স্বয়ং গায়ক বাদক চিত্রকর বা ভাস্কর হইতে হইবে । Yegor প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন সমগ্র ভারতে বাঙালী যাহাতে বঙ্গীয় সংস্কৃতির সহিত যোগরক্ষা করিতে পারেন, তাহার জন্য কিছু করা প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, ভারতবর্ষের কোন প্রদেশের বাঙালীরাই এ বৎসর ইহার অধিবেশনের জন্য কোন চেষ্টা করিলেন না । সাধারণতঃ অধিবেশনগুলিতে এক-শ দেড়-শ’র বেশী প্রতিনিধি হয় না ; বেশী হইলে ২-৩ হয় । ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের কোন-না-কোন বড় শহরের বাঙালীদের পক্ষে র্তাহাদের থাকিবার থাইবার ব্যবস্থা চারি দিনের মত করা: সাধ্যাতীত ছিল মনে হয় না । অবাঙালীদিগকে বঙ্গসাহিত্যের খবর দেওয়া বাঙালীরা তাহাদের সাহিত্যের অহঙ্কার করিয়া থাকেন । বড় বড় লেখকদের নাম ও র্তfহারা করেন । কিন্তু বাংলা সাহিত্য এখনও যে জীবিত, বধিষ্ণুএবং অগ্রগতিশীল আছে, তাহা অবাঙালীদিগকে জানাইতে বাঙালী গ্রন্থকার ও গ্রন্থপ্রকাশ কদিগের উৎসাহ নাই। ইংরেজী কোন মাসিকে তাহাদের পুস্তকসমূহের পরিচয় যদি নিয়মিত রূপে বাকির হয়— যেমন মডার্ণ রিভিয়ুতে ত্রিশ বৎসরের অধিক কাল প্রতিমাসে গুজরাটী সাহিত্যের পরিচয় বাহির হইতেছে— তাহা হইলে বঙ্গের বাহিরের জগং বঙ্গসাহিত্যের বর্তমান অবস্থার কিছু পরিচয় পাইতে পারে। কিন্তু মডার্ণ রিভিয়ু বাঙালীর কাগজ, স্বতরাং গেয়ে জুগীর মত উহা বাঙালী গ্রন্থকার ও প্রকাশকদিগের নিকট হইতে ভিখ, পাইবে না বলিয়া উহার কথা না-বলাই ভাল । অন্য . একখানি ইংরেজী কাগজের কথা বলি । ইহার নাম “দি ইণ্ডিয়ান পী ঈ, এন” ( “The Indian P.E.N” ) । পী ঈ এন সমগ্র পৃথিবীর একটি সাহিত্যিক সভা। পোয়েটস্-প্লেরাষ্টটুস, এডিটাসএসেয়িস্টস, এবং নভেলিস্টস্-এই ইংরেজী কথাগুলির আদ্যঅক্ষরগুলি লইয়া পী ঈ এনের নামকরণ হইয়াছে। যে মাসিকfটর কথা বলিতেছি, তাহা ভারতীয় পী ঈ, এনের মুখপত্র । শ্ৰীমতী সোফিয়া ওআডিয়া ইহার বিদুষী সম্পাদিক। ইহাতে প্রতিমাসে ভারতীয় নানা ভাষার নূতন বহির সমালোচনা বা পরিচয় থাকে। বাংলা বহির পরিচয় সামান্যই থাকে। তাহার কারণ বাঙালী গ্রন্থকার ও প্রকাশকের বহি পাঠান না। পাঠাইলে যে র্তাহারা আর্থিকলাভবান হইবেন, এরূপ :