পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(7*Հ প্রবাঙ্গী Yoo উন্টাইয়া ফেলিল, এবং সাতকাইয়া উঠিয়া বলিয়া উঠিল— মাপিয়া ফেলা হইতে লাগিল। শ্ৰীবাস ধানের মাপের যাঃ—সৰ্ব্বনাশ হ’ল ! সঙ্গে হাকিতে আরম্ভ করিল—রাম—রাম—রাম-রাম সাঁওতালের দলও অপরিসীম উদ্বিগ্ন হইয়া বলিয়া উঠিল—যা: | শ্ৰীবাসের ছেলে বাপকে তিরস্কার করিয়া বলিল— কি করলে ব’ল তো ! হল তো ! যাক—ও পাতাখানা বাদ– বাধা দিয়া শ্ৰীবাস অত্যস্ত দুঃখিত ভঙ্গীতে বলিল— উহু । এক কাজ কর, বেণ ক’রে ওপার থেকে ভেণ্ডারের কাছ থেকে ডেমি নিয়ে আয় খান পচিশেক। তার পর খাতা বেঁধে নিলেই হবে! ঐবাসের ছেলে গণেশ এবার ক্রুদ্ধ হইয়া উঠিল, বলিল —তুমি খেপেছ নাকি ? ডেমিতে কে কোনকালে খাত করে, শুনি ? শ্ৰীবাস দুরস্ক ক্রোধে অদ্ভুত দৃষ্টিতে বিরুত মুখে নীরবে গণেশের দিকে চাহিয়া রহিল, তারপর বলিল—তোকে যা করতে বলছি তাই কর । যা এখুনি যা, যাবি আর আসবি। বলিয়া বাক্স খুলিয়া টাকা বাহির করিয়া ফেলিয়া দিল । স"ওতালের বিস্ময়ে নিৰ্ব্বাক হইয়া ঐবাসের মুথের দিকে চাহিয়াছিল, শ্ৰীবাস গম্ভীর মুখে উঠিয়া বলিল— টিপছাপ পরে হবে মাঝি, গণেশ কাগজ নিয়ে আস্থক । ততক্ষণে তোরা আয়, বাখার ভেঙে ধানটা মেপে ঠিক করে রাখ । তোদের সব আজ আবার পরব আছে । সাওতালেরা এ কথায় খুব খুশী হইয়া উঠিল । কমল বলিল—নাঃ মোড়ল বড় ভাল লোক, বিবেচনা আছে মোড়লের । চুড়া মাঝি ভ্ৰ নাচাইয়া বলিল—কিন্তু ভারি বেকুব হয়ে গিয়েছে মোড়ল । কালিটা ফেলে—ছেলের উপর রাগ দেথলি না সব ! চুড়ার ব্যাখ্যায় সকলেই ব্যাপারটা সকৌতুকে উপভোগ করিয়া খিল থিল করিয়া হাসিয়া উঠিল। সত্যই মোড়ল বড় বেকুব হইয়া গিয়াছে ! দেখিতে দেখিতে খড়ের তৈরি মোটা দড়া জড়াইয়া বাধা বাখারটা ভাজিয়া স্তুপাকার করিয়া ধান ঢালা হইল। হস-হাস করিয়া টিন-ভৰ্ত্তি ধান মাপিয়া রাম-রাম—দুই—দুই ; দুই-রামে--তিন--তিন! চুড়া একপাশে বসিয়া একটা কাঠি দিয়া মাপের সঙ্গে সঙ্গে একটা করিয়া দাগ দিয়া সাওতালদের তরফ হইতে হিসাব রাখিয়া যাইতেছিল । રર এদিকে গ্রামের মধ্যে একটা প্রচণ্ড জটলা পাকাইয়া উঠিয়াছে। সকাল হইতে-না-হইতে গ্রামের একপ্রাস্ত হইতে অপর প্রাস্ত পৰ্য্যস্ত রটনা হইয়া গেল, ওপারের চরের উপর চিনির কল বসিতেছে। খাস কলিকাতা হইতে এক ধনী মহাজন আসিয়াছেন, তিনি সঙ্গে আনিয়াছেন প্রচুর টাক, ছোট একটি ছালায় পরিপূর্ণ এক ছালা টাকা! সঙ্গে সঙ্গে রায়-বংশের অন্য সমস্ত শরিকেরা একেবারে লোলুপ রসনায় গ্রাস বিস্তার করিয়া উঠিল। অপর দিকে উর্বর-জমি-লোলুপ চাষীর দল বাঘের গোপন পার্শ্বচর শৃগালের মত জিভ চাটিতে চাটিতে চঞ্চল হইয়া উঠিল। সৰ্ব্বপ্রথম নবীন বাগীর স্ত্রী মতি বাগিনী শিশু পৌত্রকে কোলে করিয়া চক্ৰবৰ্ত্তী-বাড়ীর অন্দরের উঠানে আসিয়া দাড়াইয়া চোখ মুছিতে আরম্ভ করিল। সংবাদটা শুনিয়া রংলাল বাড়ী ফিরিয়া অকারণ স্ত্রীর সহিত কলহ করিয়া প্রচণ্ড ক্রোধে লাঠির আঘাতে রান্নার হাড়ি ভাঙিয়া চুরমার করিয়া দিল। তার পর স্তব্ধ হইয়া মাটির মূৰ্ত্তির মত বসিয়া রহিল । মনের আক্ষেপে অচিস্ত্যবাবুর সমস্ত রাত্রি ভাল করিয়া ঘুম হয় নাই। ফলে অতিপুষ্টিকর শশক-মাংস বদহজম হেতু নানা গোলমালের স্বষ্টি করিয়াছিল। ভদ্রলোক অন্ধকার থাকিতেই বিছানা ছাড়িয়া উঠিয় ঢাক ঢক করিয়া এক গ্লাস জল ও থানিকটা সোডা খাইয়া মণিং ওরাকের জন্ত বাহির হইয়া পড়িলেন। খুব জোরে খানিকটা হাটিয়া তিনি সম্মুখে ভরা কালিন্দীর বাধা পাইয়া দাড়াইয়। গেলেন। ওপারের চরটা অন্ধকারের ভিতর হইতে বর্ণে