পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাস্তুল কালিন্দী (t్సd ইন্দ্র রায় বাধছে। তা ছাড়া রূপে গুণে এমন পাত্র পাবেন প্রায় সকল শরিকই আসিয়া জুটিয়া গেল। আস্ফালন কোথায় ? কটুক্তিতে প্রসন্ন প্রভাত কদৰ্য তিক্ত হইয়া উঠিল। —আরে মশাই, ওদের আর আছে কি ? —নাই, তাই মেয়ে-জামাইয়ের জন্যে রায় নগর বসাচ্ছেন চরে । —ছ । কিন্তু রামেশ্বরের যে কুষ্ঠ হয়েছে শোনা যায়। --আজ্ঞে না। সে সব গুরা রক্ত পর্য্যস্ত পরীক্ষা ক’রে দেখিয়েছেন। ওটা হ’ল রামেশ্বরবাবুর পাগলামি । আচ্ছা, চলি আমি । —দাড়ান, দাড়ান। আমিও যাব । দস্ত মার্জনা অৰ্দ্ধসমাপ্ত ভাবেই শেষ করিয়া হরিশ রায় উঠিয়া পড়িলেন । অচিন্ত্য বাবুর সঙ্গে চলিতে চলিতে বলিলেন— দেখুন না, আমি কি করি । তামাম কাগজ আমি এখুনি গিয়ে বের ক’রে ফেলব ! সব শরিককে ডাকব । মিলে বলব—রায়কে ও বলব, মহাজনকে গু বলব । আঙল দিয়ে সব দেখিয়ে দোব। শোনে ভাল, না শোনে কালই সদরে গিয়ে-দোব এক নম্বর ঠুকে, আর সঙ্গে সঙ্গে কনজাং সন ! করুক না, কি ক’রে কল করবে। কল বসাবে-নগর বসাবে ! অচিন্ত্যবাবু বলিলেন—কল বসলে সৰ্ব্বনাশ হবে • Mই ! রাজ্যের লোক এসে জুটবে-কুলী-কামিনগুণ্ড—বদমায়েস সব, চুরি-ডাকাতি, রোগ—সে এক বিশ্র ব্যাপার মশাহ । তা ছাড়া সমস্ত জিনিস অগ্নিমূল্য । গেরস্ত লোকেরই হবে বিপদ ।.তার চেয়ে অন্ত উপায়ে উন্নতি কর না নিজের ! কত ব্যবসা রয়েছে । এই ধরুন গাছ-গাছড়া চালান দাও, খসখস—অচিস্তাবাবু সহসা চুপ করিয়া গেলেন । হরিশ রায় তাহার হাত ধরিয়া বলিলেন—আসুন আপনি, আপনাকেই দেখাব আমি কাগজ। আপনি ইন্দ্রর বন্ধুলোক-কই আপনিই বলুন তো ন্যায্য কথা ! আয়নার মত কাগজ-এক নজরে বুঝতে পারবেন । ইন্দ্র না হয় বড়লোক, আমাদের না হয় পয়সা নাই । সকলে (D fČR! হয়ে যাবে তাই বলে এই অধৰ্ম্ম করতে হবে । কিছুক্ষণের মধ্যেই হরিশ রায়ের বাড়ীতে রায়-বংশের 8 = و ۹ নিতান্ত সঙ্গতিহীন এক নাবালক-পক্ষের অভিভাবিকা নাগিণীর মতই বিষোদগার করিয়া কেবল অভিসম্পাত বর্ষণ করিতে আরম্ভ করিল,—ধ্বংস হবে ধ্বংস হবে! ভোগ করতে পাবে না । অনাথা ছেলেকে আমার যে ফাকি দেবে—তার মেয়ে বাসরে বিধবা হবে। নিৰ্ব্বংশ হবে! এই আমি ক’লে রাখলাম । 礙 拳 嫩 ইন্দ্র রায় ইহার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। রায়গোষ্ঠ দল বাধিয়া আসিয়া অধঃপতিত আভিজাত্যের স্বভাবধৰ্ম্ম অনুযায়ী যে কদৰ্য্য দম্ভ ও কুটিল মনোবৃত্তির পরিচয় দিল তাহাতে তিনি স্তম্ভিত হইয়া গেলেন। বিশেষ করিয়া রায়বংশের গঞ্জিকাসেবী এক শরিক শূলপাণি যখন ক্রোধে আত্মহারা হইয়া কদৰ্য্য ভঙ্গীতে হাত-পা নাড়িয়া বলিল—আঁ্যাঃ, বাবু আমার ‘লগর’ বসাবেন মেয়ে-জামায়ের লেগে । আর আমরা সব ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে দেখব, না কি ? ইন্দ্র রায় বলিলেন, শূলপাণি, শূলপাণি, কি বলছ তুমি ? রায়ের মুখের কাছে হাত-পা নাড়িয়া শূলপাণি বলিল—আহা হা—ন্তাকা আমার রে, হাক ! বলি, আমরা কিছু বুঝি ন—না কি ? রমেশ্বরের বেটার সঙ্গে তোমার মেয়ের বিয়ে দেবার কথা আমরা বুঝি না বুঝি ? ইন্দ্র রায় শুস্তিত হঠয়া গেলেন । র্তাহার মনে হইল পায়ের তলায় পৃথিবী বুঝি থর থর করিয়৷ কঁাপিতেছে ! সভয়ে তিনি চোখ বুজিলেন, তাহার চোখের সম্মুখে ফুটিয়া উঠিল—গত সন্ধ্যায় উপাসনার সময়ের মনশ্চক্ষে দেথ) দৃশ্ব । চক্রবর্তী-বাড়ী ও রায়-বাড়ীর জীবনপথের সংযোগস্থলে—ভাঙনের অতল অন্ধকূপ ! শূলপাণি কদৰ্য ভাষায় আপন মনেই বকিতেছিল ; অন্যান্ত রায়েরা আপনাদের মধ্যেই উত্তেজিত ভাবে আলোচনা করিতেছিল ; হরিশ রায় বেশ বুঝাইয়া বলিবার ভঙ্গিতে বলিল—বেশ তো ! পাচ জনে একসঙ্গে মজলিস ক’রে ব’স ; আমি ফেলে দি তামাম কাগজপত্র—একটি একটি