পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e gسb\ প্লেৰালী SNEBV, আমরা দেখিতে পাই, দক্ষযজ্ঞের সময় শিব এক প্রকার মৃত্য করিয়াছিলেন— দক্ষযজ্ঞে বিনিহিতে সন্ধ্যাকালে মহেশ্বরঃ । নানাঙ্গহারৈননিৰ্ব লয়তালবশামুগ: । —নাট্যশাস্ত্র, ৪র্থ অধ্যায়, ২৩৪ শ্লোক কুৰ্ম্মপুরাণে পাওয়া যায় নর-নারায়ণ ঋষির আশ্রমে যোগতত্ত্ব বুঝাইতে গিয়া শিব বলিয়াছেন— সোহহং প্রেরস্থিত দেব; পরমানন্দ-সংশ্ৰিত: | নৃত্যামি যোগী সততং যস্তম্বেদ স যোগবিৎ ॥ এবং স্বধু উপদেশ না দিয়া নানা প্রকার নৃত্য দেখাইয়াছিলেন— এতাবছৰণ ভগবান যোগিনাং পরমেশ্বরঃ । ননৰ্ত্ত পরমং ভাবমৈশ্বরং সম্প্রদর্শয়ন । তামিলদেশের পুরাণে এরূপ কাহিনী প্রচলিত অাছে যে এক বার ঋষিদের আশ্রমে ক্রুদ্ধ ঋষিদের দ্বারা প্রেরিত বাঘকে বিনষ্ট করিয়া উহার চৰ্ম্ম পরিয়াছিলেন। ইহার পর ঋষিদের প্রেরিত সাপকে ধরিয়া গলায় মালা করিয়া লইয়াছিলেন । এই সব পৌরাণিক কাহিনী অবশ্য বহুকাল ধরিয়া চলিয়া আসিতেছিল। বৈদিক রূপক ও কাহিনী পুরাণের যুগে একটা বিশেষ আকার গ্রহণ করিয়াছিল। কিন্তু শিল্পে আমরা বহুদিন কোন নৃত্যমূৰ্ত্তির সন্ধান পাই না। শিবের সর্বপ্রাচীন মূৰ্ত্তি যাঙ্গ এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হইয়াছে তাহা হয় মুখলিঙ্গের গায়, যেমন গুদাইমল্লমে, অথবা কুষাণ-রাজাদের মুদ্রায় । এই সময় হইতে একমুখ বা বহুমুখ লিঙ্গ দেখা যাইতে থাকে, তাহার গায়ে নানা কারুকাৰ্য্যযুক্ত শিবের মূৰ্ত্তি পাওয়া যায়। এইগুলিতে বা নচন, ভূমরা, খে। প্রভৃতি স্থানে ভারশিব ও বাকাটক যুগের ও পরের লিঙ্গস্তম্ভের উপর অপূৰ্ব্ব শিবমূৰ্ত্তি শিল্পিত হইয়াছে। কিন্তু কোথাও নৃত্যপর মূৰ্ত্তি নাই। গুপ্তযুগেও কোনরূপ নটরাজ মূৰ্ত্তি দেখা যায় না। কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তলের প্রস্তাবনায় শিবের অষ্টবিধ রূপের উল্লেখ আছে। র্তাহার অন্যান্য কাব্যেও শিবের অন্যান্য কাহিনী কীৰ্ত্তিত হইয়াছে, কিন্তু নৃত্যরূপের কোন উল্লেখ নাই। হৰ্ষবৰ্দ্ধনের সময়ে শিবের পূজা খুব প্রচলিত ছিল, তাহার সভাকবি বাণভট্টের গন্তকাব্যগুলিতে শৈবসমাজের

$.

অনেক কথা আছে, তাহাতে শিবের অষ্টরূপের উল্লেখ আছে, কিন্তু নটরূপের কোন কথা নাই । ইহার পরবর্তী যুগে পশ্চিম-ভারতের গুহামন্দিরগুলিতে সৰ্ব্বপ্রথম নৃত্যমূৰ্ত্তি দেখা যায়। এলিফ্যান্ট, ইলোর, বাদামী প্রভৃতি স্থানেই প্রথম এইরূপ মুক্তি মিলে। এইগুলি চালুক্য রাজাদের সময়ের, অর্থাৎ খ্ৰীষ্টীয় ৭ম-৮ম শতাব্দীর । এই মূৰ্ত্তিগুলি পাথরের এবং শিল্প হিসাবে অনবদ্য । দক্ষিণ-ভারতের পল্লব-রাজাদের সময়ে অমরাবতীর শিল্পধারার প্রভাব দেখা যায়। নটরাজের সর্বপ্রসিদ্ধ স্থান চিদম্বরমের মূল মন্দির পল্লব-রাজাদের সময়ে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল বলিয়া অসুমিত হয়। কিন্তু ইহার সর্বপ্রাচীন অংশ যাহা মূলস্থান নামে পরিচিত সেখানে কোন মূৰ্ত্তি নাই। ঐ স্থানের অন্যান্য মন্দির, সভা’ ও মূৰ্ত্তিগুলি পরবত্তী কালের । ইহার পরে তামিল সাহিত্যের স্তোত্র যুগ, সে সময়ে রচিত শিব-স্তোত্রগুলিতে চিদম্বরমের উল্লেখ পাওয়া যায়। পল্লবদের পরে পাণ্ডা, চোল ও বিজয়নগরের রাজাদের সময়েই নটরাজ মূৰ্ত্তি অত্যস্ত প্রচলিত হয় । ইহা শৈবাগমের প্রভাবের ফল। এই সময় হইতে ধাতুনিৰ্ম্মিত মূৰ্ত্তিই বেশী দেখা যায়। এইগুলি উৎসব-মূৰ্ত্তি, অর্থাৎ উৎসবের সময় যে দেবযাত্রা বী মিছিল বাহির হইত, তাহাতে এইগুলি লইয়া যাওয়া হইত। এই সম্পর্কে একটি কথা বলা দরকার যে পুরাণের মধ্যে (যেমন, মৎস্যপুরাণে ) নৃত্যমূৰ্ত্তির বর্ণনা থাকিলেও আমরা খ্ৰীষ্টীয় সাত-আট শত বৎসর পর্য্যন্ত ঐক্লপ কোন মূৰ্ত্তি পাই না বা সমসাময়িক সাহিত্যে কোন উল্লেখ পাই না। সুতরাং পুরাণের ঐ সব বচন প্রাচীন কিনা তাহা বিবেচ্য। 8 ভারতবর্ষের নানা অংশে শিবের পূজা সমান ভাবে প্রচলিত ছিল। কিন্তু নটরাজ মূৰ্ত্তি সৰ্ব্বত্র সমানভাবে প্রচলিত ছিল কিনা বলা যায় না, কেননা সব জায়গায় ঐরূপ মূৰ্ত্তি পাওয়া যায় নাই। এ পর্য্যস্ত যাহা জানা গিয়াছে তাহাতে বোধ হয় পশ্চিম-ভারতে, দক্ষিণ-ভারতে,