পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] भल्लिनांथं SN9(t হেমন্তকুমার সেই মুমুধুর অধরে অধর স্পর্শ করিয়া ধীরে ধীরে ফু দিতে লাগিলেন। বহুক্ষণ পরে রমণীর চোখের পাতা ঈষৎ কম্পিত হইয়া উঠিল। প্রথম অধ্যায়ের শেষে সবিতা দেবী ষে মন্তব্যটুকু লিপিবন্ধ করিয়াছেন তাহা তবুও কোন রকমে সহ করা গিয়াছিল, কিন্তু আমার নায়িকাকে সঞ্জীবিত করিবার এই ষে বন্দোবস্ত করিয়াছি তাহার পার্থে যে টিপ্পনী কাটিয়াছেন তাহা সংক্ষিপ্ত হইলেও এমনই উগ্ৰ যে আর স্থির থাকা যায় না— চন্‌ চন্‌ করিয়া একেবারে তীব্র বিষের মত মাথার ব্রহ্মতলে গিয়া ওঠে। লেখা আছে—‘কলম না সিঁদকাঠি ? কেন, এক গোবিন্দলালই অধরে অধর দিয়া বঁাচাইবার প্রথমটা পেটেণ্ট করিয়া লইয়াছিল নাকি? সেই জনশূন্ত নদীর ধারে আমার নায়িকাকে বঁাচাইবার আর কি উপায় ছিল। বরং বঙ্কিমবাবু অমন বেহায়াপনা না করাইয়া অন্য উপায় অবলম্বন করিতে পারিতেন, কেন-না, গোবিন্দলালের বাড়ি খুবই কাছে ছিল ; একটা হাক দিলেই উড়ে মালী ছাড়া আরও হাজার লোক জড় হইতে পারিত। আমার সেখানে কি ছিল, শুনি ? এই রকমই বরাবর সবিতা দেবী বিদ্যা জাহির করিয়া গিয়াছেন, সমস্ত তুলিয়া দিতে গেলে এ অগ্রীতিকর কাহিনী আর এখন শেষ হয় না। লবঙ্গলতিকা কায়স্থ কন্ত। আর হেমন্তকুমার ব্রাহ্মণ তনয়, অথচ উভয়ের মধ্যে প্রগাঢ় প্রণয় সঞ্জাত হইয়াছে এবং আধুনিক শিক্ষাপ্রাপ্ত হেমন্তকুমার বিবাহের জন্ত দৃঢ়সঙ্কল্প। কিন্তু সমাজ খঙ্গহস্ত,—সে অসবর্ণ বিবাহ হইতে দিবে না । এখানে হিন্দুসমাজকে খুব একচোট লইয়াছি। সহৃদয় পাঠক-পাঠিকারা বোধ হয় স্বীকার করিবেন যে, যেলেখককে সাহিত্যজগতে নবভাবের ভাগীরথী বহাইয়া নূতন যুগ সৃষ্টি করিতে হইবে তাহার এ অধিকারটুকু আছে । কিন্তু ইহার উপরও আমার ভূইফোড় সমালোচিকা ধাত ফুটাইতে ছাড়েন নাই। পাশে একরাশ ক্রুদ্ধ নোট । আমার যুক্তির খণ্ডন করিতে পারেন নাই—চেষ্টাও করেন নাই-তবে মেয়েদের স্বভাৰলন্ধ যে গালির বঙ্গ নামাই য়াছেন তাহাতে আমার গুরু যুক্তিগুলি লঘু তৃণখণ্ডের মতই ভাসিয়া গিয়াছে --- নানান কারণে বাংলাভাষার লেখকদের ধৈর্ঘ্যের বাধ সাধারণ মানবের ধৈর্ঘ্যের বাধের অপেক্ষ অনেক দৃঢ়তর, কিন্তু সবিতাদেবীর বিষম উচ্ছ্বাসে এ বাধও শেষে ভাঙিল। " মনে মনে বলিলাম—তবে যুদ্ধং দেহি । আমিও প্রত্যেক রূঢ় মন্তব্যের প্রতিমন্তব্য লিখিয়া তবে এই দুঃসাহসিকার হস্তে পুস্তকপানি ফেরত দিব ; বুঝিবে, গ পাল্লায় পড়িয়ছি বটে !-পুরুষের পৌরুষকে আর এভাবে পদদলিত হইতে দিব না। গোড়ায়, সেই যে লেখা আছে—“পোড়াকপাল এমন বন্ধুদের” সেইথান হইতে আরম্ভ করিলাম। মনের মধ্যে এরূপ উৎকট উৎকট প্রত্যুত্তর আসিয়া জড় হইতে লাগিল যে, নির্ণয় করা দায় হইল—কোনটাকে রাখিয়া কোনটাকে বসাইব এবং সমস্তগুলার সংঘর্ষণে কলমটা যেন একখানি লৌহশলাকার মত উত্তপ্ত হইয়া উঠিল। ব্যাপারটা অনেকটা শকুন্তলা নাটকের গোড়ার দিকটার মত হইয়া গেল –“এই মনে করিয়া মহারাজা দুষ্মন্ত সেই হরিণশিশুকে বধ করিবার জন্য শরাশনে শরসংযোগ করিলেন। এমন সময় অদূরে শব্দ হইল—‘মহারাজ নিরস্ত হউন, নিরস্ত ইউন ; আপনার বাণ আর্জের রক্ষার জন্ত, নির্দোষীর সংহারের জন্ত নহে------” আমিও কলমটি বাগাইয়া ধরিয়াছি এমন সময় চমকিত হইয়া শুনিলাম—“কি গো, লুকিয়ে লুকিয়ে কি পড়া হচ্চে ?”••• আর লেখা হইল না এবং বইটাকে যে কিরূপে কোথায় লুকাইয়া ফেলিব তাহার জন্য ব্যাকুল হইয়া পড়িলাম, কারণ বক্তৃ স্বয়ং আমার স্ত্রী, এবং পূর্বেই আভাস দিয়াছি ইনি এক গৃহিণী ভিন্ন, সচিব সর্থীমিথ: প্রিয়শিষ্য ললিতে কলাবিধেী—এগুলার কোন পৰ্য্যায়েই পড়েন না ; তাহা ছাড়া আমার দূরদৃষ্টবশত ধাত পাইয়াছেন একেবারে আমার খুড়শাশুড়ীর I কিন্তু লুকান তখন অসম্ভব ; বইখানা আমার হন্তেওঁ রছিল না ।---অতঃপর যে কথাবৰ্ত্ত হইল তাহার একটা