পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বীপময় ভারত জীমুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় [১৫] ঘবদ্বীপের রাজবাটীতে নৃত্যদর্শন । পূরকর্ডর রাজা দশম পাকু-ভূবন (Pakoeboewono X) রবীন্দ্রনাথকে তার প্রাসাদে আমন্ত্রণ করেন, প্রাসাদের অন্তঃপুরিকাদের নাচ দেখাবার জন্ত । এই নাচ ঘবদ্বীপের কুষ্টির একটা অপূৰ্ব্ব বিকাশ। এর বর্ণনা অনেকে উচ্ছসিত প্রশংসার সঙ্গে ক’রে গিয়েছেন ; এই নাচের অনেক ছবিও নিয়েছে, অনেক শ্রেষ্ঠ রূপকার এর ছবিও একেছেন ; আর ঐতিহাসিক আর মৃত্যকলা-রসিক এই নাচের কথা অনেক বইয়ে লিগে গিয়েছেন । মঞ্জুনগরোর বাড়ীথেকে রওনা হ’য়ে রাত্রি আটটা পঞ্চাশে আমরা Kraton অর্থাং রাজপ্রাসাদে পউছুলুম । প্রথা-মতন ভিতরের বিরাট মণ্ডপ যেখানে নাচ হবে, সেখানে গিয়ে উঠবার আগে, বাইরের আর ভিতরের মহলের মাঝেকার একটা ফটকের সাম্নে আমাদের মোটর থামূল, কবি নামূলেন, আমরাও নামূলুম। ফটক মানে একটী বিরাট দেউড়ী, তার সামনেট ছাতে ঢাকা, দরজার আশে পাশে ঘর । এই দেউড়ীতে রাজার কতকগুলি নিকট আত্মীয়— ছেলে ভাই, ভাইপো—অতিথিদের স্বাগতের জন্য ছিলেন । ইউরোপীয় ফৌজী পোষাক পর দু-চারট প্রৌঢ় আর ছেলেদের দেখলুম। অন্ত অতিথিদের মধ্যে কতকগুলি ডচ মহিলা, একটা প্রাচীন ইংরেজ দম্পতী, আর একজন ডচ পুরুষও ছিলেন। ডচ রেসিডেন্ট তখনও আসেনি–র্তার আগমনের অপেক্ষায় আমাদের মিনিট দু-চার দাড়িয়ে থাকতে হ’ল। তার মোটর এল, তিনি নেমেই একজন আর্দালীর হাতে নিজের টুপী দিয়ে, সামূনে একটা ইউরোপীয় মহিলা দাড়িয়েছিলেন তার সঙ্গে করমর্দন ক’রে, আর কোনও দিকে না চেয়ে স ক'রে এগিয়ে চলে গেলেন, দরজা পার হ’য়ে গেলেন। ডচ জাতির আর ভচ রাণীর প্রতিনিধি হিসাবে তিনি উপস্থিত, দেউড়ীতে দাড়িয়ে করে সঙ্গে चाणांश कब्राü ८सांश झग्न कांभृश-विक्रक । शुददौ*ौग्न রাজপুত্রদের দ্বারা পরিবৃত হয়ে কবির অনুগমন ক’রে যে পথ দিয়ে রেসিডেন্ট সাহেব গেলেন সেই পখ দিয়ে আমরাও চললুম। অষ্টাদশ শতকের সেকেলে ববীপীয় পোষাক প'রে, মস্ত চওড়া খোলা তলওয়ার হাতে দু-চার জন সেপাই আশে পাশে দাড়িরে রয়েছে, আমাদের সঙ্গে ও চলেছে। একটা দু-দিকের দেওয়ালের মাঝেকার পথ দিয়ে আবার একটা দেউড়ীতে এলুম। এই দেউড়ী পেরিয়েই দেখি, সামনে এক অতি প্রশস্ত আঙিনায় বিজুলীর আলোয় উদ্ভাসিত বহুস্তণ্ডবিশিষ্ট একটি বিরাট পেগুপো ব৷ মণ্ডপ । ষবদ্বীপীয় রাজবাটীর এক ঐশ্বৰ্য্যময় দৃপ্ত আমাদের চোখের সামনে তখন এসে দাড়াল। প্রথমেই নজর পড়ল, মগুপের ধারে কতকগুলি রাজামুচর নিশ্চল ধাতু মূৰ্ত্তির মতো দাড়িয়ে—বোধ হয় হিন্দু-জামলের পোষাক পরে ; এদের গা খালি, স্বদ্বঢ় পেশী আর চওড়া বুকের পাট, উজ্জল খামবর্ণ গায়ের রঙ বিজলীর আলোতে চক্‌চক্‌ করছে ; এদের মাথায় গোল আর উচু সাদা রঙের টুপী-খুব উচু তুকী ফেজ টুপীর ভাব, তবে তার মাথায় কালা রেশমের গোছা নেই ; সোনালী রঙের একট। ক'রে ফিতের অলঙ্কার গলা থেকে বুকের উপর ঝুলছে ; পরণে রঙীন সারঙ-জার হাতে খোলা তলওয়ার, উচু ক’রে ধীরে দাড়িয়ে আছে। এদের বেশ বীরত্ব-ব্যঞ্জক চেহারা—আর একেবারে সেকেলে ধরণের ; যেন যবদ্বীপের হিন্দু আমলের লড়াইয়ের কাব্য বা ইতিহাসের পাতা থেকে নেমে এসেছে। আশে পাশে ষবদ্বীপীয় দরবারী পোষাক পরে নানা লোক মণ্ডপের সামন-সামনি দাড়িয়ে আছে, দেখলুম। বা দিকে পড়ে গামেলানের দল ; নানা রকমের যন্ত্ৰ-পাতি নিয়ে সব বসে রয়েছে। মন্ত বড়ো মণ্ডপটা মানুষে যেন গিশ-গিশ, করছে।