পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] উপত্যকার মধ্যে নামিয়া পড়িয় শক্রকে ভীষণ আক্রমণ করিল । রুশ গোলন্দাজেরা এতক্ষণ জামাদের কামান লক্ষ্য করিয়া গোল ছাড়িতেছিল, এবার তারা এই অসম্ভব-প্রত্যাশী ধাবমান সৈন্যশ্রেণীর উপর কামানের মুখ ঘুরাষ্টয়া দিল । সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ‘মেশিন্‌-গান’ ও কেল্লার পদাতিক একযোগে সেই দুঃসাহসী দলের উপর অগ্নি বর্ষণ স্বরু করিল। কিন্তু সেনাদল ক্ৰক্ষেপ করিল না, হুহুঙ্কারে ঝড়ের মত তার ছুটিয়া চলিল—কামান গঞ্জনের সঙ্গে তাদের সেই ভুঙ্কার মিশিয়া শত ব্রজ নির্ঘোষের মত শুনাইতে লাগিল । দানবের মত তারা লড়িতে লাগিল—আঙ্কত নায়কের খোজ লক্টল ন}, মুক্ত সঙ্গীর পালে তাকাইল না । মুম্ভ ও মরণাপপ্লের উপধ দিয়া ছুটিয়া বা লাফাইয়া জীবিতের অবশেষে ৭ এর নিকটে গিয়া পৌছিল । সমুখে প্রকৃতির অচল বfধা—খাড। পাহাড়ের আড়াল পিছনে সাথীদের অপেক গত প্রাণ –পাহাড়ের ধারে ছড়াইয় পড়িয়া আছে ; একদৃষ্ট্রে শত্রুর পানে চাহিয়া সেপানে তারা *rড়াইয়া রহিল—আর কিছুক্ত করিতে পারিল না । গোপাগুলির ধারাবস্ণের মাঝ দিয়া যখন তার; যাক্টতেছিল তখন মনে হইতেছিল যেন ফিকা পাণ্ডুর ছায়ার দল গঢ়ি ধোয়ার মাঝ দিয়া চলিয়াছে । দেখ। গেল তাদের মধ্যে কেহ কেহ অতিকায় গোলার ঘায়ে শূন্তে উড়িতেছে । তাদের দেহ তুলিয়া লওয়ার পর দেখা গেল কোনো কোনো সৈনিকের গায়ে আঘাতের চিহ্নমাজ নাই, কিন্তু গায়ের চামড়া আগাগোড়া বেগুনে গুইয়া গেছে ৷ দেহ উদ্বে উৎক্ষিপ্ত হইয়া সজোরে ভুমির উপর পড়ায় এমন হইয়াছে । প্রকাগু মন্দিরের ঘণ্টাকে একটা আলপিন দিয়া ঘা দিবার চেষ্ট যেমন ব্যথ হয়, শক্রর প্রবল বাধার মুখে আমাদের গোলাবর্ষণের ফলও তেমনি হইল । এমনিভাবে চলিলে হয়ত আমরা কিছুই করিতে পারিতাম না । তাই নিঃশেষে ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা সত্ত্বেও আমাদের শেষ চেষ্টা করিতে হইল । ব্রিগেডিয়ারজেনারেল শীঘ্রই আদেশ দিলেন— এই যুদ্ধের সূচনা হইতে নায়ক ও সৈনিকদের পোর্ট-আধারের ক্ষুধা J9) ) বিক্রম উচ্চ প্রশংসার যোগ্য । জাজ অপরাহ্ন পাঁচটায় তাইপোশানের পূর্ব দিকে আমাদের ব্রিগেড শক্ৰকে আক্রমণ করিবে। সমগ্ৰ গোলম্বাজবাহিনী তোপ দাগিযে, তার ফলে সুযোগ উপস্থিত হইলেই বঁ। দিকের দল দ্রুতগতি আক্রমণ করিয়া শক্রকে অভিভূত করিয়া; পরাস্ত করিবে । তখন তোমার রেজিমেণ্ট তোমাদের সমুখের শত্রুর ঘাটি অধিকারের প্রাণপণ চেষ্ট্র। অবশ্য করিবে আশা করি । কিছুক্ষণ পরেই এক তরুণ সেনানায়কের আবির্ভাব— তার হাতে এক বোতল বাঁয়ার । আগের দিন থেকে পানাহার জোটে নাই বলিলেও চলে, যুদ্ধক্ষেত্রে সেই বীয়ারের বোতল এক অপূৰ্ব্ব দৃত। ভাবিতে লাগিলাম, এ ব্যক্তি কে হইতে পারে । নিকটে আসিলে তাহাকে চিনিলাম—দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নের লেফটেন্যান্ট কান । “কেমন, আজব চাঁজ নয় কি এই বীয়ার ? কাল থেকে বেণ্টে এই বোতল বয়ে বোড়াচ্ছি শক্রর এলাকায় ‘বান্‌জাই পান করার জন্তে ! এস ভাই সব, এক সঙ্গে পান করি—-বিদায়ের পাত্র ! তোমাদের কাছে থেকে অনেক স্নেহ পেয়েছি—ঠিক করেছি আজ স্বন্দরভাবে মরব• • • এমনি সব কথা তরুণ নায়ক খুব ফুষ্ট্রির সঙ্গে বলিতে লাগিল, কিন্তু সে যে রহস্য করিতেছে না তাহা কারও বুঝিতে বাকি রহিল না । অ্যালুমিনিয়াম পাত্র সোনালী স্বরায় পূর্ণ করা হইল, তারপর সেই পাত্ৰ সকলের হাতে হাতে ঘুরিয়া আসিল ! পান করার সময় সকলের মুখে একটু মান হাসি খেলিয়া গেল । তারপর লেফটেন্যান্ট কান খালি বোতলট। তুলিয়া ধরিয়া হাকিল, সকলের কুশল প্রার্থনা করি । তারপর মুত সৈনিকদের কৰর দিবার জন্য ছুটিয়া চলিয়া গেল। কেমন করিয়া বুঝিব সেই তার শেয বিদায় ? শত্রুর এলাকায় ‘বান্‌জাই’ ইঞ্চিবার আনন্দ লাভ করার আগেই সে মৃত্যুর গহনে প্রবেশ • করিল। পরে শুনিয়াছিলাম, মৃতের কবর দেওয়ার কাজ তদারক করার সময় সে বলিয়াছিল, “ওদের ওপর ভালো করে” মাটি চাপাও, কারণ অামার পালাও এল বলে’ ”