পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ৷ অপরাজিত b'8& বৈশাখের প্রথমেই লীলা তার দেওরের সঙ্গে নিশ্চিশিপুরে জাসিল । দুই বোনে অনেকদিন পরে দেখা, দুই জনে গলা জড়াইয়া কাদিতে বসিল : অপুকে লীলা বলিল—তোর মনে যে এত ছিল, তা তখন কি জানি ? তোর কল্যাণেই বাপের ভিটে আবার দেখলুম, কখনও আশা ছিল না ধে আবার দেখব । খোকার জন্তু কাশী হইতে সে একরাশ খেলনা ও খাবার আনিয়াছে, দিন কয়েক মহা খুলির সহিত পাড়ায় পাড়ায় ঘুরিয়া সকলের সঙ্গে দেখাশুনা করিল। ২ অপু এক একদিন বৈকালে ছেলেকে লইয়া নৌকায় খাবরাপোতার ঘাট পৰ্য্যন্ত বেড়াইতে যায়। প্রকৃতির সঙ্গে ভাল করিয়া পরিচয় করাষ্টয়া দিতে হইবে ছেলেকে । নদীজলের আদ্র স্বগন্ধ উঠে, তেঁতুলতলার ঘাটের পাশে দক্ষিণদেশের ঝিল্পকতোলা বড় নৌকা বাধা, হাওয়ায় আলকাংরা ও গাবের রস মাখানো বড় ডিঙিগুলার শৈশবের সেক্ট অতি পুরাতন বিশ্বত গন্ধ-নদীর উত্তর পারে ক্রমাগত নলবন, গুকড়া ও বন্তেকুন্ডোর গাছ, ঢালু ধাসের জমি ফুলের কিনারা ছু ইয়া আছে, মাঝে মাঝে ঝিঙে পটলের ক্ষেতে উত্তরে মজুরের টোকা মাথায় নিড়ান দেয়, এক এক স্থানে নদীর জল ঘন কালো, নিথর, কলার পাটীর মত সমতল— যেন মনে হয় নদী এখানে গহন, গভীর, অতলস্পশ্ল,— ফুলেন্ডর উলুখড়ের মাঠ, আকন্দবন, ডাসা খেজুরের কাদি ফুলানো খেজুর গাছ, উইঢিবি, বকের দল, উচু শিমুল ডালে চিলের বাস-সবাই দূরের মাঠের দিক হইতে বড় এক ঝণক শামফুট পাপী রোজ এ সময় মধুখালির বিলের দিকে যায়—একটা বাব লাগাছে অজস্র বনধুবুল ফল জুলিতে দেখিয়া খোকা একদিন আঙুল দিয়া দেখাইয় বলিল—ওই দেখ বাবা, সেই ষে কলকাতায় আমাদের গলির মোড়ে বিক্ৰী হয় গায়ে সাবান মাখবার জন্মে, কত ঝুলচে দেখ, ও কি ফল বাবা ? অপু কিন্তু নিৰ্ব্বাক হইয়া বসিয়া ছিল । কতকাল সে এ সব দেখে নাই !-পৃথিবীর এই মুক্ত স্বরূপ তাহাকে যে আনন্দ দেয়, সে আনন্দ উগ্রবীধ্য স্বরার মত নেশার ঘোর জানে তাহার শিরার রক্তে, তাহ অভিভূত করিয়া ८करण, चाष्झछ कब्रिब्रॉ cयु८ण, डांश चय4नौञ्च । ऐश८णब्र هد-ــح. د : গোপনৰাণী শুধু তাহারই মনের কানে কানে ষে মুখে তাহা বলিয়া বুঝাইবে সে কাহাকে ? দূর গ্রামের জাওরা বাশের বন অন্ত-জাকাশের রাঙা পটে অতিকায় লায়ার পাখীর পুচ্ছের মত খাড়া হইয়া আছে, এক ধারে খুব উচু পাড়ে সারি বাধা গাঙ শালিকের গৰ্ত্ত, চারি ধারে কি অপূৰ্ব্ব শুামলতা, কি সান্ধ্য ঐ ! কাজল বলিল—বেশ দেশ বাব!—ন ? —তুই এখানে থাকৃ খোকা-আমি যদি রেখে যাই এখানে, থাকৃতে পারবি নে ? তোর পিসিমার কাছে থাকৃবি, কেমন তো ? কাজল বলিল—হঁ্য, ফেলে রেখে যাবে বৈ কি ? অামি তোমার সঙ্গে যাব বাবা । و& {w2 রাণীর যত্নে আদরে সে মুগ্ধ হইয়া গেল। সতুদের বাড়ীর সে-ই আজকাল কত্রী, নিজের ছেলেমেয়ে হয় নাই, ভাইপোদের মানুষ করে । অপুকে রাণী বাড়ীতে আনিয়া রাখিল—কাজলকে দুদিনে এমন আপন করিয়া লইয়া ফেলিয়াছে যে, সে পিসিম বলিতে অজ্ঞান—দিদিমার মৃত্যুর পর এত আদর আর কাহারও নিকট সে পায় নাই । রাণীর মনে মনে ধারণা অপু শহরে থাকে যখন, তখন খুব চায়ের ভক্ত,-দুটি বেলা ঠিক সময়ে অপুকে চা দিবার জন্য তার প্রাণপণ চেষ্টা । চায়ের কোনো সরঞ্জাম ছিল না, লুকাইয়া নিজের পয়সায় সতুকে দিয়া নবাবগঞ্জের বাজার হইতে চায়ের ডিস্-পেয়ালা আনাইয়া লইয়াছে—অপু চা তেমন খায় না কখনও, কিন্তু এখানে সে সে কথা বলে না । ভাবে—ধত্ব করচে রাণুদি, করুক না । এমন যত্ব আর জুটবে কোথায় অদৃষ্টে । তুমিও যেমন ! দুপুরে একদিন খাইতে বসিয়া অপু চুপ করিয়া চোখ বুজিয়া বসিয়া আছে। রাণীর দিকে চাহিয়া হাসিয়া বলিল—একট। বড় চমৎকার ব্যাপায় হ’ল—দেখ, এই টকে ধাওয়া এচিড়-চচ্চড়ি কতকাল খাই নি— নিশ্চিন্দিপুর ছেড়ে আর কখনও নয়—তাই মুখে দিয়েই ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল রাখুদি–