পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন রাজপুত-সমাজে বিবাহ-পদ্ধতি ঐঅমৃতলাল শীল উত্তর-ভারতে মুসলমানদের রাজ্য স্থাপিত হইবার পর, মুসলমান ঐতিহাসিকরা রীতিমত ইতিহাস রচনা করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। তাহার পূৰ্ব্বে প্রত্যেক হিন্দু রাজার সভার চারণ বা ভাট কবির রাজবংশের যোদ্ধাদের কীৰ্ত্তিগাথা রচনা করিতেন ; প্রসঙ্গক্রমে তাহাতে অন্ত সমসাময়িক রাজবংশের, বা যাহাদের সহিত যুদ্ধ হইয়াছিল তাহাজের, বর্ণনাও থাকিত । এই কবিতাগুলিই সেকালের বিশ্বাসযোগ্য ইতিহাস । এই কবির প্রায়ই ভ্রমণশীল ছিলেন, ক্ষত্রিয়সমাজে তাহাদের অবারিত স্বার ও ষথেষ্ট সম্মান ছিল । তাহারা যখন যে-দেশে যাইতেন সেখানে রাজপুত সামাজিক সভাতে আপনার রাজার ও অন্যাঙ্ক রাজপুত যোদ্ধাদের যুদ্ধ-সংবাদ ও কীৰ্ত্তিগাথা শুনাইতেন ও সে-দেশের সকল বংশের সংবাদ সংগ্ৰহ করিতেন । দেশের লোকের আগ্রহ করিয়া তাহাদের গান শুনিত ও আপনাদের সংবাদ দিত। এইরূপে কোন যোদ্ধা কোন প্রশংসনীয় কার্য্য করিলে মতি অল্প সময়ে সে-সংবাদ সমস্ত ক্ষত্রিয়-সমাজে প্রচারিত হইয়। যাইত । ক্ষত্রিয়-সমাজে কাহারও বিবাহযোগ্য কন্য। থাকিলে এইরূপ ংবাদ পাইয় সে জামাতা নিৰ্ব্বাচন করিত, ও কীৰ্ত্তিমান যুবকদের গ্রামে ঘটক বা টাকা পাঠাইত । এইরূপ জনেক গাথাই নষ্ট হুইয়া গিয়াছে, তথাপি যেগুলি পাওয়া যায়, তাহাদের মধ্যে চন্দবরদাই রচিত পৃথ্বীরাজ রাসোর স্থান অতি উচ্চে, তাহাতে ঈশীয় দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ চরণে আজমীর-পতি বা সম্ভরীনাথ পৃথ্বীরাজ চোছানের ৰীত্তি ও পতন এবং দিল্লীতে মুসলমান রাজ্যস্থাপনের সবিস্তার বর্ণনা আছে, ও তাহার সমসাময়িক অস্ত সকল দেশের রাজাদের কথা সংক্ষিপ্তভাবে জাছে । যে পুস্তক এখন রাসে নামে পরিচিত, তাহাতে প্রক্ষিপ্ত ও বিকৃত অংশ এত বেশী যে, প্রাচীন পুস্তকে ইহার ভিতর কতটুকু স্থল খুজিয়া পাওয়া কাৰ্য্যতঃ অসম্ভব। ১৮০০ ঈশান্ধের কাছাকাছি টড ( Tod ) যে রাসো পাইয়াছিলেন, তাহ। হইতে কোন কোন অংশ তাহার রাজস্থানে উদ্ধৃত করিয়াছেন, এখনকার কাশীর বিশুদ্ধ সংস্করণে লেসকল অংশ নাই বা সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে বর্ণিত। কোনট। চন্দবরদাইয়ের রচনা জানিবার উপায় নাই । সে সময়ে চিতোর-পতি গিহেলাট-বংশীয় মহারাণ ছাড়া উত্তর-ভারতে আজমীরে পৃথ্বীরাজ চোহান, কনোজে জয়চন্দ কমধ্বজ, মহোবাতে পরমর্দিদেব | পরমাল ] চন্দেল, ও গুজরাটে সোলঙ্কী-বংশীয়রাই প্রবল রাজা ছিলেন ; ইহার মধ্যে পৃথ্বীরাজ ও জয়চনা উভয়ে চক্রবর্তী সম্রাট উপাধির দাবি করিতেন । মহোবার সেনাপতি ও সামস্ত, বনাফর-বংশীয় দুই ভাই, আলহী ও উদনের ( উদয়সিংহ ) যুদ্ধ বর্ণনা করিয়া ঐ রাসোতে “মহোবা সময়” নামক এক অধ্যায় আছে। ইহা ছাড়া আলছার গান নামক স্বতন্ত্র এক গাথা রচিত হইয়াছিল, কিন্তু সে গানগুলি কখনও লেখা হয় নাই। মুখেমুখেই রক্ষিত হইয়াছিল বলিয়া আধুনিক গান এত পরিবর্তিত হইয়। গিয়াছে যে, প্রাচীন পুস্তকে কি ছিল এখন জানিবার উপায় নাই। তথাপি ঐ গানে কয়েকটি বিবাহের.ও যুদ্ধের বর্ণনা আছে, তাহ হইতে সেকালের বিবাহ-পদ্ধতি কতক কতক বুঝিতে পারা ষায় ; সেই বিবাহ-পদ্ধতি সংক্ষেগে বর্ণনা করিতেছি । ভ্রমণশীল কবিদের গাথা শুনিয়া কঙ্কার পিতা বাঞ্ছনীয়যুবকদের এক ফৰ্দ্ধ করিতেন, ও আপনার নির্বাচিত বরদের বাট টাকা পাঠাইল্প দিতেন। টীকা প্রায়ই কম্ভারভ্রাতা লইয়া যাইত, ভ্রাতা না থাকিলে কোনও আত্মীয়কে ধর্শ্বভ্রাতারূপে বরণ করিয়া, টীকার ( ক্ষমতা-মত ) যৌতুক তাহার-বহিত পাঠান হইত। টাঙ্ক প্রথা এখনও যুক্তপ্রদেশে প্রচলিত আছে, উহা বাংলার পাক্যদেখা স্থানীয় ; পাৰু স্থির হইলে তাহার কপালে টকা দিয়!