পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ー)○やり বৈষ্ণবসম্প্রদায় । বিদ্যমান ছিল ; কিন্তু গৌড়ীয় বৈষ্ণব= সম্প্রদায়ের প্রাধান্তই সৰ্ব্বতোভাবে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। বাঙ্গালীর ভক্তিভাব দেখিয়া এতদঞ্চলবাসীগণ বিস্মিত হইয়াছিলেন । ভক্তমালকার নাভাজী সেই ভক্তি ভাব ও ভগবৎপ্রেম সম্যক বর্ণন করিতে ন পারিয়া লিখিয়া ছিলেন “যে ভাব ঔর প্রেম উস্ দেশকে রহনেবালে7-ক। শ্রীবৃন্দাবনমে দেখা, লিখা নহী যা সঞ্জা ।” কথিত আছে ইহার। বৃন্দাবনে অtসিয়। এখানকার অধিষ্ঠাত্রী বৃন্দাদেবীর মন্দির সর্বপ্রথম নিৰ্ম্মাণ করেন । সে মন্দির মুসলমান-অত্যাচারে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় । ব্ৰজবাসীরা বলেন সে মন্দির বর্তমান রাসমণ্ডলের সন্নিহিত সেবাকুঞ্জের মধ্যে নিৰ্ম্মিত হুইয়াছিল । সম্রাট আকবরের শান্তিময় শাসনকালে বাঙ্গালী বৈষ্ণবগণ এখানে বহু সুন্দর সুন্দর সুবৃহৎ মন্দির নিৰ্ম্মাণ করেন । কথিত আছে একবার সম্রাটু আকবর বৃন্দাবনবাম দেখিতে গিয়া তথায় মন্দিরনিৰ্ম্মাণকাৰ্য্যে বাঙ্গালীদিগকে উৎসাহ ও সহায়তা দান করেন । মোগলসম্রাটের বৃন্দাবনতীর্থদর্শনের স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ তখন চারিটি মন্দির অতি সত্বর নির্মিত হয় । বৃন্দাবনের সুপ্রসিদ্ধ গোবিন্দদেব, গোপীনাথ, মদনমোহন ও যুগলকিশোরের মন্দিরই উলু চারিটি স্মারক মন্দির । তন্মধ্যে গোবিন্দদেবের মন্দি ই সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ । মথুরার পুরাতত্ত্বের প্রসিদ্ধ লেখক গ্রাউস, সাহেবের মতে ইহা উত্তর-ভারতের শ্রেষ্ঠ হিন্দুমদের। ফাগুসন সাহেবের মতে ইহা ভারতের শ্রেষ্ঠ মন্দিরের মধ্যে একটিমাত্র মন্দির যাহ। দেখিয়া যুরোপীয় স্থপতিরা সৌধনিৰ্ম্মাণ সম্বন্ধে নুতন জ্ঞানলাভ করিতে পারে । ১৫৯০ অব্দে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় । এই মন্দিরশীর্ষস্থ আলোকরশ্মি দিল্লীর ময়ূরসিংহাসন হইতে দৃষ্টিগোচর হইত। ধৰ্ম্মান্ধ মোগলসম্রাটু অণরঙ্গজেব উহা দেখিতে পাইয়া মন্দিরের চূড়াটি ভগ্ন এমন কি মন্দির ধ্বংস করিয়া তাহার উপর মসজিদ নিৰ্ম্মাণের সঙ্কল্প করেন । সম্রাটের উদ্দেশু বুঝিতে পারিয়া আগ্রার প্রধান প্রধান হিন্দুগণ গুপ্তচর দ্বারা বৃন্দাবনের গোস্বামীগণের নিকট সংবাদ পাঠান। এই সংবাদে র্তাহার। কালবিলম্ব না করিয়া রাজপুতানার প্রবলপ্রতাপ রাজা প্রবাসী—পৌষ, ১৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড মহারাজাগণের সহায়তায় প্রধান প্রধান বিগ্রহগুলি অতি গোপনে ও সাবধানে স্থানান্তরিত করিতে থাকেন । অম্বরপতি অতি গোপনে গোবিন্দজীর মূৰ্ত্তি মন্দির হইতে বাহির করিয়া ' প্রথমে কাম্যবনে, পরে অম্বর হইতে পাঁচ ক্রোশ দুরে বড়-গোবিন্দপুর গ্রামে এবং শেবে चषब्र নগরের উপকণ্ঠে ঘাটি নামক স্থানে আনিয়া প্রতিষ্ঠিত করেন। অতঃপর গোপীনাথ, মদনমোহন, রাধাবিনোদ, রাধাদামোদর প্রমুখ অন্যান্ত বিগ্রহসহ গোস্বামীগণ ক্রমে ক্রমে জয়পুরে স্থানান্তরিত হন। মথুরা হইতে কেশবদেবের বিগ্ৰহ আনাইয়া মিবারপতি মহারাণা রাজসিংহ প্রাচীন সিয়াড় আধুনিক নাথদ্বারে নাথজী নামে প্রতিষ্ঠিত করেন। গোকুল হইতে গোকুলনাথ ও গোকুলচন্দ্ৰম মূৰ্ত্তি এবং মথুরা হইতে মথুরানাথকে কোটায় রক্ষা করা হয়। মহাবন হইতে বালকৃষ্ণমূৰ্ত্তি আনাইয়। সুরাটে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এইরূপে জয়পুর, মিবার, কোটা, কেরেীলী, ভরতপুর এবং রাজপুতানার নানা স্থানে মুসলমান-অত্যাচারের হস্ত হইতে আত্মরক্ষা করিবার জন্য মন্দিরের অধিকারী সেবাইত, পূজারী ও গোস্বামীগণ এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বৈষ্ণবগণ এই সময় স্ব স্ব উপাস্য দেবমূৰ্ত্তি লইয়া পলায়ন করেন । যাহা অবশিষ্ট ছিল তাহ আরঙ্গজেব মন্দিরাদি লুণ্ঠন করিয়া আগ্রার নবাব কুদসিয়া বেগমের মসজিদে উঠিবার সোপানতলে প্রোথিত করেন । এই ঘটনা ১৬৬৯ খৃঃ অব্দে ঘটিয়াছিল। এই সময় হইতে জয়পুরে বাঙ্গালীর দ্বিতীয় উপনিবেশের স্বত্রপাত হয়। গোবিন্দজীর পুজারী গোস্বামীদিগের আদিপুরুষ ঐরূপ গোস্বামী। জয়পুরে রক্ষিত একখানি পুরাতন তালিকা হইতে জানা যায়ু শ্রীরূপ গোস্বামীর পর তাহার শিষ্য গদাধর পণ্ডিত, তাহার অবর্তমানে তাহার শিষ্য অনন্তাচাৰ্য্য গোস্বামী এবং তাহার পর তৎশিষ্য হরিদাস গোস্বামী ক্রমান্বয়ে গদির অধিকারী হন। কথিত হইয়াছে হরিদাস গোস্বামীর সময় বৃন্দাবনে গোবিন্দদেবের মন্দির fনৰ্ম্মিত হয় এবং তাহার অধস্তন ৫ম গোস্বামী কৃষ্ণচরণের গদি অধিকারের কালে ( ১৬৫৫—১৬৭৯ ) গোবিন্দেবের মূৰ্ত্তি বৃন্দাবন হইতে কাম্যবনে অস্বরাৰি