পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] তাহার শিক্ষ। বাস্তবিক সফল হইল। তখন এতটুকু ছোট তৃণও তাহার কাছে আর তুচ্ছ জিনিষ থাকে না, সেটি তখন উদ্ভিদ্‌ জাতির ক্রমবিকাশের দীর্ঘপরম্পরায় একটি শৃঙ্খলস্বরূপ হইয়। তাহাকে সমস্ত উদ্ভিদজগতের একট। বিচিত্র কাহিনী স্মরণ করাইয়া দেয়। 'অজ্ঞের কাছে যাহ্বা ক্ষুদ্র মূক ও অন্ধ, বিজ্ঞের কাছে তাহাই বৃহৎ মুখর ও জ্যোতিষ্মান হইয়। দেখা দেয় । অজ্ঞের কাছে যাহ। শুষ্ক কুৎসিত ও নির্মম, বিজ্ঞের নিকট তাহাই সরস মুন্দর ও প্রেমপূর্ণ। বিশ্বের সহিত মানুষের সহানুভূতি যত সম্পূর্ণ করিয়া তুলিতে পারা যাইবে, ততই তাহার শিক্ষা পূর্ণতর হইয়া উঠিবে। যতই মানুষ বুঝিয়া উঠিতে পারিবে যে এই বিশ্বের মঙ্গলকেন্দ্রের চারিদিকেই তাহার আপনার জীবনের মঙ্গল নিয়ত ভ্ৰাম্যমান হইতেছে, ততই সে বিশ্বকে ক্রমশঃ আপনার বলিয়। মনে করিতে শিখিবে, বিশ্বের জন্ত খাটিতে শিখিবে, এবং বিশ্বের সমস্ত গোপন কথা ও নিভূততত্ত্বের অধিকারী হইবার জন্য প্রাণপণে চেষ্ট। করিবে, এবং বিশ্বও ততই তাহার আরও আরও নিকটতর হইয় তাহার নিকট আপনার সমস্ত গুপ্তনিধি উন্মুক্ত করিয়া দিবে, ও তাঁহারই গানে আপনার সমস্ত স্তুতিবাদকে মুখর দেখিয়া আরও আরও স্কিঞ্চোজম্বুল মুখবর্ণের প্রসন্নছবিতে মুগ্ধ ভক্তমণ্ডলীর নয়নরাজিকে আনন্দনিষিক্ত করিয়া তুলিবে । কিন্তু বিশ্বের সঙ্গে এই প্লেমের বন্ধনটিকে দৃঢ়ভাবে অবিযুক্ত রাখিতে হইলে বিশ্বের সম্বন্ধে কিছু জান চাই । একটি একটি করিয়া তাহার নূতন তথ্য যতই আমরা জানিতে পারিব ততই তাহার সঙ্গে আমরা ক্রমশঃ ক্রমশঃ ঘনিষ্ঠ হইতে পারিব । সেইজন্যই শিক্ষার প্রথম স্তর হইতেই আমরা জ্ঞান সঞ্চয়ের উপযোগিতা দেখিতে পাই । তাহা ন হইলে শুধু কতকগুলি সংবাদ সংগ্রহকে কখনও শিক্ষা বলা যায় না । বিভিন্ন দেশীয় বিচ্ছিন্ন কতকগুলি খবরের স্তস্তে যে মস্তিষ্ক পরিপূর্ণ তাহ প্রাত্যহিক খবরের কাগজের মতনই নিঃসার, তাহা ক্ষণপরিচিত পথিকের মুহূর্তের তৃষ্ণ মিটাইতেই শুকাইয় পড়ে, তাহ প্রতিদিনের নিত্য পান ভোজন যোগাইয়। ওজস্বী, বলিষ্ঠ ও অমৃত করিয়া উঠাইতে পারে না। যে শিক্ষার আদর্শ এমন শিক্ষার আদশ やo> করিয়া ধরা হয় যে তাহাতে পৃথিবীর স্থগুলির সম্বন্ধে কর্তক গুলি শুষ্ক কথা শিপাইয় দেওয়া ছাড়া গভীর রসভিত্তি র মধ্যে প্রবেশের কোন উপায় রাখা হয় না, তাহা মানুষকে বাস্তবিকই ক্ষু ও অকৰ্ম্মণা করিয়া গড়িয়া .তোলে। যে শিক্ষা সরসভাবে মানুষের সমস্ত বৃত্তিকে রসে প্রচুর করিয়া ফুটাইয়া তুলিতে ন পরিবে তাহ। নিশ্চয়ই তাহার বৃস্তকে শিথিল করিয়া দিয়া বিশ্বের সঙ্গের ঘনবন্ধনকে শিথিলতর কবিয়া দিবে। মানুষের সকল সময়েই এ কথা মনে করিয়া রাখা উচিত যে খরবলদ মাকুষের ভার বচন করিবার জন্য জন্মগ্রহণ করিতে পারে, কিন্তু মাতুল আর কিছুরই তার বহনের জন্য জন্মে নাই, ত সে-ভার যে-রকমেরই হউক । সে নিজেই নিজের উদেশ্য, নিজেই নিজের চরম, সে আর কিছুরই উপায় হইবার জন্ত আসে নাই । তাহার নিজের মধ্যেই নিজের আদর্শের অনন্ত স্থত্র এমন সুন্দরভাবে গুটtষ্টয় রকিয়াছে যে, সে তাহাই অবলম্বন করিয়া অনন্ত আকাশে অনন্ত কালের জন্য উদ্ভট্টীন হইতে পারিবে, আর কাহারও অপেক্ষা করিতে হইবে না। তাহার জীবনের মধ্যে বিশ্বের সমস্ত সার স তাটি এমনই একটি রূপকের প্রসনৰ্ত্তিত ছন্দে বাধা পড়িয়া গেছে, ষে, জীবনের পর জীবন বসিয়া তাহাকে কেবল নিজেকেই ব্যাখ্যা করিয়া চলিতে হইবে । জগতুের সমস্ত বাধনের গ্রস্তি তাহার মধ্যে আসিয়া এমন করিয়া জটিল হইয়াছে যে, তাহার নিজের সেই গ্রন্থি উন্মুক্ত কৰিলেই বিশ্বের সমস্ত গ্রন্থি ধীরে ধীরে উন্মোচিত হইয়। যাইবে । তাহার অন্তরের মধ্যে এমন একটি চিরজ্যোতি দেদীপ্যমান রহিয়াছে, যে “ন তত্র স্বর্য্যে। ভাতি ন চন্দ্র তারকং নেমা বিদ্যুতো ভাস্তি কতোহয়মগ্নিঃ ।" সে যদি তাহার সেই আলোক তাহার নিজের দিকে ফিরাইয়া নিজেকে আলোকিত করিয়া তুলিতে পারে, তবেই স্বর্যোর অন্ধজ্যোতি আলোকোন্মেষিত হুইয়া জাগিয়া উঠিতে পরিবুে। বিশ্ব তাহাকে আপনার মনীষী কবি করিয়া স্থষ্টি করিয়াছেন, তাই তাহার অন্তরের প্রত্যেক তন্ত্রীটি সহজ ভাবে বিশ্বের প্রত্যেক রাগিণীতে ঝঙ্ক ত হইয় উঠিতেছে ; তাহার জন্য কোনও চেষ্টা বা যত্বের অপেক্ষ নাই । সেইজন্যই সে বিশ্বের সঙ্গে এমন