পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা | কুষকগণের সরলগীতের মধ্যে শুনিতে পাওয়া যায়। ৫০ বৎসর পূৰ্ব্বেও ভারতের হিন্দু মুসলমান নিউবিয়া সুডান ও মিশরের নানাস্থানে প্রতাপশালী ব্যবসায়ী জাতিরূপে বিবেচিত হহঁতেন । ইহঁাদের,ব্যবসায় এক্ষণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হইয়াছে। ইউরোপীয় বণিকগণ র্তাহাদের স্থান অধিকুরি করিয়াছেন। আজকালও মিশরে বোম্বাই, গুজরাত, সিন্ধু প্রভূতি দেশের, হিন্দু ও মুসলমান ব্যবসায়ীর বিশেষ প্রতিষ্ঠিত । আমাদের এখানকার গুজরাতী বন্ধুগণের কারবার মিশরের নানা কেন্দ্রে বেশ চলিতেছে । এতদ্ব্যতীত ইহঁারা জি বুন্টর, মণ্ট, জাপান, যবদ্বীপ প্রভূতি জগতের নানাস্থানে ব্যবসায় চালাইতেছেন । ফরাসীভাষা জানা থাকিলে মিশরে চলাফেরায় বিশেষ সুবিধা হয়। মিশরবাসীর মাতৃভাষা আরবী । জনসাধারণ আরবীতে কথা বলে । কিন্তু শিক্ষিত ও ভদ্রব্যক্তিরা সকলেই ফরাসী জানেন। প্রবীণ ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই ইংরেজী জানেন না দেখিতেছি । ইহঁাদের সঙ্গে আলাপ করিতে যাইয়া সৰ্ব্বদা দোভাষীর সাহায্য লইতে হইয়াছে । ইহারা উচ্চশিক্ষা ও নব্যসভ্যতার দ্বারস্বরূপ ফরাসীভাষা অর্জন করিয়াছেন । ইহার। ইউরোপকে ফরাসী জাতির ভিতর দিয়া চিনিয়াছেন। আমরা যেমন ইংলণ্ডের সাহায্যে পাশ্চাত্য বিজ্ঞান ও সভ্যতার পরিচয় পাইয়াছি ; ইহাপু সেইরূপ ফরাসীজাতির সাহিত্য, শিল্প ও দর্শনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধে আসিয়া আধুনিক জগতের হাবভাব, আদর্শ ও কাৰ্য্যপ্রণালী আয়ত্ত করিয়াছেন। আমরা ”বিলাতফেব্ৰুত” বললে যাহা বুঝিয়া থাকি মিশরবাসীরা “আল ফ্রাঙ্কা” শব্দ ব্যবহার করিয়া সেইরূপ মনোভাব প্রকাশ করে। যেসকল মিশরা পাশ্চাত্যভাষায় কথা বেশী বলে, বিদেশীয় কায়দায় জীবনযাপন করে এবং ইউরোপীয় গলে বেশভূষা করিতে ভালবাসে, সেইসকল অনুকরণপ্রিয়, চরিত্রহীন, ব্যক্তিত্বহীন লোককে এখানে **অণল ফ্রাঙ্কা’ বলা হয়। অবশ্য আলা-ফ্রাঙ্ক। অল্পদিন মাত্র এইরূপ তিরস্কারে পরিণত হইয়াছে। পরাস্ত্রকরণ ও পরাস্তুবাদ মিশরবাসীর এক সঙ্গে কবরের দেশে দিন পনর V)సె মধ্যে সম্প্রতিমাত্র দুৰ্ব্বলতার আকার ধারণ করিয়াছে। একশত বৎসর পূৰ্ব্বে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে fমশরের খেদিভ ছিলেন কৰ্ম্মবাব মহম্মদ আলি । তিনি স্বচেষ্টায় ইউরোপের আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান মিশরে সুবৰ্ত্তন ,কfরতে চেষ্টিত হন । তথম ও ফ্রান্সই ইউরোপের অনেকটা হওঁ-কৰ্ত্ত। বিধা তা । দিগ্বিজয়ী শক্তিশিষ্য নেপোলিয়ান তখন জগৎকে ভাঙ্গিয়া চুরিয়া নূতন ন্তি প্রদান করিতে প্রবৃত্ত । মহম্মদ আলি নেপোলিয়ানের আদর্শে জীবন গঠন করিতে চাহিয়াছিলেন । তুরস্কের সুলতানকে মিশর হইতে বহিস্কৃত করা তাহার সাধ ছিল । এমন কি স্বয়ং তুরস্কের সুলতানপদে অধিষ্ঠিত হওয়াও ঠ{হার প্রাণের আকাজক্ষা ছিল । তুরস্ক তখনও সুবিস্তৃত রাজ্য। এই রাজ্যকে ভিন্ন ভিন্ন স্বস্ব প্রধান খণ্ডে বিভক্ত করা চউরোপীয়ের পছন্দই করিতেন । বিশেষতঃ নেপোলিয়ান ও ফরাসীরা মিশরকে প্রবল করিয়া তুরস্কের খৰ্ব্বতাসাধনে উৎসাহী ছিলেন । এইজষ্ঠ মহম্মদ আলির সঙ্কল্পে ফরাসীরা সাহায্য কfরতে কুষ্ঠিত হন নাই । te মহম্মদ আলি ফরাসী পণ্ডিত, বৈজ্ঞানিক, এঞ্জিনীয়ার, ডাক্তার, শিল্পী, কারিগর ইত্যাদি সকল প্রকার লোক স্বদেশে আমদান করিতে লাগিলেন । কিন্তু তাহার এই “আল-ফ্রাঙ্কা’ আন্দোলনে বিন্দুমাত্র পরাধীনতা, দুৰ্ব্বলতা এবং দশস্যের চিহ্ন ছিল না। জাতীয় স্বার্থ পুষ্ট করিবার জগুই f৩fন স্বতন্ত্র ও স্বাধীনভাবে ফরাসীজাতির পাণ্ডিত্য স্ব-সমাজে নিযুক্ত করিয়ছিলেন। স্বদেশ ও স্বধৰ্ম্মের গৌরববিস্তার, আরবী ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতি ও প্রসার এবং মিশরবাসীর রাষ্ট্রীয় ও সববিধ দক্ষতা বৰ্দ্ধনই তাহার সকল কৰ্ম্মের চরম লক্ষ্য ছিল । এই স্বদেশী আন্দোলনের সহায় স্বরূপই মহম্মদ আলি আলাফ্রাঙ্ক আন্দোলনের স্বত্রপাত করিয়াছিলেন। রুশিয়ার গৌরবপ্রতিষ্ঠাতা পিটারও রুশ জাতীয়-জীবনের উৎকর্মবিধানের জন্য এইরূপ বিদেশীয় জ্ঞানীদিগের সাহাধ্য লইয়াছিলেন। প্রশিয়ার ফ্রেড রিকও এই পথ ধরিয়াtছলেন । স্বীয় সমাজকে অবনত ও ক্ষুদ্র অবস্থা হইতে કરોડ ૭ গৌরবশালী করিয়া তুলিবার জন্য সকল কক্সবারই জগতের শক্তিপুঞ্জ এইরূপে নিজস্বার্থে ব্যবহার করিয়া থাকেন। এজন্ত তাহারা