পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ჯ)è আয়তন এত চওড়া যে তার মধ্যে দিয়ে হাতী ফুড়ে পাহাড়ের এপার ওপার হ’য়ে যেতে পারে। সুড়ঙ্গটির সামনে গেলে মনে হয় যেন একট। ঐরাবতের মত প্রকাণ্ড দৈত্য ভীষণ মুথব্যাদান করে অনন্তকাল ধরে তার উদরপূর্ণ আহারের প্রতীক্ষায় বসে রয়েচে ! সেই সুড়ঙ্গটির ভিতরে একধারে প্রবেশ পথের সম্মুথে পাহাড়ের গা থেকে জল চুইয়ে চুইয়ে নীচের পাথরের উপর পড়চে ! জল ক্রম|গত প’ড়ে পড়ে সেই স্থানটিতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে একটি গোল পাত্রের আকার ধারণ করেচে। সেখানকার সেই বিন্দু বিন্দু বারিপাতের মৃদু-গম্ভীর শব্দ চারি পাশের পর্বত প্রাচীর গুহা-গহবরে, বৃক্ষে অরণ্যে প্রতিধ্বনিত হ’য়ে দ্বিগুণতর বোধ হ'চ্চে,–যেন অনশনক্লিষ্ট গহ্বর-দৈত্যের দানবী ক্ষুধার তাড়নে তার অশ্রুবারি তার সমস্ত ধমনী শোনিতের নির্য্যাসের মত নিয্যন্দিত হ'চেচ ! আমরা সেথানকার যুগ-যুগাস্তের অনন্ত জলবিন্দুধারায় রচিত পাথরের শীতল জলপাএটি থেকে অঞ্জলি করে স্বচ্ছ ও অনাবিল জণ পানে সকল ক্লেশ দূর কর্কুসুম । এই স্থানটিকে একটি রেখার পাহাড়ের গায়ে খোদাই করে চিহ্নিত করা আছে। খুব সম্ভব গুহাবাসীরা এখানকার নিৰ্ম্মল জলই পান করতেন বলে স্থানটি শোভিত করার উদ্দেশ্যে এরূপ চিহ্নিত করে রেখেচেন। সুড়ঙ্গ পার হয়ে পুনরায় খানিকটা পাহাড়ে উঠলে পর যোগানারা ও সীতা বেঙ্গর নামক গুহ্যদ্বয়ের সাম্নে এসে পড়লুম। পথে একট। গুহা দেখতে পেয়েছিলুম কিন্তু সেটা মোটেই উল্লেখযোগ্য নয়। স্বাভাবিক গুহা থেকে আদিমকালে গুহাবাসীর তাদের বাসস্থান কি করে তৈরী কবৃতেন এটিকে তার একটি নিদর্শন বলা যেতে পারে। সীতাবেঙ্গর গুহাটিকে রক সাহেব সীতাবোঙ্গরা নামে অভিহিত করেচেন, কিন্তু ওদেশীয় লোকে বাসস্থানকে বেঙ্গর বলে এবং এই গুহাটির সেই হিসাবে নামটি সীতাবেঙ্গর। এই গুহাটিকে সহসা দেথলে একটা পাৰ্ব্বত্য প্রদেশের স্বাভাবিক পৰ্ব্বতগুহা বলে ভ্রম হয় কিন্তু তার অত্যন্তরটি দেখুলে সেটিকে স্বাভাবিক গুহা একেবারেই মনে হয় না। কেননা খোদাই করে ভিতরটা বাসের উপযোগ করে গঠিত। ডাঃ ব্লকও প্রবাসী-কাৰ্ত্তিক, ১৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড অপরাপর কয়েকটি প্রত্নতত্ত্ববিদের মতে এই গুহাটি ভারতের প্রাচীন নাট্যমন্দিরের একমাত্র নিদর্শন এবং গ্রীকদের প্রাচীন নাট্যমন্দিরের অনুকরণে তৈরী । গুহাটিব বাইরে চারকোনে চারটে বড় বড় ছিদ্র আছে। এর থেকে তার অনুমান করে স্থির করেছেন যে ঐ গৰ্ত্তের মধ্যে কাঠের খুটি দিয়ে যবনিকা টাঙাণ হত ; আর বাইরের দিকে অৰ্দ্ধবৃত্তাকার নীচে থেকে ক্রমশ উপরের দিকে গুহায় ওঠ বার যে সিড়ি আছে সেই সিড়িগুলি দশকদের বসবার মঞ্চাসনরূপে ব্যবহৃত হত । কিন্তু দ্বারের বাইরের দিকে অৰ্দ্ধবৃত্তাকার ভাবে সিড়িগুলি থাকায়, নাট্যমন্দিরের অভ্যন্তরে নট নটীদের অভিনয় দেখা সম্ভবপর নয় । দর্শকের পশ্চাতে নাট্যমন্দির এবং সম্মুথে দৃশুপটটি থাকার যে কি সার্থকতা আছে তা আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। গুহাটির দ্বারের বাইরে এমন প্রচুর দাড়াবার স্থান নেই, ধে, সেখানে নৃত্যে২সবাদি ঐ অন্ধবৃত্তাকার সিড়িতে বস্লে দর্শকেরা সামনে দেখতে পায় এরূপ ভাবে সম্পাদিত হতে পারও মনে করা খেতে পারে । সেথানটা আবার থাড় পাহাড় । তবে, অন্ত কোন উপায়ে যদি বাইরে কাঠের স্থায়ী মঞ্চের উপর অতিনয়ের ব্যবস্থা থাকৃত ত বলা যায় না। কিন্তু তারও কোনরূপ চিহ্ন পাওয়া যায় না । ডাঃ ব্লকের রিপোটেও এর উল্লেখ দেখিনি। আমাদের মনে হয় এই গুহাটি একটি স্বাভাবিক গুহা। প্রাচীনকালে এখানে ছোটখাট গানবাজনার স্থায়ী সভার জন্তে এবং বাসের জন্য দুই অর্থেই এটিকে এমনভাবে খোদাই করে তৈরী করেছে । আর বাইরে দুয়ারে রাত্রের জন্য কোন রকম আবরণ দেবার উদ্দেশুে ঐ গর্তগুলি গুহার প্রবেশ পথের চার পাশে তৈরী করেছিল। গুহাটির তিতরের উচ্চতা ছয় ফুট। কোন কোন স্থণে কিছু কমও আছে, সুতরাং ছাদ মাথায় ঠেকে । গুহার একেবারে ভিতরে দেয়ালের চারপাশটা উচু বেদী দিয়ে ঘেরা। এগুলির গঠন খুব স্থাপত্য বিজ্ঞান অনুমোদিত ত নয়ই বরং বেশ একটু কদৰ্য্য। একটা বড় নালী ঐ বেদীটির নীচে দিয়ে দেয়ালের দিকে চলে গেছে । মেঝের উপর কতকগুলি গৰ্ত্ত বেশ যত্নসহকারে কেটে তৈরী। এ সকলের উদেপ্ত