পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ) কি ছিল তা বলা যায় না। উল্লিখিত নালীটির বিষয় একটি মজার প্রবাদ স্থানীয় লোকের কাছে শুল্লুম । এই সীতাবেঙ্গর, গুহাটি যে পাহাড়ে অবস্থিত তার বিপরীত দিকে লছমন বেঙ্গর নামে কতকগুলি গুহ আছে। সেগুলিতেও লোকের পূৰ্ব্বে বাস ছিল। সে সবগুলিতেও বেদীর শত বসবার এবং শোবার স্থান ভিতরে থোদাই করে প্রস্তুত করা আছে। সেই , গুহার মধ্যে একটিতে একটা বৃহৎ নালী আছে! প্রবাদ এই যে বনবাসকালে লক্ষণ উপবাসী থাকৃতেন বলে জানকী দেবী মেহের দেবরকে তার বেঙ্গরা থেকে ঐ নাগা দিয়ে খ্রফলের সরবৎ ঢেলে দিতেন, লক্ষণ র্তার ঘরে বসে সেই অমৃততুল্য পানীয় পান করে বনবাসের অনশনক্লেশ অপনোদন করতেন। সীতাবেঙ্গর গুহার মধ্যে ধনুকতুণীরধারী রামলক্ষণের একটি ভগ্ন বিগ্রহ রাখা আছে । বাইরের দক্ষিণ দিকের দেয়ালের উপর একপাশে একটি পাদযুগলের ছাপ আর তার মাঝে খোদাই করা রেখার দ্বারা যাক একটি মল্পের মুৰ্ত্তি , পাথরের তক্ষিত পদচিহ্নের উপর বৃষ্টি পড়েই হোক বা আপনা থেকেই হোক কাচামাটিতে পা চেপে দিয়ে আস্তে আস্তে উঠিয়ে আনলে যেমন দাগটা দেখায় এটিও ঠিক সেই রকম । স্থানীয় লোকেরা সেটিকে ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের পাদপদ্ম বলে অভিহিত করে থাকে । 驗 এই সকল রহস্যজনক ব্যাপার দেখে আমরা যোগমারী গুহায় গেলাম। এই গুহাটি একটি স্বাভাবিক গুহা । লম্বায় দশ ফুট চওড়ায় ৬ ফুট মাত্র। এরই ছাদের নীচে কতকগুলি লাল রেথ দ্বারা ভাগে ভাগে আঁকা ছবি আছে। ছবিগুলিতে নীচে দাড়িয়ে সহজেই হাত পাওয়া যায়। গুহাটিতে আলোর কোনই অসদ্ভাব নাই । সমস্তটাই থোলা। ছাদের এক পাশে একট। আলোকপথের মত বড় ছিদ্রপথও আছে। এত আলো থাকৃতেও ঐ ছিদ্রের প্রয়োজনীয়তা ষে কি হতে পারে তা বলা যায় না ! এই গুহার চিত্রগুলি প্রথম দর্শনেই আমাদের বাঙ্গলাদেশের প্রাচীন পাটার অতি নিকৃষ্ট উদাহরণের কথাই মনে হয়েছিল । আমরা নকল নেবার সময় পরে কতকগুলি ছবির নীচের রং, যা উপরের অষ্ঠ রংএ রামগড় やめ یہ • rی جمہ - - চাপ পড়ে গেছে, দুএক স্থানে উপরের বর্ণ উঠে যাওয়ায় । বেরিয়ে পড়েছে দেখেছি তাতে মনে হয় যে, পূৰ্ব্বে - উৎকৃষ্টতর উদাহরণেরও হয়ত গুহাটিতে অসদ্ভাব ছিল ন। পরবত্তা কোন লোক (অবঃ) অতি প্রাচীন কালেই ) পুনরায় রং" দিয়ে ঐ সকল চিত্র ঢেকে র্ভার নিজের চিত্রচাতুৰ্য্যের নমুনা রেখে গেছেন । চিত্রের দক্ষিণ দিকের প্রথম অংশে কতকগুলি লোক একটা হাতীকে তাড়া কবৃছে আর তার নীচে সাদা, লাগ এবং কাল রঙের আলঙ্কারিক রীতিতে আঁকা কয়েকটি অদ্ভুতদৰ্শন মকরের ছবি । সেগুলি যে জলের মধ্যে বিচরণ করছে পাছে সে বিষয়ে কারো সন্দেহ জন্মায় সেই ভয়ে শিল্পী গোটা কতক গোল গোল কাল কাল রেখার তরঙ্গ তুলে. বুঝিয়ে দিয়েছে। ২য় অংশে একটি তরু তলে কতকগুলি লোক , উপবিষ্ট । কি কবৃছে বোঝা যায় না ! বৃক্ষটিকে একটি গুড়ির উপর কয়েকটি ডাল সুরে দুচারটে পাতা একে দেখান হয়েছে । পাতা আর গাছের রং লাল। ৩য় ংশে–একটি উদ্যান সাদাজমীর উপর কাল রেখা দিয়ে, অঙ্কিত। বাগানটি আশ্চর্যাভাবে কতকগুলি শুধু কুমুদ পুষ্পের মত ফুল এ কে দেখান হয়েছে। স্ত্রী ও পুরুষের যুগল মূৰ্ত্তি একটি ঐ প্রকার বিচিত্র ফুলের উপর হাত । ধরাধরি করে মৃত্য করছে! মনুষ্যমূৰ্ত্তি লাল রেখায় আঁক, হাত, মুখ, প, লাল রঙে একেবারে ভরাম । চোখ নাকের খোজ তাতে বড় একটা পাওয়া যায় না । ফুল গুলিতে কোন রংই নেই, চিত্রের সাদা জমীটাই,তার বর্ণ। ৪ খ খণ্ডের চিত্র গুলি ভারি বিচিত্র । কতক গুলি হাত নলী নলী পা সরু, পেট ডাগরা গাল পুরু মাটির ছেলেভুলানো খেলনার মূৰ্ত্তির মত লাল রংএর মনুষ্যমুৰ্ত্তি । আবার তার চোখের ভিতরগুলি সাদা এবং বাইরে ধীরে চারিপাশে কাল রেথাদ্ধারা সিয়া কলম * করে ফোটান । মূৰ্ত্তিগুলির কৌতুকাবহ চোখের ভাবের বা গঠনের ভঙ্গী দেখলে সত্যই হাসি ধরে রাখা যায় না ! মূৰ্ত্তির অবয়বের . * ভারতবর্ষীয় চিত্রশিল্পের রীতিতে পূৰ্ব্বে ছবি আঁকার শেষে বিশেষ কাজ হচ্চে ষথাযথাস্থানে কালে রেখা দিয়ে ছবিকে ফুটিয়ে তোলা। মোগল শিল্পীর পূৰ্ব্বে এই কাজটিকে সিয়া কলম বলতেম। আধুনিক কালীঘাটের পোটোদের মুখেও এই কাজকে ঐ নামেই বলতে শুনেঢ়ি ।